ঢাকা ১১:২৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হংকংয়ে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু বেড়ে ৯৪, নিখোঁজ অনেকেই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • Update Time : ১০:৪৯:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১৮ Time View

ভবনের ধ্বংসাবশেষে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা

হংকংয়ে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় অঙ্গিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া আবাসিক ভবনগুলোর ধ্বংসাবশেষে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নিহত বেড়ে ৯৪ জনে দাঁড়ায়। এখনো অনেক মানুষ নিখোঁজ। এসব তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

কর্তৃপক্ষ বলছে, আটটি ভবনের বড় এই আবাসিক এলাকায় প্রায় দুই হাজার ফ্ল্যাটের মধ্যে শুধু চারটিতেই আগুন ছড়িয়েছিল। আগুন লাগার ৩৬ ঘণ্টা পরে তা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।

ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক ডেরেক আর্মস্ট্রং চ্যান বলেন, এখনো সাহায্যের জন্য করা ২৫টি কলের ওপর ভিত্তি করে তারা অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজ চালাবেন। সকাল ৯টার মধ্যে তারা সব ফ্ল্যাটে ঢুকে খোঁজ করবেন।

এদিকে ৫০ জনের বেশি বাসিন্দা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে ১২ জনের অবস্থা সংকটজনক আর ২৮ জন গুরুতর। এখনো অনেকেই নিখোঁজ, তবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সেই সংখ্যার হালনাগাদ হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা সুইন বলেন, ‘আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছিল। আমি দেখেছি একটাই পানির পাইপ দিয়ে কয়েকটি ভবন বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল, আর সেটা খুব ধীর মনে হচ্ছিল।’

শুক্রবার ঘটনাস্থলে গিয়ে এএফপির এক সংবাদদাতা দেখেন, ওয়াং ফুক কোর্টে আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে মাঝে মাঝে ভবনের ভেতর থেকে আবারও স্ফুলিঙ্গ ও ঘন ধোঁয়া বের হচ্ছে।

কর্তৃপক্ষ এরইমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। প্রায় ৮০ বছরের মধ্যে এই আর্থিক কেন্দ্রের সবচেয়ে বড় অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত কীভাবে হলো, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে ভবনের চারদিকে বাঁশের মাচা ছিল এবং সেগুলো প্লাস্টিকের জালে মোড়ানো ছিল, যেগুলো নির্মাণকাজেরই অংশ। এসব বিষয় তদন্তে গুরুত্ব পাচ্ছে।

হংকংয়ের দুর্নীতি দমন সংস্থা বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা এই সংস্কার কাজ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। এর আগে পুলিশ তিনজনকে আটক করে, অভিযোগ—তারা অবহেলা করে ফোমের প্যাকেজিং ফেলে রেখেছিল।

হংকংয়ের উত্তরাঞ্চলের তাই পো জেলায় অবস্থিত ওয়াং ফুক কোর্টের বাসিন্দারা এএফপিকে জানান, তারা কোনো ফায়ার অ্যালার্মের শব্দ শোনেননি। তাই দরজায় ঘণ্টা বাজিয়ে, নক করে প্রতিবেশীদের নিজেরাই সতর্ক করেন।

নিহতদের মধ্যে একজন ৩৭ বছর বয়সী দমকলকর্মী এবং দুজন ইন্দোনেশীয় গৃহশ্রমিক ছিলেন।

কিন্তু মৃত্যুসংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বৃহস্পতিবার ভোরে শহরপ্রধান জন লি বলেন, ২৭৯ জনের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

পরে দমকল কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা নিখোঁজদের মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছে। তবে সেই সংখ্যাটি এরপর আর হালনাগাদ করা হয়নি।

বৃহস্পতিবার নিকটবর্তী একটি কমিউনিটি সেন্টারে পুলিশ স্বজনদের ছবি দেখিয়ে মরদেহ শনাক্ত করছিল।

এটি ১৯৪৮ সালের পর হংকংয়ের সবচেয়ে প্রাণঘাতী অগ্নিকাণ্ড। সে বছর এক বিস্ফোরণের পর আগুনে কমপক্ষে ১৩৫ জন মারা যান।

Please Share This Post in Your Social Media

হংকংয়ে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু বেড়ে ৯৪, নিখোঁজ অনেকেই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Update Time : ১০:৪৯:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫

হংকংয়ে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় অঙ্গিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া আবাসিক ভবনগুলোর ধ্বংসাবশেষে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নিহত বেড়ে ৯৪ জনে দাঁড়ায়। এখনো অনেক মানুষ নিখোঁজ। এসব তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

কর্তৃপক্ষ বলছে, আটটি ভবনের বড় এই আবাসিক এলাকায় প্রায় দুই হাজার ফ্ল্যাটের মধ্যে শুধু চারটিতেই আগুন ছড়িয়েছিল। আগুন লাগার ৩৬ ঘণ্টা পরে তা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।

ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক ডেরেক আর্মস্ট্রং চ্যান বলেন, এখনো সাহায্যের জন্য করা ২৫টি কলের ওপর ভিত্তি করে তারা অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজ চালাবেন। সকাল ৯টার মধ্যে তারা সব ফ্ল্যাটে ঢুকে খোঁজ করবেন।

এদিকে ৫০ জনের বেশি বাসিন্দা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে ১২ জনের অবস্থা সংকটজনক আর ২৮ জন গুরুতর। এখনো অনেকেই নিখোঁজ, তবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সেই সংখ্যার হালনাগাদ হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা সুইন বলেন, ‘আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছিল। আমি দেখেছি একটাই পানির পাইপ দিয়ে কয়েকটি ভবন বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল, আর সেটা খুব ধীর মনে হচ্ছিল।’

শুক্রবার ঘটনাস্থলে গিয়ে এএফপির এক সংবাদদাতা দেখেন, ওয়াং ফুক কোর্টে আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে মাঝে মাঝে ভবনের ভেতর থেকে আবারও স্ফুলিঙ্গ ও ঘন ধোঁয়া বের হচ্ছে।

কর্তৃপক্ষ এরইমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। প্রায় ৮০ বছরের মধ্যে এই আর্থিক কেন্দ্রের সবচেয়ে বড় অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত কীভাবে হলো, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে ভবনের চারদিকে বাঁশের মাচা ছিল এবং সেগুলো প্লাস্টিকের জালে মোড়ানো ছিল, যেগুলো নির্মাণকাজেরই অংশ। এসব বিষয় তদন্তে গুরুত্ব পাচ্ছে।

হংকংয়ের দুর্নীতি দমন সংস্থা বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা এই সংস্কার কাজ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। এর আগে পুলিশ তিনজনকে আটক করে, অভিযোগ—তারা অবহেলা করে ফোমের প্যাকেজিং ফেলে রেখেছিল।

হংকংয়ের উত্তরাঞ্চলের তাই পো জেলায় অবস্থিত ওয়াং ফুক কোর্টের বাসিন্দারা এএফপিকে জানান, তারা কোনো ফায়ার অ্যালার্মের শব্দ শোনেননি। তাই দরজায় ঘণ্টা বাজিয়ে, নক করে প্রতিবেশীদের নিজেরাই সতর্ক করেন।

নিহতদের মধ্যে একজন ৩৭ বছর বয়সী দমকলকর্মী এবং দুজন ইন্দোনেশীয় গৃহশ্রমিক ছিলেন।

কিন্তু মৃত্যুসংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বৃহস্পতিবার ভোরে শহরপ্রধান জন লি বলেন, ২৭৯ জনের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

পরে দমকল কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা নিখোঁজদের মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছে। তবে সেই সংখ্যাটি এরপর আর হালনাগাদ করা হয়নি।

বৃহস্পতিবার নিকটবর্তী একটি কমিউনিটি সেন্টারে পুলিশ স্বজনদের ছবি দেখিয়ে মরদেহ শনাক্ত করছিল।

এটি ১৯৪৮ সালের পর হংকংয়ের সবচেয়ে প্রাণঘাতী অগ্নিকাণ্ড। সে বছর এক বিস্ফোরণের পর আগুনে কমপক্ষে ১৩৫ জন মারা যান।