ঢাকা ০৪:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর বিক্রি, দুইজনের যাবজ্জীবন

Reporter Name
  • Update Time : ১০:২৭:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ মে ২০২৩
  • / ১২০ Time View

রংপুর প্রতিনিধিঃ রংপুরের বদরগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্ষণ ও পতিতালয়ে বিক্রির দায়ে দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় একজনকে ৮ বছরের আটকাদেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (৮ মে) দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. রোকনুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কিশোরগঞ্জের ভৈরবপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের মানিক মিয়ার স্ত্রী ইয়াছমিন, রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লালচাঁদপুর গ্রামের জব্বার শেখের ছেলে আব্দুল ওহিদ ও বদরগঞ্জ উপজেলার চান্দেরডাঙ্গা গ্রামের এন্তাজুল হকের মেয়ে তারামনি।

এ ঘটনায় সম্পৃক্ততা না থাকায় অপর আসামি মানিক মিয়াকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় ইয়াছমিন, তারামনি ও মানিক মিয়া আদালতে উপস্থিত থাকলেও আসামি আব্দুল ওহিদ পলাতক রয়েছে।

আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর সকালে স্কুলে যাওয়ার কথা বলে সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া ভুক্তভোগী ছাত্রী বাড়ি থেকে বের হয়। পরে স্কুল ছুটির পর বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এরমধ্যে স্থানীয় ভ্যানচালক আল-আমিনের মাধ্যমে জানতে পারেন প্রতিবেশী এন্তাজুলের মেয়ে তারামনির সঙ্গে তার মেয়ে বদরগঞ্জ উপজেলার আউলিয়াগঞ্জ গেছে।

ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন বলেন, ওই ছাত্রীর বান্ধবী তারামনি তাকে আব্দুল ওহিদের কাছে তুলে দেয়। ওহিদ ওই ছাত্রীকে ঢাকায় নিয়ে একটি আবাসিক হোটেলে ধর্ষণ করেন। পরে তিনি ইয়াছমিনের কাছে বিক্রি করে দেন। ইয়াছমিন ওই ছাত্রীকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকার একটি পতিতালয়ে থাকতে বাধ্য করেন। এর কিছুদিন পর ইয়াছমিন ওই ছাত্রীকে অন্য জায়গায় বিক্রির চেষ্টা করলে ওই ছাত্রী কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে বাসযাত্রী এক নারীকে ওই ছাত্রী পুরো ঘটনাটি খুলে বলে। ওই নারী বিষয়টি থানায় জানালে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়।

জাহাঙ্গীর হোসেন আরও বলেন, দীর্ঘ আট বছর ধরে ওই মামলায় ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ সোমবার বিচারক আসামি ইয়াছমিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেন। এছাড়া ধর্ষণের ঘটনায় আব্দুল ওহিদকে দুটি ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন। আর তারামনি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাকে ৮ বছরের আটকাদেশ দিয়ে সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ওই শিশু প্রাপ্তবয়স্ক হলে তাকে কারাগারে পাঠানো হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর বিক্রি, দুইজনের যাবজ্জীবন

Update Time : ১০:২৭:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ মে ২০২৩

রংপুর প্রতিনিধিঃ রংপুরের বদরগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্ষণ ও পতিতালয়ে বিক্রির দায়ে দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় একজনকে ৮ বছরের আটকাদেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (৮ মে) দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. রোকনুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কিশোরগঞ্জের ভৈরবপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের মানিক মিয়ার স্ত্রী ইয়াছমিন, রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লালচাঁদপুর গ্রামের জব্বার শেখের ছেলে আব্দুল ওহিদ ও বদরগঞ্জ উপজেলার চান্দেরডাঙ্গা গ্রামের এন্তাজুল হকের মেয়ে তারামনি।

এ ঘটনায় সম্পৃক্ততা না থাকায় অপর আসামি মানিক মিয়াকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় ইয়াছমিন, তারামনি ও মানিক মিয়া আদালতে উপস্থিত থাকলেও আসামি আব্দুল ওহিদ পলাতক রয়েছে।

আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর সকালে স্কুলে যাওয়ার কথা বলে সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া ভুক্তভোগী ছাত্রী বাড়ি থেকে বের হয়। পরে স্কুল ছুটির পর বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এরমধ্যে স্থানীয় ভ্যানচালক আল-আমিনের মাধ্যমে জানতে পারেন প্রতিবেশী এন্তাজুলের মেয়ে তারামনির সঙ্গে তার মেয়ে বদরগঞ্জ উপজেলার আউলিয়াগঞ্জ গেছে।

ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন বলেন, ওই ছাত্রীর বান্ধবী তারামনি তাকে আব্দুল ওহিদের কাছে তুলে দেয়। ওহিদ ওই ছাত্রীকে ঢাকায় নিয়ে একটি আবাসিক হোটেলে ধর্ষণ করেন। পরে তিনি ইয়াছমিনের কাছে বিক্রি করে দেন। ইয়াছমিন ওই ছাত্রীকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকার একটি পতিতালয়ে থাকতে বাধ্য করেন। এর কিছুদিন পর ইয়াছমিন ওই ছাত্রীকে অন্য জায়গায় বিক্রির চেষ্টা করলে ওই ছাত্রী কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে বাসযাত্রী এক নারীকে ওই ছাত্রী পুরো ঘটনাটি খুলে বলে। ওই নারী বিষয়টি থানায় জানালে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়।

জাহাঙ্গীর হোসেন আরও বলেন, দীর্ঘ আট বছর ধরে ওই মামলায় ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ সোমবার বিচারক আসামি ইয়াছমিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেন। এছাড়া ধর্ষণের ঘটনায় আব্দুল ওহিদকে দুটি ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন। আর তারামনি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাকে ৮ বছরের আটকাদেশ দিয়ে সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ওই শিশু প্রাপ্তবয়স্ক হলে তাকে কারাগারে পাঠানো হবে।