ঢাকা ০৮:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্কুলছাত্রকে লাঠি দিয়ে গরুপেটা করলেন সভাপতি

নওগাঁ প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৭:৫২:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ জুন ২০২৩
  • / ২০৯ Time View

নওগাঁ : মহাদেবপুর হাসপাতালে ভর্তি স্কুল সভাপতির লাঠিপিটার শিকার দশম শ্রেণির ছাত্র মারুফ হাসান

নওগাঁর মহাদেবপুরে মারুফ হাসান (১৫) নামে এক স্কুলছাত্রকে ইভটিজিংয়ের অপবাদ দিয়ে লাঠি দিয়ে গরুপেটা করেছেন স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। প্রধান শিক্ষক বলছেন বিষয়টি তিনি জানেন না। ওই ছাত্র উপজেলার জয়পুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে এবং জয়পুর ডাঙ্গাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি মারুফ বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকেলে সাংবাদিকদের জানায়, বুধবার সকালে ওই স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবু হাসান মারুফকে তার বাড়ি থেকে স্কুলে ডেকে নেন। সেখানে তাকে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেদম পিটিয়ে মারাত্মক আহত করেন। তার দুই হাতে, পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কালো দাগ পড়ে যায়। তার চিৎকারে তার বাবা জানতে পেরে স্কুলে ছুটে গিয়ে এর প্রতিবাদ জানালে সভাপতি স্টিলের রড বের করে তার বাবাকেও পিটানোর হুমকি দেন। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ইভটিজিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে বলেও মারুফ জানায়।

ছেলের সুশ্রষা করার জন্য হাসপাতালে উপস্থিত মারুফের বাবা জাহাঙ্গীর আলম জানান, কোন মেয়েকে তার ছেলে ইভটিজিং করেছে তা জানতে চাইলেও সভাপতি তা বলতে পারেননি, কিংবা ওই মেয়েকে হাজির করাতে পারেননি। ঘটনার পর এলাকার লোকজন ও অভিভাবকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। কিন্তু সভাপতির লোকেরা তাদের হুমকি ধামকি দিতে থাকে। এমনকি তারা আহত মারুফকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আনতেও বাধা দেয়। রাতে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে পরদিন সকালে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।

জানতে চাইলে মোবাইলফোনে অভিযুক্ত আবু হাসান স্কুলছাত্রকে লাঠি দিয়ে পিটানোর কথা স্বীকার করে দম্ভের সাথে বলেন, অপরাধির বিচার তিনি নিজের হাতেই করেছেন। কোন মেয়েকে ইভটিজিং করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্কুলের সব মেয়েকেই সে ইভটিজিং করেছে। তার মধ্যে তার ভাতিজিও রয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে তিনি কেন নিজেই আইন হাতে তুলে নিলেন জানাতে চাইলে তিনি ঠিকই করেছেন বলেও জানান।

ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম জানান, ঘটনার দিন তিনি স্কুলে উপস্থিত ছিলেন না সেজন্য বিষয়টি জানেন না। তবে বিষয়টি মিমাংশার উদ্যোগ নিয়েও তা ব্যর্থ হয়েছে বলেও জানান।

মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফ্ফর হোসেন জানান, এব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঘটনাটি এলাকায় দারুন চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা অভিযুক্ত সভাপতির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।

 

Please Share This Post in Your Social Media

স্কুলছাত্রকে লাঠি দিয়ে গরুপেটা করলেন সভাপতি

Update Time : ০৭:৫২:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ জুন ২০২৩

নওগাঁর মহাদেবপুরে মারুফ হাসান (১৫) নামে এক স্কুলছাত্রকে ইভটিজিংয়ের অপবাদ দিয়ে লাঠি দিয়ে গরুপেটা করেছেন স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। প্রধান শিক্ষক বলছেন বিষয়টি তিনি জানেন না। ওই ছাত্র উপজেলার জয়পুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে এবং জয়পুর ডাঙ্গাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি মারুফ বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকেলে সাংবাদিকদের জানায়, বুধবার সকালে ওই স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবু হাসান মারুফকে তার বাড়ি থেকে স্কুলে ডেকে নেন। সেখানে তাকে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেদম পিটিয়ে মারাত্মক আহত করেন। তার দুই হাতে, পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কালো দাগ পড়ে যায়। তার চিৎকারে তার বাবা জানতে পেরে স্কুলে ছুটে গিয়ে এর প্রতিবাদ জানালে সভাপতি স্টিলের রড বের করে তার বাবাকেও পিটানোর হুমকি দেন। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ইভটিজিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে বলেও মারুফ জানায়।

ছেলের সুশ্রষা করার জন্য হাসপাতালে উপস্থিত মারুফের বাবা জাহাঙ্গীর আলম জানান, কোন মেয়েকে তার ছেলে ইভটিজিং করেছে তা জানতে চাইলেও সভাপতি তা বলতে পারেননি, কিংবা ওই মেয়েকে হাজির করাতে পারেননি। ঘটনার পর এলাকার লোকজন ও অভিভাবকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। কিন্তু সভাপতির লোকেরা তাদের হুমকি ধামকি দিতে থাকে। এমনকি তারা আহত মারুফকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আনতেও বাধা দেয়। রাতে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে পরদিন সকালে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।

জানতে চাইলে মোবাইলফোনে অভিযুক্ত আবু হাসান স্কুলছাত্রকে লাঠি দিয়ে পিটানোর কথা স্বীকার করে দম্ভের সাথে বলেন, অপরাধির বিচার তিনি নিজের হাতেই করেছেন। কোন মেয়েকে ইভটিজিং করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্কুলের সব মেয়েকেই সে ইভটিজিং করেছে। তার মধ্যে তার ভাতিজিও রয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে তিনি কেন নিজেই আইন হাতে তুলে নিলেন জানাতে চাইলে তিনি ঠিকই করেছেন বলেও জানান।

ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম জানান, ঘটনার দিন তিনি স্কুলে উপস্থিত ছিলেন না সেজন্য বিষয়টি জানেন না। তবে বিষয়টি মিমাংশার উদ্যোগ নিয়েও তা ব্যর্থ হয়েছে বলেও জানান।

মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফ্ফর হোসেন জানান, এব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঘটনাটি এলাকায় দারুন চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা অভিযুক্ত সভাপতির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।