ঢাকা ১০:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে শর্টকোড চালুর সিদ্ধান্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে বাস ট্র্যাকিং সিস্টেম ধর্ষণকারীর মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে গাজীপুরে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিল নোয়াখালীতে নামাজ পড়তে গেলে মসজিদের শৌচাগারে শিশুকে বলৎকার বান্দরবানে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় ৪ আসামীর যাবজ্জীবন, ১ লাখ টাকা জরিমানা ধর্ষণ বিরোধী স্লোগানে মুখরিত কুবি ক্যাম্পাস বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়কসহ ৭ জন কারাগারে মেয়েকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় বাবাকে কুপিয়ে জখম কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বহির্বিভাগের টিকিট বাণিজ্য ধর্ষণের বিরুদ্ধে কুবিতে মানববন্ধন 

সিলেটের শাবিপ্রবিতে ‘শয়তানের নিশ্বাস’ আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

সিলেট প্রতিনিধি
  • Update Time : ১২:১৯:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৬৭ Time View

বর্তমানে পৃথিবীর অন্যতম ভয়ঙ্কর নেশা ‘ডেভিলস ব্রেথ’ বা ‘শয়তানের নিশ্বাস’। অন্যের আদেশ পালনে বাধ্য করানোর জন্য জাদুটোনার মতোই কাজ করে এই হেলুসিনেটিক ড্রাগটি। রাসায়নিকভাবে এটি স্কোপোলামিন নামে পরিচিত। এটি হায়োসিন, ডেভিলস ব্রেথ, শয়তানের নিঃশ্বাস, বুরুন্ডাঙ্গা, রোবট ড্রাগ, জম্বি ড্রাগ বা কলম্বিয়ান ডেভিলের নিঃশ্বাস নামেও পরিচিত। এই ড্রাগকে অভিনব কৌশলে ব্যবহার করে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে একটি ভয়ঙ্কর অপরাধী চক্র।

সিলেটের সিএনজি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ‘শয়তানের নিশ্বাসের’ অতঙ্কে ভুগছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীসহ যাত্রী সাধারনরা।

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, প্রায় দিনই কোনো না কোনো শিক্ষার্থী এই ‘শয়তানের নিশ্বাসের’-এর মাধ্যমে সিএনজিতে বা শহরের রাস্তাঘাটে এই সিন্ডিকেটের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছেন। অবাক করা বিষয় এই সিন্ডিকেটের ফাঁদ থেকে কোনো শিক্ষার্থী বের হয়ে এলেও কেমিক্যালের প্রভাবে তাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া কিছুই মনে রাখতে পারে না। এমনকি কিছু কিছু শিক্ষার্থীর এই ঘোর থেকে বের হতে দুই থেকে তিন দিন সময় লেগে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ব্যতীত সিএনজির মাধ্যমে যাতায়াত যেনো দিন দিন শিক্ষার্থীদের জন্য এক মরণফাঁদে পরিণত হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত বাস নেই বলেও দীর্ঘদিন যাবৎ অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। কিছু শিক্ষার্থী মনে করছেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছু দুষ্কৃতকারী মানুষকে অতিষ্ঠ করার জন্য এই ঘটনা ঘটাচ্ছে। এর মাধ্যমে সরকারের প্রতি জনগণ যেন আস্থা হারিয়ে ফেলে, সে কারণেই এই চক্রটি কাজ করছে। তাদের ধারণামতে, কোনো একটা চক্র এই ড্রাগ বিনামূল্যে বিতরণ করছে। তা না হলে সিএনজিচালক, বাইকচালক, রিকশাচালক এতো মানুষের কাছে এই ভয়ঙ্কর ড্রাগ আসা সম্ভব না।

শিক্ষার্থীদের এই শয়তানের নিশ্বাস সম্পর্কে সচেতন করতে এবং এর থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে জানাতে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা রাহাত জামানের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে শিক্ষার্থীদের সতর্কতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. মোখলেসুর রহমান জানান, ‘আমরা ইতোমধ্যে এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার্থীদের হয়রানির বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছি এবং এ ব্যাপারে আমরা খুব শিগগিরই শহরের সিএনজি সমিতির সঙ্গে আলোচনায় বসব। তারা যদি তাদের সিএনজি চালকদের এসব অনৈতিক কাজ থেকে প্রতিহত করতে না পারে তা হলে পরবর্তীতে পুলিশের সহায়তা নিব।’

বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) জালালাবাদ থানার অধীন। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে জানতে চাইলে জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ বলেন, ‘যে নামেই ডাকুন না কেন, এরা অপরাধী চক্র। আমরা ইতোমধ্যে এইসব অপরাধী চক্রের সঙ্গে জড়িতদের ধরার জন্য কাজ করছি এবং সফলভাবে কয়েকজনকে ধরতেও সক্ষম হয়েছি।

এরপরও যদি কোনো শিক্ষার্থী এসব চক্র বা সিন্ডিকেটে ভিকটিম হন, তা হলে আমাদের জানানোর অনুরোধ রইল। আমরা এই অপরাধের মূলোৎপাটনে সর্বাত্মক চেষ্টা করব।

Please Share This Post in Your Social Media

সিলেটের শাবিপ্রবিতে ‘শয়তানের নিশ্বাস’ আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

সিলেট প্রতিনিধি
Update Time : ১২:১৯:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বর্তমানে পৃথিবীর অন্যতম ভয়ঙ্কর নেশা ‘ডেভিলস ব্রেথ’ বা ‘শয়তানের নিশ্বাস’। অন্যের আদেশ পালনে বাধ্য করানোর জন্য জাদুটোনার মতোই কাজ করে এই হেলুসিনেটিক ড্রাগটি। রাসায়নিকভাবে এটি স্কোপোলামিন নামে পরিচিত। এটি হায়োসিন, ডেভিলস ব্রেথ, শয়তানের নিঃশ্বাস, বুরুন্ডাঙ্গা, রোবট ড্রাগ, জম্বি ড্রাগ বা কলম্বিয়ান ডেভিলের নিঃশ্বাস নামেও পরিচিত। এই ড্রাগকে অভিনব কৌশলে ব্যবহার করে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে একটি ভয়ঙ্কর অপরাধী চক্র।

সিলেটের সিএনজি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ‘শয়তানের নিশ্বাসের’ অতঙ্কে ভুগছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীসহ যাত্রী সাধারনরা।

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, প্রায় দিনই কোনো না কোনো শিক্ষার্থী এই ‘শয়তানের নিশ্বাসের’-এর মাধ্যমে সিএনজিতে বা শহরের রাস্তাঘাটে এই সিন্ডিকেটের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছেন। অবাক করা বিষয় এই সিন্ডিকেটের ফাঁদ থেকে কোনো শিক্ষার্থী বের হয়ে এলেও কেমিক্যালের প্রভাবে তাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া কিছুই মনে রাখতে পারে না। এমনকি কিছু কিছু শিক্ষার্থীর এই ঘোর থেকে বের হতে দুই থেকে তিন দিন সময় লেগে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ব্যতীত সিএনজির মাধ্যমে যাতায়াত যেনো দিন দিন শিক্ষার্থীদের জন্য এক মরণফাঁদে পরিণত হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত বাস নেই বলেও দীর্ঘদিন যাবৎ অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। কিছু শিক্ষার্থী মনে করছেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছু দুষ্কৃতকারী মানুষকে অতিষ্ঠ করার জন্য এই ঘটনা ঘটাচ্ছে। এর মাধ্যমে সরকারের প্রতি জনগণ যেন আস্থা হারিয়ে ফেলে, সে কারণেই এই চক্রটি কাজ করছে। তাদের ধারণামতে, কোনো একটা চক্র এই ড্রাগ বিনামূল্যে বিতরণ করছে। তা না হলে সিএনজিচালক, বাইকচালক, রিকশাচালক এতো মানুষের কাছে এই ভয়ঙ্কর ড্রাগ আসা সম্ভব না।

শিক্ষার্থীদের এই শয়তানের নিশ্বাস সম্পর্কে সচেতন করতে এবং এর থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে জানাতে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা রাহাত জামানের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে শিক্ষার্থীদের সতর্কতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. মোখলেসুর রহমান জানান, ‘আমরা ইতোমধ্যে এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার্থীদের হয়রানির বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছি এবং এ ব্যাপারে আমরা খুব শিগগিরই শহরের সিএনজি সমিতির সঙ্গে আলোচনায় বসব। তারা যদি তাদের সিএনজি চালকদের এসব অনৈতিক কাজ থেকে প্রতিহত করতে না পারে তা হলে পরবর্তীতে পুলিশের সহায়তা নিব।’

বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) জালালাবাদ থানার অধীন। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে জানতে চাইলে জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ বলেন, ‘যে নামেই ডাকুন না কেন, এরা অপরাধী চক্র। আমরা ইতোমধ্যে এইসব অপরাধী চক্রের সঙ্গে জড়িতদের ধরার জন্য কাজ করছি এবং সফলভাবে কয়েকজনকে ধরতেও সক্ষম হয়েছি।

এরপরও যদি কোনো শিক্ষার্থী এসব চক্র বা সিন্ডিকেটে ভিকটিম হন, তা হলে আমাদের জানানোর অনুরোধ রইল। আমরা এই অপরাধের মূলোৎপাটনে সর্বাত্মক চেষ্টা করব।