ঢাকা ০৩:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
লালমনিরহাট

সার না পেয়ে কৃষকদের সড়ক অবরোধ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৬:০৬:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ২৬ Time View

লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন কৃষকরা।

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় সার সংকট নিরসনের দাবিতে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন একদল কৃষক। রোববার সকাল ১০টা থেকে উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের বিসিআইসির পরিবেশক ‘মেসার্স ওয়াছেক খান সার বিক্রয়কেন্দ্রের’ সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

খবর পেয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম মিঞা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন। পর্যাপ্ত সার সরবরাহের আশ্বাস পেলে তিন ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেন কৃষকরা।

কৃষকদের অভিযোগ, ভুট্টা মৌসুম শুরুর পর থেকেই এলাকায় ইউরিয়া সারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। কয়েক দিন ধরে বিক্রয়কেন্দ্রে গেলেও সার পাচ্ছিলেন না তারা। অথচ রোববার সকালে সার দেওয়া হরে, এমন ঘোষণা শুনে ভোর থেকেই লাইনে দাঁড়ান কৃষকরা। কিন্তু কয়েকজনকে সামান্য সার দেওয়ার পর হঠাৎ বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়।

অভিযোগ ওঠে, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল, তানজিলা আক্তার ও গোবিন্দ কুমারের সহযোগিতায় পরিবেশক খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বেশি দামে সার বিক্রি করছেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কৃষকরা টায়ার জ্বালিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন এবং পরিবেশকসহ সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তাদের অপসারণ দাবি করেন।

চর সিন্দুর্না এলাকার কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, “১৪ দোন (এক দোন সমান ২৭ শতাংশ) জমির ভুট্টার জন্য ইউরিয়া দরকার। কয়েক দিন ধরে ঘুরছি, কিন্তু সার পাই না। অথচ কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ডিলাররা বাইরে বেশি দামে বিক্রি করছেন।”

আন্দোলনকারী আরেক কৃষক মনিরুজ্জামান বলেন, “ডিলারের কাছে বারবার গেলেও সার পাই না। খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এই দুর্নীতি আর সহ্য করা যায় না।”

সার সংকটে চাষাবাদ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার কথাও বলেন কৃষকরা।

ইউএনও শামীম মিঞা বলেন, “একসঙ্গে অনেক কৃষক সার কিনতে আসায় চাপ বেড়ে গেছে। মজুত কম থাকায় সাময়িক সমস্যা হচ্ছে। কৃষকরা প্রয়োজন অনুযায়ী সার কিনলে সংকট তৈরি হত না। চাহিদা কমলে পরিস্থিতিও স্বাভাবিক হয়ে আসবে।”

বিসিআইসির পরিবেশক ওয়াছেক খানের দাবি, “কৃষি কর্মকর্তাদের উপস্থিতি ছাড়া সার বিক্রি করা হয় না। আমার ছেলেরা দোকান দেখাশোনা করে। অভিযোগ সম্পর্কে আমি তেমন কিছু জানি না।”

Please Share This Post in Your Social Media

লালমনিরহাট

সার না পেয়ে কৃষকদের সড়ক অবরোধ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
Update Time : ০৬:০৬:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় সার সংকট নিরসনের দাবিতে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন একদল কৃষক। রোববার সকাল ১০টা থেকে উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের বিসিআইসির পরিবেশক ‘মেসার্স ওয়াছেক খান সার বিক্রয়কেন্দ্রের’ সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

খবর পেয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম মিঞা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন। পর্যাপ্ত সার সরবরাহের আশ্বাস পেলে তিন ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেন কৃষকরা।

কৃষকদের অভিযোগ, ভুট্টা মৌসুম শুরুর পর থেকেই এলাকায় ইউরিয়া সারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। কয়েক দিন ধরে বিক্রয়কেন্দ্রে গেলেও সার পাচ্ছিলেন না তারা। অথচ রোববার সকালে সার দেওয়া হরে, এমন ঘোষণা শুনে ভোর থেকেই লাইনে দাঁড়ান কৃষকরা। কিন্তু কয়েকজনকে সামান্য সার দেওয়ার পর হঠাৎ বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়।

অভিযোগ ওঠে, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল, তানজিলা আক্তার ও গোবিন্দ কুমারের সহযোগিতায় পরিবেশক খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বেশি দামে সার বিক্রি করছেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কৃষকরা টায়ার জ্বালিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন এবং পরিবেশকসহ সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তাদের অপসারণ দাবি করেন।

চর সিন্দুর্না এলাকার কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, “১৪ দোন (এক দোন সমান ২৭ শতাংশ) জমির ভুট্টার জন্য ইউরিয়া দরকার। কয়েক দিন ধরে ঘুরছি, কিন্তু সার পাই না। অথচ কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ডিলাররা বাইরে বেশি দামে বিক্রি করছেন।”

আন্দোলনকারী আরেক কৃষক মনিরুজ্জামান বলেন, “ডিলারের কাছে বারবার গেলেও সার পাই না। খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এই দুর্নীতি আর সহ্য করা যায় না।”

সার সংকটে চাষাবাদ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার কথাও বলেন কৃষকরা।

ইউএনও শামীম মিঞা বলেন, “একসঙ্গে অনেক কৃষক সার কিনতে আসায় চাপ বেড়ে গেছে। মজুত কম থাকায় সাময়িক সমস্যা হচ্ছে। কৃষকরা প্রয়োজন অনুযায়ী সার কিনলে সংকট তৈরি হত না। চাহিদা কমলে পরিস্থিতিও স্বাভাবিক হয়ে আসবে।”

বিসিআইসির পরিবেশক ওয়াছেক খানের দাবি, “কৃষি কর্মকর্তাদের উপস্থিতি ছাড়া সার বিক্রি করা হয় না। আমার ছেলেরা দোকান দেখাশোনা করে। অভিযোগ সম্পর্কে আমি তেমন কিছু জানি না।”