সারের নতুন নীতিমালা: ডিলারদের মাঝে উদ্বেগ, নৈরাজ্যের আশঙ্কা

- Update Time : ০৫:১৮:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
- / ২৩৮ Time View
আগামী ১ জানুয়ারি সার ডিলার নিয়োগ ও সার বিতরণ সংক্রান্ত সমন্বিত নীতিমালা কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবায়নে মাঠপর্যায়ে সার সরবরাহ ব্যাহত হয়ে কৃষি উৎপাদন বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সার ডিলাররা।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে কিশোরগঞ্জে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশন (বি.এফ.এ) জেলা শাখার উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে কৃষি উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান শেষে এই কথা বলেন সংগঠনের নেতারা। জেলা প্রশাসকের অনুপস্থিতিতে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত।
সংগঠনের নেতারা বলেন, ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বিসিআইসি অনুমোদিত ডিলাররা দীর্ঘদিন ধরে দক্ষতার সঙ্গে সার বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। ১৯৯৫ সালে ২ লক্ষ টাকা নিরাপত্তা জামানত প্রদান করে এ ব্যবসায় যুক্ত হওয়া ডিলাররা এখন পর্যন্ত দেশের কৃষিখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন। বর্তমানে প্রতিমাসে গড়ে ৩০ থেকে ৬০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করে তারা সার সরবরাহ করে থাকেন।
ডিলারদের অভিযোগ, নতুন নীতিমালা অনুযায়ী ইউনিয়ন ভিত্তিক ডিলার নিয়োগ বাস্তবসম্মত নয়। এতে একজন ডিলারকে তিনটি বিক্রয়কেন্দ্র ও গুদাম স্থাপন করতে হবে। যা অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা ও অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে ব্যবসাকে অলাভজনক ও অনিরাপদ করে তুলবে। তাছাড়া যেসব ইউনিয়নে বছরে মাত্র ২০০ মেট্রিক টন সার বরাদ্দ থাকে তা তিনজন ডিলারের মধ্যে ভাগ হয়ে গেলে আর্থিকভাবে কেউই টিকে থাকতে পারবেন না। এছাড়াও বিদ্যমান ডিলারদের ডিলারশিপ বাতিল হলে দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও লেনদেন চেইন ভেঙে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে অনেক ডিলার দেউলিয়া হয়ে পড়বেন এবং সার সরবরাহ ব্যাহত হলে কৃষকেরা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
তারা বলেন, ২০০৮ সালের পর থেকে জ্বালানি তেলের দাম, ব্যাংক সুদ, গুদামভাড়া ও অন্যান্য খরচ বৃদ্ধি পেলেও পরিবহন খরচ ও কমিশন অপরিবর্তিত রয়েছে। ফলে ন্যায্য কমিশন ও পরিবহন খরচ সমন্বয় না করলে নীতিমালা বাস্তবায়ন কার্যকর হবে না।
২০০৯ সালের বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী কিশোরগঞ্জ জেলায় কখনো সার সংকট দেখা দেয়নি। বরং তারা সরকারি নির্ধারিত মূল্যে সময়মতো কৃষকের কাছে সার পৌঁছে দিয়েছেন। নতুন নীতিমালা প্রণয়নের আগে ডিলার, খুচরা বিক্রেতা ও কৃষকসহ সংশ্লিষ্ট সবার মতামত গ্রহণ করে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে চিন্তাভাবনা করা প্রয়োজন। অন্যথায় মাঠপর্যায়ে সার সংকট ও বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে এর দায় সরকারকেই বহন করতে হবে বলে সতর্ক করেছেন তারা।
স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠানে কিশোরগঞ্জ জেলা ইউনিটের সভাপতি তারিক আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব হাফেজ খালেকুজ্জামান, সহ সভাপতি আসাদুজ্জামান ফারুক, বাবু শীতল কুমার সাহা, ফিরোজ মিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, নির্বাহী সদস্য আবুল কালাম, কামরুজ্জামান বাচ্চু, খায়রুল বাশার, জাকারিয়াসহ জেলার সকল উপজেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।