সংগঠনের নির্দেশে দোকান বন্ধ রাখতে হচ্ছে, জানালেন দোকানিরা
সারা দেশে চলছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট

- Update Time : ০৫:৫১:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
- / ১০৭ Time View
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সহ-সভাপতি রিপনুল হাসানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকাসহ সারা দেশের সব জুয়েলারি দোকান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের এই ধর্মঘট চলবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে রিপনুল হাসানকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঘটনার পর থেকেই দেশের জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বাজুসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গুলজার আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক বাদল চন্দ্র রায় এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘সহ-সভাপতি রিপনুল হাসানকে সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটি সুপরিকল্পিত হয়রানির অংশ। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তাঁর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন স্বর্ণ ব্যবসাকেন্দ্রে ঘুরে দেখা গেছে, দোকানগুলোর ঝাঁপ বন্ধ। পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার, গুলিস্তান মার্কেট, নিউমার্কেট, উত্তরা, মিরপুর, গুলশানসহ বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ জুয়েলারি দোকান তালাবদ্ধ দেখা গেছে। দোকানগুলো বন্ধ থাকায় স্বর্ণালঙ্কার কিনতে আসা অনেক ক্রেতা ফিরে যাচ্ছেন।
তবে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মার্কেটের স্বর্ণের দোকানগুলো খোলা দেখা গেছে। দোকানিরা বলছেন, এমনিতেই স্বর্ণের দাম বাড়তি থাকায় ক্রেতা কম, বাজারে তেমন বেচাকেনা নেই। এই অবস্থায় ধর্মঘট পালন করা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।
এক ব্যবসায়ী জানান, ‘ক্রেতাই নেই, সারা দিন দোকানে বসে থাকতে হয়। এর মধ্যে আবার দোকান বন্ধ রাখলে পুরোপুরি ক্ষতি হয়ে যাবে।’
অপর এক বিক্রেতা বলেন, ‘আমরা ছোট ব্যবসায়ী, প্রতিদিন দোকান না খুললে সংসার চালানো মুশকিল। তাই দোকান খুলেছি।’
এদিকে, তাঁতীবাজারের একটি নামী জুয়েলারি দোকানের এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমাদের কোনো ব্যক্তিগত সমস্যা নেই, কিন্তু সংগঠনের নির্দেশে দোকান বন্ধ রাখতে হচ্ছে। যতদিন না সহ-সভাপতির মুক্তি হয়, আমরা দোকান খুলছি না।’
বাজারে স্বর্ণের ক্রয়-বিক্রয়ে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই কর্মসূচির ফলে শুধু ব্যবসায়িক ক্ষতিই নয়, অনেক গ্রাহক যারা বিয়ের মৌসুমে অলংকার কিনতে এসেছেন, তাঁরাও চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
বাজুসের কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন, সরকার যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আন্দোলন আরও বিস্তৃত হবে এবং নতুন কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে।
তারা আরও বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে নিজেদের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কিন্তু আমাদের সহ-সভাপতির মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত দেশের একটি জুয়েলারি দোকানও খোলা হবে না।’
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়