সিলেটে জনপ্রশাসন সচিব
সাদাপাথর লুটকারীরা বড় দলের কিংবা প্রশাসনের হলেও ছাড় পাবে না

- Update Time : ০৭:০৯:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫
- / ২২৫ Time View
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো: মোখলেস উর রহমান বলেছেন, সাদাপাথর শুধু লুট নয়, হয়েছে হরিলুট।
এ ঘটনায় যারাই জড়িত, সে যত বড় দলের কিংবা প্রশাসনেরই হোক না কেন— কেউই ছাড় পাবে না। কাউকেই আইনের বাইরে রাখা হবে না।
তিনি শুক্রবার সকালে ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এলাকা পরিদর্শনকালে এ কথা বলেন ।
তিনি আরও বলেন, সাদা পাথরসহ অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্রকে ঘিরে বিশেষ প্যাকেজ কর্মসূচি নেওয়া হবে। পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টা সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে সাদাপাথর এলাকা।
শুক্রবার সকালে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর পরিদর্শনে যায় মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি। যার নেতৃত্বে রয়েছেন জনপ্রশাসন সচিব।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব সাইফুল ইসলাম, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী, সিলেটের জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলমসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তারা সাদাপাথর ঘুরে দেখেন এবং সেখানকার স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে পাথর লুটের ঘটনায় গত ২০ আগস্ট মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ পাঁচ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটিকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে মাঠপর্যায়ে পরিদর্শনে আসেন তারা। কমিটি গঠন নিয়ে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ থেকে বলা হয়- সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর পর্যটন স্পট ও রেলওয়ে বাংকার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের ফলে পরিবেশ ও পর্যটন স্থানের নান্দনিকতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে অবৈধ পাথর উত্তোলনের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি তদন্তের উদ্যোগ নেয় সরকার।
অফিস আদেশে আরও বলা হয়, প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় মতামতসহ প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো: মোখলেস উর রহমান গতকাল বিকেলে সিলেট পিটিআই অডিটরিয়ামে সিলেট বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকতাদের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।
এদিকে,সিলেটের সাদাপাথর থেকে পাথর সরিয়ে বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে রাখা পাথর গুলো ফিরিয়ে দিতে ৩ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। শনিবার বেলা ১২টায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সর্বসাধারণের সাথে উপজেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
সভায় আরো বলা হয়, ৩ দিন পরে যদি কারো কাছে সাদাপাথর পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন- সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পদ্মসন সিংহ।কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিন মিয়ার সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- কোম্পানীগঞ্জ গোয়াইনঘাট সার্কেল এএসেপি আব্দুল্লাহ আল নোমান, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল মতিন, কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) সুজন চন্দ্র প্রমুখ।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শিবলী আতিকা তিন্নির সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, ‘কোম্পানীগঞ্জ যেহেতু পাথর অধ্যুষিত এলাকা তাই পর্যটন ও সংরক্ষিত এলাকা নির্ধারণ করে সনাতন পদ্ধতিতে পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের জন্য লিজ দিতে হবে। তা না হলে অবৈধ পন্থায় পাথর উত্তোলন বন্ধ করা কঠিন হবে। ব্যবসায়ীরা দাবি করেন বৈধ পন্থায় যারা পাথর আমদানি বা ক্রাশিং করছেন তাদের হয়রানি বন্ধ ও ক্রাশিং মিলের বৈদ্যুতিক সংযোগ ফিরিয়ে দিতে হবে।’
প্রধান অতিথি পদ্মসন সিংহ বলেন, সাদাপাথরের সৌন্দর্য্য আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনতে আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাই। জেলা প্রশাসকের নির্দেশ আগামী ৩ দিনের মধ্যে প্রতি ওয়ার্ডের লোকজন যাতে সাদাপাথর ফিরে দেয়। যদি কেউ পাথর ফিরে না দেয় তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষটি শনিবার বিকাল থেকে মাইকিং এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়