ঢাকা ০২:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫, ১৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাংবাদিক তুরাব হত্যা মামলায় পুলিশ কনস্টেবল উজ্জ্বল সিনহা ৫ দিনের রিমান্ডে

মো.মুহিবুর রহমান, সিলেট
  • Update Time : ১০:৪২:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪
  • / ১৮২ Time View

সিলেটে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে গুলিতে নিহত সাংবাদিক এটিএম তুরাব হত্যা মামলায় এক পুলিশ সদস্যের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার দুপুরে সিলেট অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আব্দুল মোমেন কনস্টেবল উজ্জল সিনহার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে রোববার (১৭ নভেম্বর) রাতে ঢাকা থেকে উজ্জ্বলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আলোচিত এই মামলায় এই প্রথম কোন আসামি গ্রেপ্তার হলো।

এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, পিবিআই’র পরিদর্শক মোহাম্মদ মোরসালিন জানান, কনস্টেবল উজ্জল সিনহাকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৫ দিনের রিমান্ডে মঞ্জুর করে।সিলেটে পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিম পিপিএম (সেবা) জানান, গ্রেফতার পুলিশ কনস্টেবল ডিএমপিতে কর্মরত ছিলেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ১৯ জুলাই সিলেট নগরের বন্দরবাজারে গুলিতে আহত হন সাংবাদিক এ টি এম তুরাব। ওইদিনই হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা যান তিনি। তুরাব দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রতিনিধি ও স্থানীয় জালালাবাদ এর স্টাফ রির্পোটার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

এ ঘটনায় ১৯ আগস্ট সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন নিহতের ভাই আবুল হোসেন মোহাম্মদ আজরফ।মামলার অন্য আসামিরা হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সিলেট মহানগর পুলিশের তৎকালীন অতিরিক্ত উপ কমিশনার মো. সাদেক দস্তগীর কাউসার, তৎকালীন উপ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ, সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি) মিজানুর রহমান, কোতোয়ালি থানার বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ কল্লোল গোস্বামী, কতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈন উদ্দিন, পরিদর্শক (তদন্ত) ফজলুর রহমান, এসআই কাজী রিপন সরকার, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সিসিকের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আফতাব উদ্দিন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি পিযূষ কান্তি দে, সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর, সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সিসিকের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুহেল আহমদ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সজল দাস অনিক, নগরীর চালিবন্দর এলাকার নেহার মঞ্জিলের বাসিন্দা শিবলু আহমদ (মো. রুহুল আমিন), নগর পুলিশের কনস্টেবল সেলিম মিয়া, আজহার, ফিরোজ, উজ্জ্বল।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, “ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের মদদপুষ্ট আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্তরা ও অবৈধ সরকারের অপেশাদার পুলিশের দ্বারা ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। আসামিরা সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে একজোট হয়ে বাদীর নিরপরাধ ছোট ভাই সাংবাদিক আবু তাহের মো. তুরাবকে (এটিএম তুরাব) হত্যা করেন। দিনদুপুরে শত-শত মানুষের সামনে ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এজাহারে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় মামলা করতে গেলে ২ থেকে ৫ নম্বর আসামিরা বাদীকে হত্যার হুমকি দেন। পরে আসামিরা রাষ্ট্রীয় প্রভাব ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাদীকে ঢাকায় নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করান। এই মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। আদালতের নির্দেশে গত ৮ অক্টোবর মামলার নথিপত্র কোতোয়ালি থানা পুলিশ পিবিআই-কে বুঝিয়ে দেয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুরসালিন জানান, আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই কাজ শুরু করেছি এবং ১ জনকে আটক করেছি, দ্রুত তদন্তকাজ শেষ করার জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

সাংবাদিক তুরাব হত্যা মামলায় পুলিশ কনস্টেবল উজ্জ্বল সিনহা ৫ দিনের রিমান্ডে

মো.মুহিবুর রহমান, সিলেট
Update Time : ১০:৪২:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

সিলেটে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে গুলিতে নিহত সাংবাদিক এটিএম তুরাব হত্যা মামলায় এক পুলিশ সদস্যের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার দুপুরে সিলেট অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আব্দুল মোমেন কনস্টেবল উজ্জল সিনহার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে রোববার (১৭ নভেম্বর) রাতে ঢাকা থেকে উজ্জ্বলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আলোচিত এই মামলায় এই প্রথম কোন আসামি গ্রেপ্তার হলো।

এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, পিবিআই’র পরিদর্শক মোহাম্মদ মোরসালিন জানান, কনস্টেবল উজ্জল সিনহাকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৫ দিনের রিমান্ডে মঞ্জুর করে।সিলেটে পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিম পিপিএম (সেবা) জানান, গ্রেফতার পুলিশ কনস্টেবল ডিএমপিতে কর্মরত ছিলেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ১৯ জুলাই সিলেট নগরের বন্দরবাজারে গুলিতে আহত হন সাংবাদিক এ টি এম তুরাব। ওইদিনই হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা যান তিনি। তুরাব দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রতিনিধি ও স্থানীয় জালালাবাদ এর স্টাফ রির্পোটার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

এ ঘটনায় ১৯ আগস্ট সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন নিহতের ভাই আবুল হোসেন মোহাম্মদ আজরফ।মামলার অন্য আসামিরা হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সিলেট মহানগর পুলিশের তৎকালীন অতিরিক্ত উপ কমিশনার মো. সাদেক দস্তগীর কাউসার, তৎকালীন উপ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ, সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি) মিজানুর রহমান, কোতোয়ালি থানার বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ কল্লোল গোস্বামী, কতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈন উদ্দিন, পরিদর্শক (তদন্ত) ফজলুর রহমান, এসআই কাজী রিপন সরকার, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সিসিকের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আফতাব উদ্দিন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি পিযূষ কান্তি দে, সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর, সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সিসিকের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুহেল আহমদ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সজল দাস অনিক, নগরীর চালিবন্দর এলাকার নেহার মঞ্জিলের বাসিন্দা শিবলু আহমদ (মো. রুহুল আমিন), নগর পুলিশের কনস্টেবল সেলিম মিয়া, আজহার, ফিরোজ, উজ্জ্বল।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, “ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের মদদপুষ্ট আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্তরা ও অবৈধ সরকারের অপেশাদার পুলিশের দ্বারা ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। আসামিরা সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে একজোট হয়ে বাদীর নিরপরাধ ছোট ভাই সাংবাদিক আবু তাহের মো. তুরাবকে (এটিএম তুরাব) হত্যা করেন। দিনদুপুরে শত-শত মানুষের সামনে ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এজাহারে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় মামলা করতে গেলে ২ থেকে ৫ নম্বর আসামিরা বাদীকে হত্যার হুমকি দেন। পরে আসামিরা রাষ্ট্রীয় প্রভাব ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাদীকে ঢাকায় নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করান। এই মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। আদালতের নির্দেশে গত ৮ অক্টোবর মামলার নথিপত্র কোতোয়ালি থানা পুলিশ পিবিআই-কে বুঝিয়ে দেয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুরসালিন জানান, আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই কাজ শুরু করেছি এবং ১ জনকে আটক করেছি, দ্রুত তদন্তকাজ শেষ করার জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।