ঢাকা ০৫:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ইউএনও সিফাত মোঃ ইশতিয়াক ভূঁইয়া

সবাই মিলে সুন্দর ব্রাহ্মণবাড়িয়া গঠন করতে চাই

আঃ হান্নান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৮:২৬:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
  • / ৮৫ Time View

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার বেলা ১১টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত মোঃ ইশতিয়াক ভূঁইয়া।

সভায় বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভ‚মি) মুক্তা গোস্বামী, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোজাফফর হোসেন, পৌর সভার নির্বাহী কর্মকর্তা এ.টি.এম নূরে আলম সিদ্দিকী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, এনজিও ফোরামের সভাপতি এস.এম শাহীন, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মিজানুর রহমান, সাবেরা সোবহান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ বদিউজ্জামান, গভঃ মডেল গার্লস হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আবদুল লতিফ, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা আছরারুন নবী মোবারক, আনন্দময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি রাশেদ কবির আকন্দ, সদর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সালাহ উদ্দিন প্রমুখ।

সভায় বক্তারা পৌর সভার রাস্তা ঘাটের বেহাল অবস্থা, শহরের তীব্র যানজট, লাগামহীন রিকসা ভাড়া নিয়ে, পৌর সভার ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও নিয়মিত ড্রেনগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করার ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সভায় বক্তারা বলেন, পৌর সভার প্রায় সকল রাস্তাই বর্তমানে চলাচলের অনুপযোগী, বিশেষ করে জেল রোড থেকে মেড্ডা পীরবাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটির করুন দশা। এছাড়া শহরের প্রায় প্রতিটি মহল্লার রাস্তা-ঘাটেরই অবস্থা শোচনীয়। অপর্যাপ্ত ট্রাফিকিং ব্যবস্থার কারনে প্রতিদিন শহরের প্রধান প্রধান রাস্তাগুলোতে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট থাকে। রিকসা ভাড়া লাগামহীন। ভবন নির্মানে পৌরসভার বিল্ডিং কোড মানা হচ্ছেনা। প্রতিনিয়ত শহরের ড্রেনগুলো পরিষ্কার-পরিষ্কার না করায় সামান্য বৃষ্টি হলেই শহরের রাস্তাগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। প্রথম শ্রেনীর পৌরসভা হওয়া সত্ত্বেও নাগরিকরা তৃতীয় শ্রেনীর পৌরসভার নাগরিক সেবা পায়না।

বক্তারা অবিলম্বে পৌরসভার সকল রাস্তা-ঘাট সংস্কার করার দাবি জানান।

বক্তারা বলেন, পৌর সভার রাস্তাগুলো পিছ ঢালাই না করে আরসিসি ঢালাই করে নির্মাণ করা হলে এর টেকসই ভালো হবে।

বক্তারা শহরের নিউ মার্কেটের পেছনের রাস্তার অবৈধ কসাইখানা উচ্ছেদ, লোকনাথ উদ্যানের  (টেংকেরপাড়) সামনের সবজির ভ্যানগুলো উচ্ছেদ, কাউতলী ব্রীজের উত্তর পাড় থেকে অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ড উচ্ছেদ, শহরের জেল রোড থেকে অবৈধ অ্যাম্বুলেন্স স্ট্যান্ড উচ্ছেদ, শহরের সবগুলো বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোর লাইসেন্স আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার আহবান জানান।

সভায় বক্তারা, শহরের যানজট লাঘবে ট্রাফিকিং ব্যবস্থা জোরদার, শহরের মসজিদ রোড ও পুরাতন কোর্ট রোডকে ওয়ানওয়ে করার দাবি জানান।

সভায় বক্তারা বলেন, পুলিশের অভিযানে মাদকসেবীরা গ্রেপ্তার হলেও মাদকের গডফাদাররা রয়েছেন ধরাছোয়ার বাইরে। তাছাড়া শহরের ছিনতাই আগের তুলনায় কম হলেও শহরের দাড়িয়াপুর ও পৈরতলা রেলক্রসিংয়ে এখনো ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম রয়ে গেছে। বক্তারা নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে রাতের বেলা শহর ও বিভিন্ন ইউনিয়নে পুলিশী টহল জোরদার করার দাবি জানান।

সভায় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোজাফফর হোসেন বলেন, মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই দুই-চারজন মাদকসেবীকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, শহরের ছিনতাই আগের চেয়ে অনেক কমেছে, আমরা ছিনতাইমুক্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া গঠনে কাজ করছি।

সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত মোঃ ইশতিয়াক ভূঁইয়া বলেন, আমরা সবাই মিলে সুন্দর ব্রাহ্মণবাড়িয়া গঠন করতে চাই। এজন্য যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। পর্যায়ক্রমে সকল সমস্যার সমাধান করা হবে। তিনি বলেন, শহরে ছিনতাই কমেছে। ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের নিয়মিত অভিযান চলছে।

তিনি বলেন, শুধু পুলিশের একার পক্ষে মাদক নির্মুল সম্ভব নয়। এজন্য নাগরিকদেরকেও আরো সচেতন হতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে কাজ করতে হবে।

সভায় বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগন, সদর উপজেলার বিভিন্ন দফতরের প্রধানগন ও আইন-শৃংখলা কমিটির সদস্যগন উপস্থিত ছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

ইউএনও সিফাত মোঃ ইশতিয়াক ভূঁইয়া

সবাই মিলে সুন্দর ব্রাহ্মণবাড়িয়া গঠন করতে চাই

আঃ হান্নান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি
Update Time : ০৮:২৬:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার বেলা ১১টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত মোঃ ইশতিয়াক ভূঁইয়া।

সভায় বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভ‚মি) মুক্তা গোস্বামী, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোজাফফর হোসেন, পৌর সভার নির্বাহী কর্মকর্তা এ.টি.এম নূরে আলম সিদ্দিকী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, এনজিও ফোরামের সভাপতি এস.এম শাহীন, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মিজানুর রহমান, সাবেরা সোবহান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ বদিউজ্জামান, গভঃ মডেল গার্লস হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আবদুল লতিফ, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা আছরারুন নবী মোবারক, আনন্দময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি রাশেদ কবির আকন্দ, সদর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সালাহ উদ্দিন প্রমুখ।

সভায় বক্তারা পৌর সভার রাস্তা ঘাটের বেহাল অবস্থা, শহরের তীব্র যানজট, লাগামহীন রিকসা ভাড়া নিয়ে, পৌর সভার ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও নিয়মিত ড্রেনগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করার ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সভায় বক্তারা বলেন, পৌর সভার প্রায় সকল রাস্তাই বর্তমানে চলাচলের অনুপযোগী, বিশেষ করে জেল রোড থেকে মেড্ডা পীরবাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটির করুন দশা। এছাড়া শহরের প্রায় প্রতিটি মহল্লার রাস্তা-ঘাটেরই অবস্থা শোচনীয়। অপর্যাপ্ত ট্রাফিকিং ব্যবস্থার কারনে প্রতিদিন শহরের প্রধান প্রধান রাস্তাগুলোতে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট থাকে। রিকসা ভাড়া লাগামহীন। ভবন নির্মানে পৌরসভার বিল্ডিং কোড মানা হচ্ছেনা। প্রতিনিয়ত শহরের ড্রেনগুলো পরিষ্কার-পরিষ্কার না করায় সামান্য বৃষ্টি হলেই শহরের রাস্তাগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। প্রথম শ্রেনীর পৌরসভা হওয়া সত্ত্বেও নাগরিকরা তৃতীয় শ্রেনীর পৌরসভার নাগরিক সেবা পায়না।

বক্তারা অবিলম্বে পৌরসভার সকল রাস্তা-ঘাট সংস্কার করার দাবি জানান।

বক্তারা বলেন, পৌর সভার রাস্তাগুলো পিছ ঢালাই না করে আরসিসি ঢালাই করে নির্মাণ করা হলে এর টেকসই ভালো হবে।

বক্তারা শহরের নিউ মার্কেটের পেছনের রাস্তার অবৈধ কসাইখানা উচ্ছেদ, লোকনাথ উদ্যানের  (টেংকেরপাড়) সামনের সবজির ভ্যানগুলো উচ্ছেদ, কাউতলী ব্রীজের উত্তর পাড় থেকে অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ড উচ্ছেদ, শহরের জেল রোড থেকে অবৈধ অ্যাম্বুলেন্স স্ট্যান্ড উচ্ছেদ, শহরের সবগুলো বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোর লাইসেন্স আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার আহবান জানান।

সভায় বক্তারা, শহরের যানজট লাঘবে ট্রাফিকিং ব্যবস্থা জোরদার, শহরের মসজিদ রোড ও পুরাতন কোর্ট রোডকে ওয়ানওয়ে করার দাবি জানান।

সভায় বক্তারা বলেন, পুলিশের অভিযানে মাদকসেবীরা গ্রেপ্তার হলেও মাদকের গডফাদাররা রয়েছেন ধরাছোয়ার বাইরে। তাছাড়া শহরের ছিনতাই আগের তুলনায় কম হলেও শহরের দাড়িয়াপুর ও পৈরতলা রেলক্রসিংয়ে এখনো ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম রয়ে গেছে। বক্তারা নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে রাতের বেলা শহর ও বিভিন্ন ইউনিয়নে পুলিশী টহল জোরদার করার দাবি জানান।

সভায় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোজাফফর হোসেন বলেন, মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই দুই-চারজন মাদকসেবীকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, শহরের ছিনতাই আগের চেয়ে অনেক কমেছে, আমরা ছিনতাইমুক্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া গঠনে কাজ করছি।

সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত মোঃ ইশতিয়াক ভূঁইয়া বলেন, আমরা সবাই মিলে সুন্দর ব্রাহ্মণবাড়িয়া গঠন করতে চাই। এজন্য যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। পর্যায়ক্রমে সকল সমস্যার সমাধান করা হবে। তিনি বলেন, শহরে ছিনতাই কমেছে। ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের নিয়মিত অভিযান চলছে।

তিনি বলেন, শুধু পুলিশের একার পক্ষে মাদক নির্মুল সম্ভব নয়। এজন্য নাগরিকদেরকেও আরো সচেতন হতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে কাজ করতে হবে।

সভায় বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগন, সদর উপজেলার বিভিন্ন দফতরের প্রধানগন ও আইন-শৃংখলা কমিটির সদস্যগন উপস্থিত ছিলেন।