শীতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর খাবার
- Update Time : ১০:২৮:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫
- / ৯ Time View
দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আমাদের শরীরকে খারাপ করে তোলে; বিশেষ করে শীতকালে সর্দি, কাশি, ফ্লু, হজমের সমস্যা, ক্লান্তি, ঘনঘন সংক্রমণের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।এজন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে সঠিক পুষ্টির প্রয়োজন। যদিও এমন কোনও নিদিষ্ট খাবার নেই যে, শরীরে প্রয়োজনীয় সমস্ত পুষ্টি সরবরাহ করবে।
এই বিষয়ে দিনাজপুর ‘রাইয়ান হেল্থ কেয়ার হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার’য়ের পুষ্টিবিদ বলেন, “তবে সমস্ত খাদ্যগোষ্ঠী থেকে বিভিন্ন ধরনের বৈচিত্র্যময় খাবার খাওয়া নিশ্চিন্ত করতে হবে যা শরীরকে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করবে এবং সুস্থ রাখবে।”
শীতকালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে যে ধরনের খাবার গ্রহণ করা উচিত, সে বিষয়ে এই পুষ্টিবিদ জানিয়েছেন বিস্তারিত।
ভিটামিন সি:
শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক ভুমিকা পালণ করে। যেহেতু আমাদের শরীর ভিটামিন সি তৈরি করে না, তাই খাদ্যের উওপর নির্ভর করতে হয়। এজন্য সিট্রাসযুক্ত বা ভিটামিন সি যুক্ত খাবার বেশি গ্রহণ করতে হবে। যেমন- আমলকি, লবু, পেয়ারা, জাম্বুরা ইত্যাদি।
ফাইটোক্যামিকেল:
যেসব ফল ও শাকসবজি উজ্জ্বল রংয়ের, যেমন- লাল, নীল, কমলা বা হলুদ, সবুজ ইত্যাদি, সেসবে এই উপাদান থাকে। টমেটো, ক্যাপসিকাম, স্ট্রবেরি ইত্যাদি লাল-ধর্মী খাবারগুলোতে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা শরীরে ক্ষতিকর কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।
আম, গাজর, মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন রয়েছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। সবুজ শাকসবজিতে ‘ক্লোরোফিল’ নামক ফাইটোক্যামিকেল রয়েছে। এছাড়া ‘ইনডোল’য়ের মতো নিদিষ্ট ক্যান্সার প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা রোগ প্রতিরোধে শক্তিশালী ভুমিকা রাখে।
শীতকালে পাওয়া যায় এমন সবজিগুলো হল- পালংশাক, ফুলকপি, বাধাকপি, ব্রকলি ইত্যাদি।
প্রোবায়োটিক:
শীতকালে নড়াচড়া করা হয় না তেমন। এ কারণে অনেকেরই হজমশক্তি ভালো হয় না। পাকস্থলী আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার একটি বিশাল অংশ। এ সময় প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার, যেমন- দই নিয়মিত পরিমিত পরিমাণে খেতে পারলে হজম শক্তির বৃদ্ধির পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধে সহায়ক ভুমিকা পালণ করবে।
এছাড়া হজমশক্তি ভালো করতে আঁশসমৃদ্ধ শাকসবজি ও ফল গ্রহণ করা উচিত। এটি প্রিবায়োটিক হিসেবে কাজ করবে।
বাদাম:
বিভিন্ন প্রকার বাদাম খাওয়া যেতে পারে। এতে ভিটামিন ই রয়েছে। এছাড়াও থাকে প্রোটিন, আঁশ ও স্বাস্থ্যকর চর্বি, যা ঘন ঘন ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে।
ভিটামিন ডি:
শীতকালে মানুষ বাইরে কম সময় কাটায়। এছাড়া কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশের কারণে এ সময় সূর্যের আলো পর্যাপ্ত নাও থাকতে পারে।
ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খুব কমই আছে। সূর্যের আলো থেকে আমরা ভিটামিন ডি বেশি পাই। তাই যাদের ক্রনিক রোগ আছে তারা চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ডি পরিপূরক খেতে পারেন। ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার হল- ডিমের কুসুম, মাশরুম, সামুদ্রিক মাছ, ‘ফরটিফাইড সিরিয়াল’ প্রভৃতি।
এটি শুধু একটি ভিটামিন নয়, বরং শরীরে হরমোন হিসেবে কাজ করে যা রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।
জিঙ্ক:
শীতে অনেকেই সর্দি, কাশি, ফ্লু, ডায়রিয়ার মতো সমস্যায় ভুগে থাকে। এজন্য জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি। এই খনিজের উৎস হিসেবে রয়েছে- বাদাম, তিসী-বীজ, চিয়া-বীজ, গোটা শস্য ইত্যাদি।
মসলা:
শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, সর্দি, কাশির প্রকোপ কমাতে তেজপাতা, কালো মরিচ খাওয়া উপকারী। এছাড়াও রয়েছে রুসন, যা থেকে মিলবে ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়া রোধী উপাদান।আরও গ্রহণ করা যেতে পারে হলুদ-দুধ কিংবা হলুদ-পানি। কারণ হলুদে কারকিউমিন নামক উপাদান শরীরে প্রদাহ এবং শীতকালীন সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
পানি বা তরল খাবার:
শীতকালে ঋতু পরিবর্তনের ফলে বাতাস শুষ্ক হয়ে যায়। যা দেহেকে ‘ডিহাইড্রেইট’ বা পানিশূন্য করে ফেলতে পারে। আবার গরম কম থাকায়, পিপাসা লাগে কম। ফলে পানি পানের পরিমাণ কমে যায় অনেকের। তবে সুস্থ থাকতে দিনে কমপক্ষে আট গ্লাস পানি পান করা জরুরি। এছাড়া আর্দ্র থাকতে পানি-ধর্মী সবজি ও ফল খাওয়া উপকারী, যেমন- শসা, কলা, টমেটো ইত্যাদি।
টিপস
১। নিয়মিত ব্যায়াম করুন। কারণ ব্যায়াম করলে ঠাণ্ডা লাগার সম্ভাবনা প্রায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমে যাবে।
২। নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
৩। পর্যাপ্ত ঘুমানোর প্রয়োজন আছে।
৪। মানসিক চাপ বা ‘স্ট্রেস’ কমাতে হবে।
৫। ঠাণ্ডা বাতাস থেকে রক্ষায় গরম কাপড় পরিধাণ করা উচিত।
৬। যাদের আগে থেকে ফ্লু-ধর্মী সমস্যা রয়েছে, তারা নিয়মিত গরম পানির ভাপ নিন এবং চিকিৎসকের প্রয়োজনে ফ্লু ভ্যাকসিন নিতে পারেন।
৭। পরিষ্কার পরিছন্ন থাকতে হবে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়











































































































































































































