শিশু সন্তানকে হত্যার দায়ে সৎ মায়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

- Update Time : ১০:০৩:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
- / ১৬৭ Time View
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় সৎ শিশু সন্তানকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে শারমিন আক্তার (৩৬) নামে এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছে আদালত। পাশাপাশি তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার এই দণ্ডাদেশ প্রদান করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত শারমিন আক্তার উপজেলার মেহারী ইউনিয়নের মেহারী গ্রামের শামীম মিয়ার স্ত্রী।
আদালতে মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, মেহারী গ্রামের শামীম মিয়ার প্রথম স্ত্রী দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান ফেলে রেখে বিদেশে চলে যান। এই তিন সন্তানকে লালন পালন করতে শামীম মিয়া বিয়ে করেন শারমিন আক্তারকে। পরে দুই ছেলে বড় হয়ে যাওয়ায় তারা সুমাইয়া (১২)কে রেখে ঢাকায় বসবাস করে ডিস লাইনের কাজ করে আসছিলেন।
২০২৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী সকালে শিশু সুমাইয়ার মরদেহ ঘরে পাওয়া যায়। এই খবর পেয়ে শামীম মিয়ার দুই ছেলে ঢাকা থেকে বাড়িতে আসে। তারা সুমাইয়ার লাশের গলায় কালো চিহ্ন দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। এই ঘটনায় সৎ মা শারমিন আক্তারকে প্রধান আসামী করে অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন শামীম মিয়ার ছেলে আরমিন ভূইয়া। এই মামলায় শারমিন আক্তারকে গ্রেফতার করে আদালতে ৭দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলে জিজ্ঞাসাবাদে শারমিন হত্যার কথা স্বীকার করেন। আদালতে শ্বাসরুদ্ধ করে সুমাইয়াকে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
শারমিন তার জবানবন্দিতে জানায়, সুমাইয়াকে পড়তে এবং রাতে খাবার খেতে বলায় তর্কবিতর্ক হয়। এরই জেরে ক্ষোভে দুই হাত দিয়ে চেপে সৎ মেয়ে সুমাইয়াকে হত্যা করে শারমিন। এই মামলায় শারমিনকে অভিযুক্ত করে তদন্তকারি কর্মকর্তা কসবা থানার উপপরিদর্শক লিয়াকত আলী আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে যুক্তিতর্ক ও সাক্ষি জেরা শেষে বুধবার জেলা জজ শারমিন নিগার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শারমিন আক্তারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহবুবুল আলম খোকন জানান, রায় প্রদানকালে কারাদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। সে গ্রেফতারের পর হাজতবাসকালীন সময় কারাদন্ডের মেয়াদ থেকে বাদ দেয়া হবে বলে বিজ্ঞ আদালত আদেশ দিয়েছেন।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়