লাগাতার কর্মবিরতিতে সরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষকরা, বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত
- Update Time : ১২:১১:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ১৯ Time View
দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকেরা আজ সোমবার থেকে চার দফা দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেছেন। এর ফলে আজ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা হচ্ছে না বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন বিদ্যালয় গতকাল বৃহস্পতিবারই নোটিশ দিয়ে আজকের পরীক্ষা স্থগিত করার কথা জানিয়েছে। ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল গতকালই নোটিশ দিয়ে আজকের পরীক্ষার না নেওয়ার কথা জানিয়েছে।
সকালে খুলনায় অবস্থিত সরকারি করোনেশন গার্লস হাইস্কুলের একজন শিক্ষক জানান, তাঁদের বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হচ্ছে না। রাজধানীর অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলেও বার্ষিক পরীক্ষা হয়নি। এ ছাড়া শেরেবাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়েও আজকের পরীক্ষা হয়নি।
বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে এ কর্মসূচি চলছে। এই সমিতির কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক মোহাম্মদ ওমর ফারুক আজ সকালে বলেন, মন্ত্রণালয় যদি তাঁদের দাবিগুলো পূরণের বিষয়ে রূপরেখাসহ সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দেন, তাহলে তাঁরা শিক্ষার্থী ও জাতীয় স্বার্থে কর্মবিরতি রাখবেন না।
এর আগে গতকাল আন্দোলনকারী শিক্ষকদের আরেকজন বলেছিলেন, সরকার দাবি মেনে নিলে সপ্তাহের ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার বাকি পরীক্ষাগুলো নেবেন তাঁরা এবং ডিসেম্বরের মধ্যেই ফল প্রকাশ করবেন। আর দাবি না মানলে কর্মবিরতি চলবে।
মাধ্যমিক শিক্ষকদের চারটি দাবি হলো
১. সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারভুক্ত করে ‘মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের’ গেজেট প্রকাশ।
২. বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় কর্মরত শিক্ষকদের বিভিন্ন শূন্য পদে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন দ্রুত কার্যকর করা।
৩. সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে বকেয়া টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের মঞ্জুরি আদেশ দেওয়া।
৪. ২০১৫ সালের আগের মতো সহকারী শিক্ষকদের দুই থেকে তিনটি ইনক্রিমেন্টসহ অগ্রিম বর্ধিত বেতন-সুবিধা বহাল করে গেজেট প্রকাশ।
সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির গতকালের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিনের পেশাগত মর্যাদা ও বেতন-ভাতাসংক্রান্ত চার দফা দাবির বিষয়ে গতকাল মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে শিক্ষকেরা দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। কিন্তু দাবিগুলো না মানায় এখন লাগাতার কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন।
প্রাথমিকে একাংশের কর্মবিরতি—
এদিকে সহকারী শিক্ষকদের বেতন ‘আপাতত’ ১১তম গ্রেড দেওয়াসহ তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করে আসছেন প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ ব্যানারে এ কর্মসূচি চলছে। সংগঠনটি গতকাল সন্ধ্যায় জানিয়েছে দাবি বাস্তবায়নের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি না হওয়ায় আজ তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) বর্জন কর্মসূচি চলবে।
অবশ্য সকালে ঢাকায় বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। লালবাগ শিক্ষা এলাকার একটি বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক সকালে পরীক্ষা শুরুর কথা জানিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে কড়া বার্তা আছে। আর সাধারণত ঢাকার বিদ্যালয়গুলোয় এ ধরনের কর্মসূচি সব সময়ই কম পালিত হয়।
প্রসঙ্গত, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মূল বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে আজ ১ ডিসেম্বর।
সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক কোটির বেশি। শিক্ষক রয়েছেন পৌনে চার লাখের বেশি। সহকারী শিক্ষকের অনুমোদিত পদ ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২১৬টি, বর্তমানে কর্মরত ৩ লাখ ৫২ হাজার ২০৮ জন।
বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা জাতীয় বেতন স্কেলের ১৩তম গ্রেডে আছেন (শুরুর মূল বেতন ১১ হাজার টাকা)। সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১০ম করাসহ তিন দফা দাবি জানিয়ে সহকারী শিক্ষকেরা এ মাসের শুরুতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান ও বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি শুরু করেছিলেন।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়



































































































