ঢাকা ০২:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
জাতীয় পরিচয় পত্রের কার্যক্রম সিভিল রেজিস্ট্রেশন কমিশনে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবীতে মানববন্ধন রমেকের ডাক্তার মাহাবুবকে চান ‘না’ সহকর্মীরা, অন্যত্র বদলির দাবি  চায়ের দোকানের আঁড়ালে মদের ব্যবসা, গ্রেফতার ২ কুবির সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্তরসহ প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে শর্টকোড চালুর সিদ্ধান্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে বাস ট্র্যাকিং সিস্টেম ধর্ষণকারীর মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে গাজীপুরে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিল নোয়াখালীতে নামাজ পড়তে গেলে মসজিদের শৌচাগারে শিশুকে বলৎকার বান্দরবানে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় ৪ আসামীর যাবজ্জীবন, ১ লাখ টাকা জরিমানা ধর্ষণ বিরোধী স্লোগানে মুখরিত কুবি ক্যাম্পাস

“রোস্ট” নাটকে সমসাময়িক সমাজের প্রতিচ্ছবি

সাজিদুর রহমান, কুবি প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৭:৪৮:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ১১৩ Time View

মঞ্চে অভিনীত হচ্ছে নাটক। কখনো অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছে দর্শক। কখনো করুণ দৃশ্য দর্শকদের করে তুলছে নিশ্চুপ। আবার করতালিতে মুখরিত হচ্ছে কুবির মুক্তমঞ্চ। এমনই এক নাট্য সন্ধ্যার গল্প এটি। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ‘থিয়েটার, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’ আয়োজন করেছিল ৪র্থ আন্তঃবিভাগ নাট্য প্রতিযোগিতা ২০২৫। আর সেই প্রতিযোগিতায় বাংলা বিভাগ টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নের মুকুট অর্জন করেছে।

বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাহিদা বেগম রচনা করেছেন ‘রোস্ট’। নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি নিজেই। নাটকটিতে বাংলা বিভাগের বিভিন্ন আবর্তনের শিক্ষার্থীরা অভিনয় করেছেন।

ড. নাহিদা বেগমের কথায়, “গতবারের মতো এবারও আমরা নাট্য চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। আমার বিভাগের যেকোনো জয়ই আমার কাছে আনন্দের।এই জয় শুধু বিভাগের নয়, সবার।”

শব্দ ও আলোক নির্দেশনার দায়িত্বে ছিলেন নাজমুল ইসলাম ও নাজিম আহমেদ। কস্টিউম ডিজাইন করেছেন রুমি আক্তার ও নাঈম ইসলাম। মঞ্চসজ্জায় ছিলেন কাওসার। নাটকটিতে অভিনয় করেছেন বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা—আকরাম, সুমাইয়া, সাদিয়া, আবু নাঈম, জুনাইদ, নাঈম, তন্দ্রা, তাসনিম, নাবিলা ও অমি।

‘রোস্ট’ নাটকের গল্প বিলাসী জীবনের চাহিদায় একজন সাধারণ ব্যবসায়ীর মজুদদারে পরিণত হওয়া নিয়ে। তার কর্মকাণ্ডের কারণে সমাজের ভিন্ন ভিন্ন সমস্যার উদ্ভব হয়। কিন্তু এই সিন্ডিকেট মজুদদারদের উত্থান যেমন হয়, তেমনই পতনও ঘটে। নাটকের শেষে আকরামের কণ্ঠে উচ্চারিত সংলাপ দর্শকদের ভাবনায় ফেলে দেয়:
“নগর পুড়িলে দেবালয় কি এড়ায়? এড়ায় না। সকল ধ্বংসের সঙ্গেই প্রাণ যায় কিছু নিরপরাধ মানুষের।”

মজনু চরিত্রে অভিনয় করা আবু নাঈম বলেন, “নাটক আমাদের জীবনেরই দর্পণ। ‘রোস্ট’ নাটকে আমরা সমাজের এমন কিছু দিক তুলে ধরেছি, যা সবাইকে ভাবায়। প্রথমবার মঞ্চে অভিনয় করেও চ্যাম্পিয়ন হতে পেরে খুব আনন্দিত।”

নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করা আকরাম বলেন, “নাহিদা ম্যামের দিক-নির্দেশনায় আমরা অনেক দিন ধরে রিহার্সাল করেছি। এর ফলেই একটি সুন্দর নাটক উপহার দিতে পেরেছি। নাটকের মাধ্যমে আমরা দেখাতে চেয়েছি, করোনা মহামারি, বন্যা, রমজানসহ বিভিন্ন সংকটে কীভাবে অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে জিনিসপত্রের দাম বাড়ায়। এদের পতনই নাটকের বার্তা।”

ড. নাহিদা বেগম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক আয়োজন আরও বাড়ানো উচিত। নাট্য প্রতিযোগিতাগুলো বড় পরিসরে আয়োজন করা হলে, তা শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা আরও বিকশিত করবে। প্রশাসনের কাছে আমাদের এই অনুরোধ থাকবে।”

‘রোস্ট’ শুধু একটি নাটক নয়, এটি ছিল সমসাময়িক সমাজের একটি প্রতিচ্ছবি। দর্শকদের হাসি, চোখের জল এবং করতালি সেই বার্তাকে গ্রহণ করেছে। নাটকের মাধ্যমে বাংলা বিভাগ শুধু চ্যাম্পিয়নের মুকুটই নয়, বরং একটি সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্নকেও মঞ্চে তুলে ধরেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

“রোস্ট” নাটকে সমসাময়িক সমাজের প্রতিচ্ছবি

সাজিদুর রহমান, কুবি প্রতিনিধি
Update Time : ০৭:৪৮:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫

মঞ্চে অভিনীত হচ্ছে নাটক। কখনো অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছে দর্শক। কখনো করুণ দৃশ্য দর্শকদের করে তুলছে নিশ্চুপ। আবার করতালিতে মুখরিত হচ্ছে কুবির মুক্তমঞ্চ। এমনই এক নাট্য সন্ধ্যার গল্প এটি। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ‘থিয়েটার, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’ আয়োজন করেছিল ৪র্থ আন্তঃবিভাগ নাট্য প্রতিযোগিতা ২০২৫। আর সেই প্রতিযোগিতায় বাংলা বিভাগ টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নের মুকুট অর্জন করেছে।

বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাহিদা বেগম রচনা করেছেন ‘রোস্ট’। নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি নিজেই। নাটকটিতে বাংলা বিভাগের বিভিন্ন আবর্তনের শিক্ষার্থীরা অভিনয় করেছেন।

ড. নাহিদা বেগমের কথায়, “গতবারের মতো এবারও আমরা নাট্য চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। আমার বিভাগের যেকোনো জয়ই আমার কাছে আনন্দের।এই জয় শুধু বিভাগের নয়, সবার।”

শব্দ ও আলোক নির্দেশনার দায়িত্বে ছিলেন নাজমুল ইসলাম ও নাজিম আহমেদ। কস্টিউম ডিজাইন করেছেন রুমি আক্তার ও নাঈম ইসলাম। মঞ্চসজ্জায় ছিলেন কাওসার। নাটকটিতে অভিনয় করেছেন বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা—আকরাম, সুমাইয়া, সাদিয়া, আবু নাঈম, জুনাইদ, নাঈম, তন্দ্রা, তাসনিম, নাবিলা ও অমি।

‘রোস্ট’ নাটকের গল্প বিলাসী জীবনের চাহিদায় একজন সাধারণ ব্যবসায়ীর মজুদদারে পরিণত হওয়া নিয়ে। তার কর্মকাণ্ডের কারণে সমাজের ভিন্ন ভিন্ন সমস্যার উদ্ভব হয়। কিন্তু এই সিন্ডিকেট মজুদদারদের উত্থান যেমন হয়, তেমনই পতনও ঘটে। নাটকের শেষে আকরামের কণ্ঠে উচ্চারিত সংলাপ দর্শকদের ভাবনায় ফেলে দেয়:
“নগর পুড়িলে দেবালয় কি এড়ায়? এড়ায় না। সকল ধ্বংসের সঙ্গেই প্রাণ যায় কিছু নিরপরাধ মানুষের।”

মজনু চরিত্রে অভিনয় করা আবু নাঈম বলেন, “নাটক আমাদের জীবনেরই দর্পণ। ‘রোস্ট’ নাটকে আমরা সমাজের এমন কিছু দিক তুলে ধরেছি, যা সবাইকে ভাবায়। প্রথমবার মঞ্চে অভিনয় করেও চ্যাম্পিয়ন হতে পেরে খুব আনন্দিত।”

নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করা আকরাম বলেন, “নাহিদা ম্যামের দিক-নির্দেশনায় আমরা অনেক দিন ধরে রিহার্সাল করেছি। এর ফলেই একটি সুন্দর নাটক উপহার দিতে পেরেছি। নাটকের মাধ্যমে আমরা দেখাতে চেয়েছি, করোনা মহামারি, বন্যা, রমজানসহ বিভিন্ন সংকটে কীভাবে অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে জিনিসপত্রের দাম বাড়ায়। এদের পতনই নাটকের বার্তা।”

ড. নাহিদা বেগম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক আয়োজন আরও বাড়ানো উচিত। নাট্য প্রতিযোগিতাগুলো বড় পরিসরে আয়োজন করা হলে, তা শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা আরও বিকশিত করবে। প্রশাসনের কাছে আমাদের এই অনুরোধ থাকবে।”

‘রোস্ট’ শুধু একটি নাটক নয়, এটি ছিল সমসাময়িক সমাজের একটি প্রতিচ্ছবি। দর্শকদের হাসি, চোখের জল এবং করতালি সেই বার্তাকে গ্রহণ করেছে। নাটকের মাধ্যমে বাংলা বিভাগ শুধু চ্যাম্পিয়নের মুকুটই নয়, বরং একটি সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্নকেও মঞ্চে তুলে ধরেছে।