ঢাকা ১০:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
কুবির সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্তরসহ প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে শর্টকোড চালুর সিদ্ধান্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে বাস ট্র্যাকিং সিস্টেম ধর্ষণকারীর মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে গাজীপুরে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিল নোয়াখালীতে নামাজ পড়তে গেলে মসজিদের শৌচাগারে শিশুকে বলৎকার বান্দরবানে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় ৪ আসামীর যাবজ্জীবন, ১ লাখ টাকা জরিমানা ধর্ষণ বিরোধী স্লোগানে মুখরিত কুবি ক্যাম্পাস বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়কসহ ৭ জন কারাগারে মেয়েকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় বাবাকে কুপিয়ে জখম কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বহির্বিভাগের টিকিট বাণিজ্য
কমিটি নিয়ে অসন্তোষ

রাঙ্গাবালীতে ক্লাস বর্জন করে ধর্মঘট, কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ

ফিরোজ ফরাজী, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৭:২৩:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৫৫ Time View

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের আবদুল ছাত্তার স্কুল এন্ড কলেজে ক্লাস বর্জন করে ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। ওই কলেজের এডহক কমিটির সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে রোববার সকাল ১০ টা থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়। সংশ্লিষ্টদের আশ্বাসে যা শেষ হয় দুপুর ২ টা ৪০ মিনিটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিক্ষার্থীদের ধর্মঘট কর্মসূচি চলাকালে দুপুর ১২ টার দিকে প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শনে এসেছিলেন  উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের একাডেমিক সুপারভাইজার অনাদি কুমার বাহাদুর । তিনি শিক্ষক মিলনায়তনে অবস্থানকালে তালা ঝুলিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা কক্ষের  বাহিরে অবস্থান করে সভাপতির পতদ্যাগ দাবি করে স্লোগান দিতে থাকেন।

পরে স্থানীয় লোকজনের হস্তক্ষেপে প্রায় এক ঘন্টা পর শিক্ষক মিলনায়তনে দেওয়া তালা খুলে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের দাবির বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাত দিয়ে আশ্বাস দিয়েছেন একাডেমিক সুপারভাইজার। এই আশ্বাসে ধর্মঘট স্থগিত করা হয়। দাবি মেনে নেওয়া না হলে সোমবার থেকে আবারও কর্মসূচির ডাক দিবেন বলে জানান তারা।

জানা গেছে, গতবছরের ৩ ডিসেম্বর ওই প্রতিষ্ঠানটির এডহক কমিটির সভাপতি করা হয় জসিম উদ্দিনকে। বিষয়টি সম্প্রতি জানাজানি হলে এনিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ শুরু হয়। একপর্যায় জসিম উদ্দিনের পদত্যাগ দাবিতে গত বুধবার থেকে ক্লাস বর্জন করে ধর্মঘট কর্মসূচি শুরু করে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবি, এই প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা অবস্থায় এক শিক্ষকে  লাঞ্ছিত করে জসিম উদ্দিন বহিষ্কার হয়েছিলেন। সেই জসিম উদ্দিনকেই এডহক কমিটির সভাপতি করে এই প্রতিষ্ঠানে নিয়ে আসা হয়েছে। যা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা মেনে নিবে না। তাই সভাপতির পদত্যাগ কিংবা অপসারণ দাবি তুলে এ কর্মসূচি পালন করছেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা। তবে প্রতিষ্ঠানটির নবগঠিত এডহক কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনীত এসব অভিযোগ মিথ্যা-ভিত্তিহীন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল ছাত্তার স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি বরিশাল শিক্ষাবোর্ডে এসেছিলাম। ওখানে কি ঘটেছে, তা সম্পর্কে তেমন কিছুই জানি না। তবে যতটুকু শুনেছি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার গিয়েছিল। ওখানে তিনি যাওয়ার পর জসিম উদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে মিছিল করতেছিল শিক্ষার্থীরা।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের সকল নিয়ম-নীতি মেনে বিধিমালা অনুসরণ করেই কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনটা নাম প্রস্তাব করেছি, তার মধ্যে জসিম উদ্দিনকে সভাপতি হিসেবে বোর্ড অনুমোদন দিয়েছে। এখন সভাপতির পতদ্যাগ চাচ্ছে সভাপতি পদত্যাগ করবে কি করবে না, এটা সভাপতির এখতিয়ার। আর বোর্ড চাইলে কমিটি ভেঙে দিতে পারে।’

উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার অনাদি কুমার বাহাদুর বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অফিস কক্ষে অবস্থানকালে তারা তালা দিয়েছিল। পরে তারাই খুলে দিয়েছে। সভাপতির পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীরা একটি লিখিত আবেদন দিয়েছেন। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে শিক্ষা বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হবে।’

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হাসান বলেন, ‘চরমোন্তাজ আবদুল ছাত্তার স্কুল এন্ড কলেজের এডহক কমিটি নিয়ে সৃষ্ট অচলাবস্থা সম্পর্কে উর্ধ্বতণ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার রুটিন পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। তার অবরুদ্ধ হওয়ার বিষয়টি সত্য নয় বলে তিনি নিজেই জানিয়েছেন।’

Please Share This Post in Your Social Media

কমিটি নিয়ে অসন্তোষ

রাঙ্গাবালীতে ক্লাস বর্জন করে ধর্মঘট, কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ

ফিরোজ ফরাজী, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
Update Time : ০৭:২৩:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের আবদুল ছাত্তার স্কুল এন্ড কলেজে ক্লাস বর্জন করে ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। ওই কলেজের এডহক কমিটির সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে রোববার সকাল ১০ টা থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়। সংশ্লিষ্টদের আশ্বাসে যা শেষ হয় দুপুর ২ টা ৪০ মিনিটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিক্ষার্থীদের ধর্মঘট কর্মসূচি চলাকালে দুপুর ১২ টার দিকে প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শনে এসেছিলেন  উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের একাডেমিক সুপারভাইজার অনাদি কুমার বাহাদুর । তিনি শিক্ষক মিলনায়তনে অবস্থানকালে তালা ঝুলিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা কক্ষের  বাহিরে অবস্থান করে সভাপতির পতদ্যাগ দাবি করে স্লোগান দিতে থাকেন।

পরে স্থানীয় লোকজনের হস্তক্ষেপে প্রায় এক ঘন্টা পর শিক্ষক মিলনায়তনে দেওয়া তালা খুলে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের দাবির বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাত দিয়ে আশ্বাস দিয়েছেন একাডেমিক সুপারভাইজার। এই আশ্বাসে ধর্মঘট স্থগিত করা হয়। দাবি মেনে নেওয়া না হলে সোমবার থেকে আবারও কর্মসূচির ডাক দিবেন বলে জানান তারা।

জানা গেছে, গতবছরের ৩ ডিসেম্বর ওই প্রতিষ্ঠানটির এডহক কমিটির সভাপতি করা হয় জসিম উদ্দিনকে। বিষয়টি সম্প্রতি জানাজানি হলে এনিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ শুরু হয়। একপর্যায় জসিম উদ্দিনের পদত্যাগ দাবিতে গত বুধবার থেকে ক্লাস বর্জন করে ধর্মঘট কর্মসূচি শুরু করে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবি, এই প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা অবস্থায় এক শিক্ষকে  লাঞ্ছিত করে জসিম উদ্দিন বহিষ্কার হয়েছিলেন। সেই জসিম উদ্দিনকেই এডহক কমিটির সভাপতি করে এই প্রতিষ্ঠানে নিয়ে আসা হয়েছে। যা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা মেনে নিবে না। তাই সভাপতির পদত্যাগ কিংবা অপসারণ দাবি তুলে এ কর্মসূচি পালন করছেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা। তবে প্রতিষ্ঠানটির নবগঠিত এডহক কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনীত এসব অভিযোগ মিথ্যা-ভিত্তিহীন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল ছাত্তার স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি বরিশাল শিক্ষাবোর্ডে এসেছিলাম। ওখানে কি ঘটেছে, তা সম্পর্কে তেমন কিছুই জানি না। তবে যতটুকু শুনেছি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার গিয়েছিল। ওখানে তিনি যাওয়ার পর জসিম উদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে মিছিল করতেছিল শিক্ষার্থীরা।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের সকল নিয়ম-নীতি মেনে বিধিমালা অনুসরণ করেই কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনটা নাম প্রস্তাব করেছি, তার মধ্যে জসিম উদ্দিনকে সভাপতি হিসেবে বোর্ড অনুমোদন দিয়েছে। এখন সভাপতির পতদ্যাগ চাচ্ছে সভাপতি পদত্যাগ করবে কি করবে না, এটা সভাপতির এখতিয়ার। আর বোর্ড চাইলে কমিটি ভেঙে দিতে পারে।’

উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার অনাদি কুমার বাহাদুর বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অফিস কক্ষে অবস্থানকালে তারা তালা দিয়েছিল। পরে তারাই খুলে দিয়েছে। সভাপতির পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীরা একটি লিখিত আবেদন দিয়েছেন। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে শিক্ষা বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হবে।’

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হাসান বলেন, ‘চরমোন্তাজ আবদুল ছাত্তার স্কুল এন্ড কলেজের এডহক কমিটি নিয়ে সৃষ্ট অচলাবস্থা সম্পর্কে উর্ধ্বতণ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার রুটিন পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। তার অবরুদ্ধ হওয়ার বিষয়টি সত্য নয় বলে তিনি নিজেই জানিয়েছেন।’