রসিকের সাবেক মেয়রকে গ্রেপ্তারের দাবি এনসিপি ও বৈছাআ নেতাদের

- Update Time : ০৬:০৪:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
- / ৭২ Time View
রংপুর সিটি কর্পোরেশনের (রসিক) অপসারিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের পুনর্বহালের দাবিতে বুধবার (২৮ মে) দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে অপসারিত মেয়র ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা অন্তবর্তীকালীন সরকারকে সাত দিনের আলটিমেটাম দেন। দাবি আদায় না হলে ঈদের পর রংপুরকে অচল করার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। তার এই বক্তব্যে রংপুরে জাতীয় নাগরিক কমিটি-এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়। বুধবার রাত ৯টায় দিকে রংপুর প্রেসক্লাব এলাকায় পাল্টা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন সংগঠনের নেতারা।
এনসিপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল থেকে জাতীয় পার্টিকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর-দালাল-ফ্যাসিস্ট’ আখ্যা দিয়ে স্লোগান দেন। এসময় তারা অপসারিত মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে তাদের প্রতিহত করতে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেন। বিক্ষোভে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের (বৈছাআ) নেতাকর্মীরাও অংশ নেন।
এরআগে, এনসিপি ও বৈছাআ’র নেতাকর্মীরা রাত ৯টায় রংপুর প্রেসক্লাব এলাকায় জড়ো হন। সেখান থেকে রাত সাড়ে নয়টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগর ভবনের দিকে অগ্রসর হয়ে পরে জাহাজ কোম্পানী মোড়ে এসে শেষ হয়। পরে, সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশ বক্তব্য দেন সংগঠনের নেতারা।
সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির রংপুর জেলা সংগঠক আলমগীর নয়ন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে লিয়াজো করে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা আজকে রংপুরে মিছিল করেছে। মিছিলে তারা আজকে বলেছে আগামী সাত দিনের মধ্যে অপসারিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের পুনর্বহাল করতে হবে। আমরা বলতে চাই এই সাহস উনি (মেয়র মোস্তফা) কোথায় পেয়েছে।
প্রশাসনকে আলটিমেটাম দিয়ে এনসিপির এই সংগঠক বলেন, আমরা প্রশাসনকে বলতে চাই, তারা আবু সাইদের রংপুরে কিভাবে মিছিল বিক্ষোভ করার সাহস পায়। আমরা প্রশাসনকে আটিমেমেটাম দিতে চাই এই মিছিলে অংশ নেয়া আওয়ামী লীগের দোসর ছিল চামচাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। যদি গ্রেপ্তার করা না হয়, তাহলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
“এই অন্তবর্তিকালীন সরকার অথর্ব”
বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি বলেন, খুনি হাসিনা পালিয়ে গিয়েছে। সেই ফ্যাসিস সরকারের অন্যতম দোসর ছিল জাতীয় পার্টি। তারা ১৬ বছর আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে গুম-খুনসহ সকল অন্যায়ের সহযোগী হয়েছিল। সুবিধাভোগী জাতীয় পার্টির রাজনীতি করার আর কোনো অধিকার নেই। আওয়ামী লীগের মতো অবিলম্বে এই যাত্রা পার্টিকে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করতে হবে। ফ্যাসিসের দোসরদের গ্রেপ্তার করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যাত্রা পার্টির একজন নেতা যিনি রংপুরের মেয়র ছিলেন। এই মেয়র তাকে পুনর্বহাল করতে আন্দোলন করছে। ফ্যাসিসের এই দোসররা আমাদের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দকে নিয়ে কটু কথা বলেছে। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে অন্তবর্তী সরকার হয়েছে, এই সরকারকে তারা অবৈধ বলেছে। আমরা রংপুর সিটি কর্পোরেশনে কোন আওয়ামী লীগের দোসরকে আর বসতে দেব না। তারা যদি রংপুরকে অস্থিতিশীল করার কোন চিন্তা ভাবনা করে, রংপুরের বিপ্লবীরা তার দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত আছি।
এর আগে, বুধবার দুপুরে রসিকের অপসারিত জনপ্রতিনিধিদের পুনর্বহালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টাকে এক সপ্তাহের আলটিমেটাম দিয়ে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টাকে বলব আগামী সাত দিনের মধ্যে সিটি পরিষদকে পূর্বের মতো কার্যকর করবেন বলে প্রত্যাশা করি। আর যদি না করেন তাহলে ঈদের পরে ১২ অথবা ১৩ জুন থেকে নগর ভবনের মূল ফটকের সামনে মঞ্চ বসিয়ে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার কর্মসূচি পালন করা হবে।
উল্লেখ্য, সবশেষ ২০২২ সালের ২৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ১ লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৮ ভোট পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মো. আমিরুজ্জামান পিয়াল, যিনি পেয়েছিলেন ৪৯ হাজার ৮৯২ ভোট।
ওই নির্বাচনে ভোট ব্যবধানে তৃতীয় অবস্থানে থাকা স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফুর রহমান মিলন হাতি প্রতীকে ৩৩ হাজার ৮৮৩ ভোট পেয়েছিলেন। আর চতুর্থ অবস্থানে থাকা আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া নৌকা প্রতীকে পেয়েছিলেন ২২ হাজার ৩০৬ ভোট।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়