রমজানে দাম কমানোর উদ্যোগ: ফলকে ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য’ ঘোষণার সুপারিশ ট্যারিফ কমিশনের
- Update Time : ০৮:৩৩:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ২৯ Time View
আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার নাগালের মধ্যে রাখতে আমদানি করা তাজা ফলকে ‘বিলাস পণ্য’ তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য’ হিসেবে বিবেচনার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। একইসঙ্গে এসব ফলের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) একটি চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি।
উচ্চ শুল্কহারে নাভিশ্বাস ভোক্তাদের
ট্যারিফ কমিশনের চিঠিতে জানানো হয়, বর্তমানে আপেল, কমলা, ম্যান্ডারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ককরের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২১.৭৮ শতাংশ। ডালিম বা আনার আমদানিতে এই হার আরও বেশি— ১২৬.৭৮ শতাংশ। অথচ ২০২১-২২ অর্থবছরেও এই মোট শুল্কের হার ছিল ৮৯.৩২ শতাংশ। ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও উচ্চ শুল্কের কারণে বাজারে ফলের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে।
যেসব যুক্তিতে শুল্ক কমানোর সুপারিশ:
চিঠিতে ট্যারিফ কমিশন বেশ কিছু যৌক্তিক কারণ তুলে ধরেছে:
* স্থানীয় উৎপাদনের অভাব: আপেল, মাল্টা বা আনারের মতো ফলের দেশে বাণিজ্যিক উৎপাদন নেই বললেই চলে। ফলে আমদানির ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করে দেশীয় শিল্প সুরক্ষার কোনো প্রয়োজনীয়তা এখানে নেই।
* আইনি বাধ্যবাধকতা: ‘নিত্যপণ্য আইন, ১৯৫৬’ অনুযায়ী খাদ্যদ্রব্য হিসেবে তাজা ফল ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য’ ক্যাটাগরিতে পড়ে। তাই একে বিলাস পণ্য হিসেবে গণ্য করে ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা অযৌক্তিক।
* অবৈধ আমদানির ঝুঁকি: শুল্ক অত্যধিক হওয়ায় বৈধ পথে আমদানি কমে যাচ্ছে, যা চোরাচালান বা অবৈধ পথকে উৎসাহিত করতে পারে।
* জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি: দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ফল সংরক্ষণে অতিমাত্রায় রাসায়নিক ব্যবহারের প্রবণতা বাড়তে পারে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।
* রাজস্ব ক্ষতি: আমদানি কমে যাওয়ার ধারা অব্যাহত থাকলে দীর্ঘমেয়াদে সরকারের রাজস্ব আহরণও কমে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
রমজানের প্রস্তুতি।
প্রতি বছর রমজান মাসে আপেল, মাল্টা ও আঙুরের চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। কমিশন মনে করে, বর্তমানে আরোপিত অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার বা যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনলে বাজারে ফলের সরবরাহ বাড়বে এবং দাম সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের মধ্যে আসবে।
এনবিআর এই সুপারিশ গ্রহণ করলে আসন্ন রমজানে আমদানিকৃত ফলের বাজারে স্বস্তি ফিরবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।



























































































































































































