রংপুরে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রয় শুরু

- Update Time : ০৭:১৪:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ জুলাই ২০২৩
- / ৩৫৮ Time View
রংপুরে সরকারি ভর্তুকি মূল্যে বিপণন সংস্থা ‘ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি’র বিক্রয় সামগ্রীর চাহিদা বেড়েছে।
নিম্ন আয়ের পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে বেকায়দায় থাকা মধ্যআয়ের মানুষরাও এখন টিসিবির পণ্য সামগ্রী কিনতে ভিড় করছেন।
তবে ক্রেতাদের চাহিদা ও উপস্থিতির তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় পণ্য দিতে হিমশিম খাচ্ছেন বিক্রেতারা।
সকাল থেকে রংপুর মহানগরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে মসুর ডাল ২ কেজি, সয়াবিন তেল ২ কেজি ও ৫ কেজি করে চাল বিক্রি শুরু করেছে টিসিবি।
খোলাবাজারে ট্রাকে করে বিক্রি করা তিন ধরণের খাদ্যপণ্য ৪৭০ টাকায় পেতে ভিড় করছে শত শত নারী-পুরুষ। প্রতিটি স্থানে নিম্নআয়ের মানুষের তুলনায় মধ্যআয়ের মানুষের সংখ্যা বেশি দেখা গেছে।
রোববার (১৬ জুলাই) সকাল সাড়ে দশটায় রংপুর নগরীর মুন্সিপাড়া কেরামতিয়া স্কুল মোড়ে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে টিসিবির এসব খাদ্যপণ্য বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন রংপুর সিটি করপোরেশনের সচিব উম্মে ফাতিমা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এ.ডব্লিউ.এম. রায়হান শাহ্ প্রমুখ।
এদিকে সকাল থেকে রংপুর নগরীর মুন্সিপাড়া কেরামতিয়া স্কুল মোড়, হাজীরহাট পুরাতন রাস্তা, কেরানীপাড়া চৌরাস্তা মোড়, সাতগাড়া মিস্ত্রিপাড়া মোড়সহ বিভিন্ন পয়েন্টে টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে টিসিবির পণ্যের দাম কম হওয়াতে দীর্ঘ সময় বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরষেদের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
মুন্সিপাড়ায় কথা হয় জহর আলী নামে বয়স্ক ব্যক্তির সাথে। তিনি বলেন, সরকারের এই উদ্যোগ ভালো। কিন্তু আমাদের মতো পরিবারের জন্য বছরজুড়ে এই কার্যক্রম চললে বেশি ভালো হতো। বাজারের চাপ যেভাবে বেড়েছে, সেভাবে তো আয় রোজগার বাড়েনি। ছোট্ট একটা চাকরি করি, বাড়তি আয়ের সুযোগও নেই। ছয় সদস্যের পরিবার। মাসের শুরুতেই বেতনের টাকা শেষ হয়ে যায়। এ জন্য টিসিবির পণ্য মাসে একবার পেলে পোষায় না। সরকারের মাসে একাধিকবার পণ্য দেওয়া উচিত।
কেরানীপাড়া চৌরাস্তা মোড় কথা হয় মোছলেমা বেগমের সাথে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, পাঁচ চাউল কয়দিন যাইবে বাহে। বাজারোত সোগ কিছুর দাম বেশি। সরকার যদি হামাক আরো বেশি করি জিনিসপত্র দেইল হয়, তাইলে হামার কষ্ট আরো কমিল হয়। সারাবছর যদি এদোন কম দামে চাউল-ডাইল, তেল-চিনি পাইনো হয়, তাইতো তো হামার কোনো দাবি থাকিল ন্যা হয়। সরকারোক কন, হামরা সারাবছর কম দামে টিসিবির পণ্য চাই।
বিভিন্ন পয়েন্টে যাদের সঙ্গে কথা হয়েছে, তাঁদের অধিকাংশ একই দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, বাজার দরের চেয়ে টিসিবির পণ্য প্রায় অর্ধেক দামে পাওয়া যায়। তাতে তাঁদের সংসার খরচের চাপ কিছুটা কমে। কিন্তু যে পরিমাণ পণ্য এক মাসে দরকার হয়, তার তুলনায় টিসিবি কম পণ্য দেয়। এ জন্য সরকারের উচিত মাসে একাধিকবার পণ্য দেওয়া।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত উপকারভোগী পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্যাদি বিক্রয় করা হচ্ছে। আজ সিটি করপোরেশনের ১ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের আটটি এবং কাউনিয়া উপজেলার ৪টি পয়েন্টে বিক্রয় শুরু হয়েছে। প্রথমদিনে ১২টি পয়েন্টে ১১ হাজার ৯৪ জন উপকারভোগী এসব পণ্য ক্রয় করতে পারবেন। পর্যায়ক্রমে নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ড, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও জানান, জেলায় সিটি করপোরেশন, ৩টি পৌরসভা ও ৮টি উপজেলার মোট উপকারভোগী সংখ্যা ২ লাখ ৮৫ হাজার ৩১২ জন। প্রতি উপকারভোগী মসুর ডাল ২ কেজি, সয়াবিন তেল ২ লিটার এবং চাল ৫ কেজি করে বরাদ্দ পাবেন। ভোক্তা মূল্য প্রতি কেজি/লিটার (মসুর ডাল- ৬০ টাকা, সয়াবিন তেল- ১০০ টাকা, চাল- ৩০ টাকা), সবমিলে তিনটি পণ্যের ক্রয়মূল্য ৪৭০ টাকা।