ঢাকা ০৫:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ২২ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ

যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেই গাজায় ইসরায়েলি হামলা, নিহত ১০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • Update Time : ১২:৫৪:২৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫
  • / ২৯ Time View

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েল ও সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়েছে। আলোচনার ফল নিয়ে আশাবাদী মধ্যস্থতাকারীরা। কিন্তু দুপক্ষের প্রতিনিধিরা যখন আলোচনার টেবিলে তখনো থেমে নেই ইসরায়েলি বর্বরতা।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাজার বিভিন্ন স্থানে হামলা করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এতে ১০ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩ জন খাদ্য ও ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত হয়েছেন।

সোমবার (৬ অক্টোবর) মিসরের শারম এল শেখ-এ চলমান শান্তি আলোচনার দিনেই গাজা উপত্যকায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তত ১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৩ জন খাদ্য ও ত্রাণ সংগ্রহের সময় প্রাণ হারান।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। আইডিএফ সাহায্যপ্রার্থীদের দিকে সরাসরি গুলি ছুড়েছে বলে অভিযোগ।

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাস প্রাথমিকভাবে সায় দেওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হামলা-বোমাবর্ষণ বন্ধের আহ্বান জানান। তার পরামর্শ আমলে নেয়নি ইসরায়েল। তখন থেকে নতুন হামলায় গাজায় নিহত হয়েছেন ১০৪ জন।

এদিকে মিশরের রেড সি উপকূলীয় শহর শারম এল-শেখে গাজা যুদ্ধের অবসান ও বন্দি বিনিময় নিয়ে পরোক্ষ আলোচনায় বসেছে ইসরায়েল ও হামাস। সোমবার (৬ অক্টোবর) থেকে এ আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে মিশরের রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংযুক্ত সংবাদমাধ্যম ‘আল কাহেরা নিউজ’।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার আলোকে বন্দি ও আটক ব্যক্তিদের বিনিময়ের জন্য প্রাথমিক শর্ত তৈরি নিয়ে আলোচনায় বসেছেন দুপক্ষের প্রতিনিধিরা। আলোচনায় মধ্যস্থতা করছে মিসর ও কাতার।

একজন মিশরীয় কর্মকর্তা জানান, সোমবার বিকেলে শারম এল-শেখে এই বৈঠক শুরু হয়। আলোচনায় ইসরায়েলি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির শীর্ষ আলোচক রন ডারমার, আর হামাসের পক্ষে নেতৃত্বে রয়েছেন জ্যেষ্ঠ নেতা খালিল আল-হাইয়া।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় সম্মতি জানায় ইসরায়েল এবং গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সংগঠন হামাস। প্রস্তাব অনুযায়ী, গত ৪ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা বন্ধের নির্দেশ দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

তবে গাজার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পরেও গত তিন দিনে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১০৪ জন ফিলিস্তিনি। সব হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে।

এ বিষয়ে ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র শোশ বেদ্রোসিয়ান দাবি করেন, হামলা নয় বরং গাজায় ‘রক্ষণাত্মক’ অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।

একই দিনে শারম এল শেখ-এ শুরু হয়েছে বহুপাক্ষিক শান্তি আলোচনা। যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, মিসর, ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন। আলোচনায় মূলত ফিলিস্তিনি বন্দি বিনিময় এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয় বলে জানায় মিসরের দৈনিক ‘আল কাহেরা নিউজ’।

দুই বছর আগে ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায়। ওই ঘটনার প্রতিশোধে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা চলছেই।

গত দুই বছরে এই অভিযানে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৬৭ হাজার ১৬০ জন ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৬৭৯ জন।

Please Share This Post in Your Social Media

যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেই গাজায় ইসরায়েলি হামলা, নিহত ১০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Update Time : ১২:৫৪:২৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েল ও সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়েছে। আলোচনার ফল নিয়ে আশাবাদী মধ্যস্থতাকারীরা। কিন্তু দুপক্ষের প্রতিনিধিরা যখন আলোচনার টেবিলে তখনো থেমে নেই ইসরায়েলি বর্বরতা।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাজার বিভিন্ন স্থানে হামলা করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এতে ১০ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩ জন খাদ্য ও ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত হয়েছেন।

সোমবার (৬ অক্টোবর) মিসরের শারম এল শেখ-এ চলমান শান্তি আলোচনার দিনেই গাজা উপত্যকায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তত ১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৩ জন খাদ্য ও ত্রাণ সংগ্রহের সময় প্রাণ হারান।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। আইডিএফ সাহায্যপ্রার্থীদের দিকে সরাসরি গুলি ছুড়েছে বলে অভিযোগ।

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাস প্রাথমিকভাবে সায় দেওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হামলা-বোমাবর্ষণ বন্ধের আহ্বান জানান। তার পরামর্শ আমলে নেয়নি ইসরায়েল। তখন থেকে নতুন হামলায় গাজায় নিহত হয়েছেন ১০৪ জন।

এদিকে মিশরের রেড সি উপকূলীয় শহর শারম এল-শেখে গাজা যুদ্ধের অবসান ও বন্দি বিনিময় নিয়ে পরোক্ষ আলোচনায় বসেছে ইসরায়েল ও হামাস। সোমবার (৬ অক্টোবর) থেকে এ আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে মিশরের রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংযুক্ত সংবাদমাধ্যম ‘আল কাহেরা নিউজ’।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার আলোকে বন্দি ও আটক ব্যক্তিদের বিনিময়ের জন্য প্রাথমিক শর্ত তৈরি নিয়ে আলোচনায় বসেছেন দুপক্ষের প্রতিনিধিরা। আলোচনায় মধ্যস্থতা করছে মিসর ও কাতার।

একজন মিশরীয় কর্মকর্তা জানান, সোমবার বিকেলে শারম এল-শেখে এই বৈঠক শুরু হয়। আলোচনায় ইসরায়েলি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির শীর্ষ আলোচক রন ডারমার, আর হামাসের পক্ষে নেতৃত্বে রয়েছেন জ্যেষ্ঠ নেতা খালিল আল-হাইয়া।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় সম্মতি জানায় ইসরায়েল এবং গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সংগঠন হামাস। প্রস্তাব অনুযায়ী, গত ৪ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা বন্ধের নির্দেশ দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

তবে গাজার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পরেও গত তিন দিনে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১০৪ জন ফিলিস্তিনি। সব হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে।

এ বিষয়ে ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র শোশ বেদ্রোসিয়ান দাবি করেন, হামলা নয় বরং গাজায় ‘রক্ষণাত্মক’ অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।

একই দিনে শারম এল শেখ-এ শুরু হয়েছে বহুপাক্ষিক শান্তি আলোচনা। যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, মিসর, ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন। আলোচনায় মূলত ফিলিস্তিনি বন্দি বিনিময় এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয় বলে জানায় মিসরের দৈনিক ‘আল কাহেরা নিউজ’।

দুই বছর আগে ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায়। ওই ঘটনার প্রতিশোধে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা চলছেই।

গত দুই বছরে এই অভিযানে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৬৭ হাজার ১৬০ জন ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৬৭৯ জন।