ঢাকা ০৩:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
২০ বছর কোমায় থাকার পর মারা গেলেন সৌদি আরবের ‘স্লিপিং প্রিন্স’ আল ওয়ালিদ শিলং থেকে ‘নব্য গডফাদার’ এসেছে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সালাহউদ্দিনকে ‘নব্য গডফাদার’ বলায় এনসিপি’র মঞ্চ ভাঙচুর, সভা পণ্ড স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দুধ দিয়ে গোসল করলেন স্বামী যাত্রাবাড়ীর আবাসিক হোটেলে শিশু হত্যার রহস্য উদঘাটন : ঘাতক গ্রেফতার জামায়াতের অনেক দায় কাধেঁ নিয়েছে বিএনপি – টুকু টেলিগ্রাম অ্যাপে ‘বিনিয়োগের ফাঁদ’ লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া দুই প্রতারক গ্রেপ্তার ফ্যাসিস্টরা জোট হয়ে ক্ষমতা ফিরে পেতে চক্রান্ত করছে: মির্জা ফখরুল রংপুরে গ্যাস স্টেশনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ; নিহত ১, আহত ২৫ এবার লড়াই হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে: জামায়াত আমির

যাত্রাবাড়ীর আবাসিক হোটেলে শিশু হত্যার রহস্য উদঘাটন : ঘাতক গ্রেফতার

আইন-আদালত ডেস্ক
  • Update Time : ১০:১৬:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
  • / ৪৬ Time View

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর আবাসিক হোটেল আনোয়ারা থেকে গত ১৪ জুলাই ১২ বছর বয়সের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই শিশুর পরিচয় এখনো শনাক্ত হয়নি। লাশ পরে আছে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে।

তবে এ ঘটনায় হওয়া হত্যা মামলা তদন্তে লোমহর্ষক তথ্য পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

হত্যায় জড়িত আল আমীন নামের এক ব্যক্তিকে গতকাল শুক্রবার গাজীপুরের টঙ্গী থানার ষ্টেশন রোড এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই।

পিবিআই তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, অজ্ঞাত ওই শিশু মা-বাবার সঙ্গে অভিমান করে বরিশাল থেকে ঢাকায় আসে। রাজধানীর কোন এক খাবার হোটেলে কাজ নেন। কিন্তু সেখানে বনিবনা না হওয়ায় কাজ ছেড়ে দেয়। বাড়িতে ফিরে যেতে আসেন কমলাপুর রেলস্টেশনে। তার কাছে কোনো টাকা না থাকায় তীব্র ক্ষুধা লাগলেও কিছু খেতে পারছিল না। এক দিন না খেয়ে থাকার পর রেলস্টেশনেই আল আমিন ও সাদ্দাম নামের দুই ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয় শিশুটির। তারা শিশুটিকে খাবার কিনে দেন।

নতুন জামা ও স্যান্ডেল কিনে দিয়ে কৌশলে আবাসিক হোটেল আনোয়ারাতে নিয়ে দুই দিন ধরে পাশবিক নির্যাতন করে হত্যা করে শিশুটিকে। পিবিআই তদন্তে নেমে গত শুক্রবার অভিযুক্ত আল আমীন নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে।

শনিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেয় আল আমীন। অপর আসামি সাদ্দাম এখনো পলাতক রয়েছে।

গ্রেফতার আল আমীন পিবিআইকে জানিয়েছে, গত ১২ জুলাই সকাল আনুমানিক ১০ টার দিকে কমলাপুর রেলস্টেশনে অজ্ঞাতনামা ওই শিশুর সঙ্গে পরিচয় হয় আল আমীন ও সাদ্দামের। শিশুটি তাদের কাছে জানতে চায় বরিশালের ট্রেন কখন ছাড়বে। আল আমিন জানায় বরিশালে ট্রেন যায়না। পরিচয়ের একপর্যায়ে শিশুটি তাদের জানায় সে গত ১ দিন যাবত কিছুই খায় নি। তখন আল-আমিন শিশুটিকে রেলস্টেশনের পাশ থেকে খাবার কিনে দেয় এবং জামা ও জুতা কিনে দেয়।

শিশুটিকে সারাদিন তাদের সঙ্গেই রাখে। সন্ধ্যার পরে শিশুটিকে আল-আমিন যাত্রাবাড়ী থানাধীন আনোয়ারা (আবাসিক) হোটেলের ২৬৫ নম্বর কক্ষে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে সাদ্দাম হোটেলে যায় এবং দুই জন পালাক্রমে শিশুটির সঙ্গে যৌন সংগম করে। এসময় অসুস্থ হয়ে পরে শিশুটি। পরবর্তীতে গত ১৩ জুলাই সকালে আল আমিন ও সাদ্দাম ফের শিশুটির সঙ্গে যৌন সংগম করতে চাইলে সে তীব্র বাধা দেয় এবং অসুস্থ বলে জানায়।

তখন আসামী আল-আমিন ও সাদ্দাম তাকে কোমরের বেল্ট দিয়ে পিটায়, একপর্যায়ে মাথা ও মুখে ঘুষি মারে। শিশুটি কে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

পিবিআই ঢাকা মেট্রো (দক্ষিণ) এর পুলিশ সুপার মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘পাশবিক নির্যাতন করে শিশুটিকে হত্যা করা হয়। গ্রেফতার আল আমীন আদালতে খুনের কথা স্বীকার করেছে।’

তিনি বলেন, হত্যার শিকার শিশুটির পরিচয় আমরা এখনো জানতে পারিনি। তার পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। তবে গ্রেফতার আল আমীন জানিয়েছে, শিশুটির বাড়ি বরিশালে।

জানা গেছে, যাত্রাবাড়ী থানায় হওয়া হত্যা মামলাটি গত ১৭ জুলাই পিবিআই এর শিডিউল ভুক্ত হয়। পিবিআই এর এসআই মো. কবির হোসেনকে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।

তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য, ভিডিও ফুটেজ ও অজ্ঞাতনামা আসামীর মোবাইল এর প্রযুক্তিগত সহায়তায় আসামীদেরকে সনাক্ত করা হয়। আসামী মো. আল-আমিনকে গাজীপুরের টঙ্গী থানার ষ্টেশন রোড এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

যাত্রাবাড়ীর আবাসিক হোটেলে শিশু হত্যার রহস্য উদঘাটন : ঘাতক গ্রেফতার

আইন-আদালত ডেস্ক
Update Time : ১০:১৬:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর আবাসিক হোটেল আনোয়ারা থেকে গত ১৪ জুলাই ১২ বছর বয়সের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই শিশুর পরিচয় এখনো শনাক্ত হয়নি। লাশ পরে আছে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে।

তবে এ ঘটনায় হওয়া হত্যা মামলা তদন্তে লোমহর্ষক তথ্য পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

হত্যায় জড়িত আল আমীন নামের এক ব্যক্তিকে গতকাল শুক্রবার গাজীপুরের টঙ্গী থানার ষ্টেশন রোড এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই।

পিবিআই তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, অজ্ঞাত ওই শিশু মা-বাবার সঙ্গে অভিমান করে বরিশাল থেকে ঢাকায় আসে। রাজধানীর কোন এক খাবার হোটেলে কাজ নেন। কিন্তু সেখানে বনিবনা না হওয়ায় কাজ ছেড়ে দেয়। বাড়িতে ফিরে যেতে আসেন কমলাপুর রেলস্টেশনে। তার কাছে কোনো টাকা না থাকায় তীব্র ক্ষুধা লাগলেও কিছু খেতে পারছিল না। এক দিন না খেয়ে থাকার পর রেলস্টেশনেই আল আমিন ও সাদ্দাম নামের দুই ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয় শিশুটির। তারা শিশুটিকে খাবার কিনে দেন।

নতুন জামা ও স্যান্ডেল কিনে দিয়ে কৌশলে আবাসিক হোটেল আনোয়ারাতে নিয়ে দুই দিন ধরে পাশবিক নির্যাতন করে হত্যা করে শিশুটিকে। পিবিআই তদন্তে নেমে গত শুক্রবার অভিযুক্ত আল আমীন নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে।

শনিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেয় আল আমীন। অপর আসামি সাদ্দাম এখনো পলাতক রয়েছে।

গ্রেফতার আল আমীন পিবিআইকে জানিয়েছে, গত ১২ জুলাই সকাল আনুমানিক ১০ টার দিকে কমলাপুর রেলস্টেশনে অজ্ঞাতনামা ওই শিশুর সঙ্গে পরিচয় হয় আল আমীন ও সাদ্দামের। শিশুটি তাদের কাছে জানতে চায় বরিশালের ট্রেন কখন ছাড়বে। আল আমিন জানায় বরিশালে ট্রেন যায়না। পরিচয়ের একপর্যায়ে শিশুটি তাদের জানায় সে গত ১ দিন যাবত কিছুই খায় নি। তখন আল-আমিন শিশুটিকে রেলস্টেশনের পাশ থেকে খাবার কিনে দেয় এবং জামা ও জুতা কিনে দেয়।

শিশুটিকে সারাদিন তাদের সঙ্গেই রাখে। সন্ধ্যার পরে শিশুটিকে আল-আমিন যাত্রাবাড়ী থানাধীন আনোয়ারা (আবাসিক) হোটেলের ২৬৫ নম্বর কক্ষে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে সাদ্দাম হোটেলে যায় এবং দুই জন পালাক্রমে শিশুটির সঙ্গে যৌন সংগম করে। এসময় অসুস্থ হয়ে পরে শিশুটি। পরবর্তীতে গত ১৩ জুলাই সকালে আল আমিন ও সাদ্দাম ফের শিশুটির সঙ্গে যৌন সংগম করতে চাইলে সে তীব্র বাধা দেয় এবং অসুস্থ বলে জানায়।

তখন আসামী আল-আমিন ও সাদ্দাম তাকে কোমরের বেল্ট দিয়ে পিটায়, একপর্যায়ে মাথা ও মুখে ঘুষি মারে। শিশুটি কে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

পিবিআই ঢাকা মেট্রো (দক্ষিণ) এর পুলিশ সুপার মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘পাশবিক নির্যাতন করে শিশুটিকে হত্যা করা হয়। গ্রেফতার আল আমীন আদালতে খুনের কথা স্বীকার করেছে।’

তিনি বলেন, হত্যার শিকার শিশুটির পরিচয় আমরা এখনো জানতে পারিনি। তার পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। তবে গ্রেফতার আল আমীন জানিয়েছে, শিশুটির বাড়ি বরিশালে।

জানা গেছে, যাত্রাবাড়ী থানায় হওয়া হত্যা মামলাটি গত ১৭ জুলাই পিবিআই এর শিডিউল ভুক্ত হয়। পিবিআই এর এসআই মো. কবির হোসেনকে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।

তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য, ভিডিও ফুটেজ ও অজ্ঞাতনামা আসামীর মোবাইল এর প্রযুক্তিগত সহায়তায় আসামীদেরকে সনাক্ত করা হয়। আসামী মো. আল-আমিনকে গাজীপুরের টঙ্গী থানার ষ্টেশন রোড এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।