জামায়াত আমীর
মালিক-শ্রমিক পরস্পরকে সম্মানের কোনো বিকল্প নেই

- Update Time : ০৪:০১:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
- / ১৬ Time View
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ শ্রমজীবী। এই ৭০ ভাগ মানুষকে উপেক্ষা করে কোনো সমাজ সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে না। শ্রমিকদের অমানবিক জীবনের অবসান ঘটাতে প্রয়োজন ইসলামের শাসনব্যবস্থা।
তিনি বলেন, সবার সমন্বয়ে, পারস্পরিক বোঝাপড়া, সম্মান ও ভালোবাসার মধ্য দিয়ে আমরা একটি টেকসই বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। কিন্তু আল্লাহর আইন ছাড়া সেই সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব নয়।
বৃহস্পতিবার (১ মে) আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর পল্টন মোড়ে এক শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সকাল ৯টায় কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শ্রমিক দিবসের অনুষ্ঠান শুরু হয়।
সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন। শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি সাবেক এমপি মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার প্রমুখ।
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা যদি সত্যিকারে অর্থে একটি টেকসই বাংলাদেশ গড়তে চাই, একটি শান্তির বাংলাদেশ গড়তে চায়, তাহলে পরস্পরকে সম্মান ও ভালোবাসা দিয়েই গড়ে তুলতে হবে। যেদিন মালিকরা মন থেকে শ্রমিকদের আদর ও সম্মান দেবে, আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন শ্রমিকরাও ষোলআনা উজার করে দিয়ে আপনাদের পাশে থাকবে। শ্রমিকরা যদি মনে করে মালিক আমাকে মানুষ মনে করে না, তাহলে সেও তার দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করবে না। আর শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে সমন্বয় করে পারস্পরিক সম্পর্ক ও ভালোবাসা গড়ে তোলাই বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের অন্যতম লক্ষ্যে।
আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে শ্রমজীবী মানুষদের স্মরণ করে তিনি বলেন, ৮ ঘণ্টা কর্মঘণ্টা হলেও শ্রমিকদের যে বেতন ভাতা দেওয়া হয় তা তাদের নুন আনতে পানতাও ফুরায় না। সে জন্য বাধ্য হয়ে তাদের আরেক জায়গায় আরও ৮ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। সে তো মেশিন নয়, সে একজন মানুষ। তারও অন্য মানুষের মতো শরীরে ক্লান্তি আসে! কিন্তু তার জীবনটা একটা অমানবিক, আমরা এই অমানবিক জীবনের অবসান ঘটাতে চাই এবং এই অমানবিক জীবনের অবসান তখনই ঘটবে যখন আমরা সত্যিকার অর্থে সবাই যখন মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করবো, সম্মান দেখাব।
কর্মস্থলে নারী শ্রমিকদের জন্য নামাজের জায়গার ব্যবস্থা করার জন্য মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, পুরুষদের জন্য নামাজের জায়গা থাকলেও তাদের জন্য নামাজের জায়গা রাখা হয় না। যেসব মহিলা নামাজ পড়তে চান তাদের জন্য ইবাদতের জায়গার ব্যবস্থা করে দিন।
শ্রমজীবী নারীদের উদ্দেশে জামায়াতে আমির বলেন, আমাদের প্রতিপক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়ায় যে জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের কাজ করতে দেবে না। ঘর থেকে বের হতে দেবে না। আজকে আমরা নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনারা আপনাদের যোগ্যতা ও পছন্দ অনুযায়ী কাজ করবেন। কর্মক্ষেত্রে আপনাদের কোনো মর্যাদা নেই, সম্মান নেই ও নিরাপত্তা নেই। আগামী দিনে আমরা আপনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো ইনশাআল্লাহ। নারী ও পুরুষ সবাই মিলে দেশের উন্নয়ন এবং স্থিতিশীলতায় গতিশীলতা কাজ করব। সোনার বাংলাদেশ গড়ার কাজ সেদিন থামবে যেদিন মানুষের ঘরে ঘরে সুখ শান্তি ও মর্যাদা পৌঁছে যাবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার পর থেকে রাজধানীর বাড্ডা, মিরপুর, উত্তরা, মোহাম্মদপুর, যাত্রাবাড়ী, মগবাজার, পুরান ঢাকা থেকে নেতাকর্মীরা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে ছোট ছোট মিছিল আকারে সমাবেশস্থলে জড়ো হন। তারা ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টারসহ স্লোগানে স্লোগানে মিছিলসহ সম্মেলনস্থলে আসেন। সমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগেই সাড়ে ৮টার দিকেই পুরানা পল্টনসহ আশপাশের সড়কগুলোও কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। কেউ সবুজ, কেউ হলুদ, লালসহ বিভিন্ন রঙের ক্যাপ পরেছে।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কাকরাইল মোড় থেকে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী উত্তরের সভাপতি মুহিব্বুল্লাহ, ফেডারেশনের উপদেষ্টা নাজিমুদ্দিন মোল্লা, ডা.ফখরুদ্দিন মানিক, আতাউর রহমান সরকার, ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মুজিবুর রহমান ভুইয়া, মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি এ এইচ এম আতিকুর রহমান নেতৃত্বে একটি বিশাল মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেয়।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়