মাদকের বিস্তার রোধে শেকৃবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
- Update Time : ০৫:৪৮:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ৫৯ Time View
রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) মাদকের বিস্তার রোধ এবং প্রতিরোধের লক্ষ্যে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন এবং প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুর ১ টায় “সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ” ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে উক্ত মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষদ ও বর্ষের শিক্ষার্থীও অংশগ্রহণ করেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, মাদক নিয়ন্ত্রণ ও নিরাময়ে বর্তমানে সুস্পষ্ট নীতিমালা, কার্যকর শাস্তির বিধান এবং নিয়মিত তদারকির ঘাটতি রয়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি অসাধু চক্র ক্যাম্পাসে মাদক বিস্তারে সক্রিয় হয়ে উঠেছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির জন্য চরম হুমকি।
প্রশাসন বরাবর দেওয়া স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কয়েকটি জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান। দাবিগুলোর মধ্যে শাস্তির বিধিমালা প্রণয়ন ও সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে ছাত্রত্ব বাতিলসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর, নিয়মিত ও আকস্মিক সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও স্থানে ডোপ টেস্ট চালু, মাদকবিরোধী টাস্কফোর্স গঠন এবং ক্যাম্পাসে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা ইত্যাদি দাবিসমূহ রয়েছে ।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও স্নাতক সনদ প্রদানের আগে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় জোরদার এবং ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের দাবিও জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থী আরাফাত হোসেইন বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো মাদকের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। বিকালে আমাদের সেন্ট্রাল ফিল্ডে সহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় বহিরাগতদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। মাদক বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞান চর্চার পরিবেশকে ব্যাহত করছে। মাদক শুধুমাত্র একজন শিক্ষার্থীকে নয় পুরো জাতিকে ধ্বংস করে দিতে পারে।”
তিনি তার বক্তব্যে মাদকের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণেরও আহ্বান জানান তিনি।
মানববন্ধনে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দের বক্তব্যে মাদকের বিস্তার রোধে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। পর্যাপ্ত মনিটরিংয়ের অভাব, মাদক সেবী ধরা পড়লে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে প্রশাসনের সমালোচনা করেন।
বিশ্ববিদ্যলয়ের জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বিএম আলমগীর কবীর বলেন, “শেকৃবিতে অধ্যয়নরত প্রত্যেকটা শিক্ষার্থীই মেধাবী। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে তারা এখানে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তবে এই মেধাবী শিক্ষার্থীরাই সঙ্গদোষে বিপথে চলে যায়। দুঃখের বিষয় হলো প্রশাসন এই বিষয়ে কোনো নজর দেয়না।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা যখনই কিছু বলি তখন প্রশাসন লোক দেখানো কিছু করে। তারা ‘ডাক্তার আসিবার পূর্বে রোগী মারা গেলো’ নীতি ফলো করেন।”
বিশ্ববিদ্যলয়ের অদূরে অবস্থিত বিহারী ক্যাম্প থেকে মাদকের সরবরাহ হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা শুনেছি প্রতিটা হলের প্রতি ফ্লোরই মাদকের আখড়া। এমনকি মেয়েদের হলগুলোও এই বাইরে নয়। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ছাত্রলীগের নেত্রীরা হলগুলোতে মাদক সাপ্লাই দিত।”
জাতীয় ছাত্রশক্তির কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম পাভেল বলেন, “জুলাইয়ের সম্মুখ সারির যোদ্ধা আমাদের হাদি ভাই বলে গেছেন একটি দেশকে ধ্বংস করতে হলে তার দুইটা জিনিসকে প্রথমে ধ্বংস করতে হয়। একটি তার যুবসমাজ এবং আরেকটি শিক্ষা। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিদ্রিষ্ট একটি গোষ্ঠী ক্ষমতাবান হওয়ার জন্যে মাদক সাপ্লাই করে থাকে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে বারবার অবগত করার পরেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।”
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মেহেদী ইসলাম নাঈম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদক সেবীদের সাথে বাইরের মাদক সাপ্লাইয়ারদের একটা সম্পর্ক থাকে। এগুলো তো ওপেন সিক্রেট। কিন্তু এগুলো বারবার কেন যেন প্রশাসন বিচারের আওতায় আনেনা।”
লোক দেখানো খেলা নয় বরং মাদকের বিস্তারের নজিরবিহীন শাস্তি এবং মাদকের সাথে জড়িতরা যেন উচিত বিচারের আওতায় আসে সেই আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।


























































































































































































