মহাদেবপুরে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে উদ্যোগ নেই
- Update Time : ০৭:৫৮:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
- / ৭৫ Time View
উত্তরাঞ্চলের শষ্যভান্ডার খ্যাত নওগাঁর মহাদেবপুরে চলতি শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই অবৈধ মাটি ব্যবসায়ীদের তান্ডব শুরু হয়েছে। তাদের নিয়োগ করা এজেন্টরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে ফসলী জমির মালিকদের নতুন নতুন পুকুর খননে উদ্বুদ্ধ করছে। ধান উৎপাদনের খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় মাছ চাষে বহুগুণে লাখ। অল্প সময়েই কাঁচা টাকা ঘরে আসার হাতছানীতে সহজ সরল মানুষেরা আবাদী জমি ও ভিটেমাটি নষ্ট করে পুকুর খনন করছেন। গত পাঁচ বছরে এখানে চারশ’র বেশি নতুন পুকুর খনন করা হয়েছে, যেগুলোর খতিয়ানে রকমের ঘরে এখনও উল্লেখ রয়েছে ধানী হিসেবে। একটি বৃহৎ স্বার্থান্বেসী মহল দেশে ফিবছর চাল আমদানী নিশ্চিত করতে আমাদের ফসলী জমি হ্রাস করার এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ১৮৮২ সালের ইজমেন্ট রাইট এ্যাক্ট আইনের ৪ নং ধারায় বলা হয়েছে, ‘‘বাংলাদেশের যে স্থানে কৃষি জমি রহিয়াছে, তাহা এই আইনের মাধ্যমে সুরক্ষা করিতে হইবে এবং কোনভাবেই তাহার ব্যবহারভিত্তিক শ্রেণি পরিবর্তন করা যাইবেনা। কৃষি জমি এক ফসলী বা একাধিক ফসলী যাহাই হোক না কেন তাহা কৃষি জমি হিসাবেই ব্যবহার করিতে হইবে।’’ এই আইনের ১২ নং ধারায় বলা হয়েছে, ‘উক্ত বিধান অমান্যে রয়েছে অনধিক পাঁচ বছর কারাদন্ড, বা অন্যুন এক বছর কারাদন্ড, বা অর্থদন্ড, বা উভয় প্রকারের দন্ড। তবে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ভূমি কর্মকর্তা বরাবর আবেদনের মাধ্যমে উক্ত ভূমির ব্যবহারগত শ্রেণি পরিবর্তনের সুযোগ রয়েছে।’
বিদ্যমান আইন অমান্য করে ফসলী জমির মাটি কেটে জমির ব্যবহারভিত্তিক শ্রেণি পরিবর্তন করা হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন অনুমতি না নিয়েই। এছাড়া ১৯৫২ সালের ‘দ্য বিল্ডিং কন্সট্রাকশন এ্যাক্ট’ এর ৩ ধারা অনুসারে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি ছাড়া কোন পুকুর খনন বা পূণ:খনন করা যাবে না। বিদ্যমান আইনটির প্রয়োগ নেই বললেই চলে। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন মাঝে মাঝে এলাকায় পুকুর খনন বন্ধ করলেও অনৈতিক সুবিধার মাধ্যমে আবার সেসব পুকুরের খননকাজ সম্পন্ন করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
তবে এই অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে চাচ্ছে প্রশাসন। স্থানীয়রা জানান, মহাদেবপুর উপজেলার রাইগাঁ ইউনিয়নের রঘুনাথপুরে মহাদেবপুর-মাতাজীহাট পাকা সড়ক সংলগ্নস্থানে ভিটেমাটি, গাছগাছালী কেটে বিনষ্ট করে পুকুর খনন হচ্ছে গত কয়েকদিন ধরে। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সরেজমিনে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, দুইটি ভেক্যু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে অসংখ্য ড্রাম ট্রাকযোগে পরিবহণ করা হচ্ছে। এতে কয়েক কিলোমিটার সড়কে কাদামাটি পড়ে পিচ্ছিল হয়ে আছে। মাটি কাটার কাজে নিয়োজিত সেখানে উপস্থিত একজন জানালেন, ওইগ্রামের আলাউদ্দিন আলী পুকুরটি খনন করছেন। এজন্য কারো অনুমতি নেননি।
তিনি নিজেকে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির আত্মীয় ও ইউপি মেম্বারের ছেলে বলে দম্ভোক্তিও করেন।বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আরিফুজ্জামানকে সাথে সাথেই জানানো হলে তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান। রাইগাঁ ইউনিয়ন উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা কল্লোল হোসেন জানান, সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর নির্দেশে রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পান। তিনি পুকুরটির খননকাজ বন্ধের মৌখিক নির্দেশও দেন। পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষ এব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও জানান তিনি।







































































































































































































