ঢাকা ০৫:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মগবাজারে শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতার ৪

রাজধানী ডেস্ক
  • Update Time : ০৭:৫৮:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
  • / ৯২ Time View

রাজধানীর মগবাজারে গ্রীনওয়ের গলিতে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে এক শিক্ষার্থীর ব্যাগ, মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় জড়িত তিন ছিনতাইকারীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে  ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সোহেল রানা (৩৬), মো. হৃদয় (২৭) ও মো. শামিম (২৪) সরাসরি ছিনতাইয়ে অংশ নিয়েছিল, আর মকবুল ছিনতাইয়ের মালামাল ক্রেতা।

পুলিশ বলছে, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা পেশাদার ছিনতাইকারী। এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া ব্যাগ ও টাকা উদ্ধারসহ ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত দুটি চাপাতি, মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড গোয়েন্দা-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।

সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ১৮ মে সকাল ৫টা ২২ মিনিটের দিকে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে মগবাজার গ্রীন ওয়ে গলি দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন এক শিক্ষার্থী। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি সাদা রঙের মোটরসাইকেলে বসে থাকা তিন যুবকের মধ্যে দুজন ওই পথচারী যুবকের কাঁধে থাকা ব্যাগ ও অন্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। ২৫ মে এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, সোহেলের বাসা কেরাণীগঞ্জে, আর বাকিদের মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকায়। গ্রেপ্তার তিনজনই পেশাদার ছিনতাইকারী, তারা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ছিনতাই করতো। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। আর মকবুল ছিনতাইয়ের মালামালের ক্রেতা।

এর ধারাবাহিকতায় ঘটনার ১০ দিন পর জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার ও ছিনতাই হওয়া মালামাল উদ্ধারের কথা জানাল ডিবি।

বাইক থেকে দুইজন দুটি চাপাতি নিয়ে নেমে ওই তরুণকে একটি বাড়ির ফটকের সামনে চেপে ধরে। এর মধ্যে চাপাতি দিয়ে আঘাত করতেও দেখা যায় তাদেরকে। একপর্যায়ে ওই তরুণের ব্যাগটি কেড়ে নিয়ে দুই ছিনতাইকারী বাইকে উঠে পড়ে।

এরপর ভুক্তভোগী বাইকের সামনে এসে চাকা ধরে অনুরোধ করতে দেখা গেলে চাপাতি হাতে দুইজন আবার বাইক থেকে নেমে তাকে আঘাত করে সরিয়ে দেয়।

এরমধ্যে বাইকটি টান দিলে হামলাকারী একজন আবারও ভুক্তভোগীর দিকে চাপাতি হাতে তেড়ে যায়।

মাত্র এক মিনিটের মধ্যে ভুক্তভোগীর ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়া তিনজন হেলমেট পরা থাকায় ভিডিওতে কারো চেহারা দেখা যায়নি।

ভুক্তভোগীর নাম মো. আব্দুল্লাহ। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বারে।

ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব আব্দুল্লাহ তখন চলে যাওয়া বাইকের দিকে অপলক তাকিয়ে ছিলেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আব্দুল্লাহ বলেন, কোনো কথা না বলেই ওরা এসে চাপাতি ঘুরিয়ে আমার ব্যাগ, ব্যাগে থাকা চৌদ্দ হাজার টাকা, আমার মানিব্যাগ ও মোবাইলফোন নিয়ে যায়। আমি অনেক অনুরোধ করেছিলাম অন্তত ব্যাগটা যেন আমাকে দিয়ে যায়। কোনো কাজ হয়নি। কথা না বলে শুধু তারা চাপাতি দিয়ে কোপ দিতে চেয়েছে। পাঁচটা কোপ আমার শরীরের বিভিন্ন অংশে লেগেছে। না কাটলেও জখম হয়েছে অনেক।

তিনি আরও বলেন, আমার ব্যাগে অফিসের কিছু টাকাসহ আমার পরীক্ষা ও কলেজের ফির জন্য মোট চৌদ্দ হাজার টাকা ছিল। এজন্য আমি শেষ মুহূর্তে তাদের বাইকের চাকা আটকে ধরে অনুরোধ করেছিলাম, যেন আমার ব্যাগটা অন্তত দিয়ে যায়। তারা কোনো অনুরোধই শোনেনি। আমার কথার জবাবে তারা চাপাতি চালিয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

মগবাজারে শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতার ৪

রাজধানী ডেস্ক
Update Time : ০৭:৫৮:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

রাজধানীর মগবাজারে গ্রীনওয়ের গলিতে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে এক শিক্ষার্থীর ব্যাগ, মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় জড়িত তিন ছিনতাইকারীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে  ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সোহেল রানা (৩৬), মো. হৃদয় (২৭) ও মো. শামিম (২৪) সরাসরি ছিনতাইয়ে অংশ নিয়েছিল, আর মকবুল ছিনতাইয়ের মালামাল ক্রেতা।

পুলিশ বলছে, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা পেশাদার ছিনতাইকারী। এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া ব্যাগ ও টাকা উদ্ধারসহ ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত দুটি চাপাতি, মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড গোয়েন্দা-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।

সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ১৮ মে সকাল ৫টা ২২ মিনিটের দিকে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে মগবাজার গ্রীন ওয়ে গলি দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন এক শিক্ষার্থী। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি সাদা রঙের মোটরসাইকেলে বসে থাকা তিন যুবকের মধ্যে দুজন ওই পথচারী যুবকের কাঁধে থাকা ব্যাগ ও অন্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। ২৫ মে এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, সোহেলের বাসা কেরাণীগঞ্জে, আর বাকিদের মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকায়। গ্রেপ্তার তিনজনই পেশাদার ছিনতাইকারী, তারা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ছিনতাই করতো। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। আর মকবুল ছিনতাইয়ের মালামালের ক্রেতা।

এর ধারাবাহিকতায় ঘটনার ১০ দিন পর জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার ও ছিনতাই হওয়া মালামাল উদ্ধারের কথা জানাল ডিবি।

বাইক থেকে দুইজন দুটি চাপাতি নিয়ে নেমে ওই তরুণকে একটি বাড়ির ফটকের সামনে চেপে ধরে। এর মধ্যে চাপাতি দিয়ে আঘাত করতেও দেখা যায় তাদেরকে। একপর্যায়ে ওই তরুণের ব্যাগটি কেড়ে নিয়ে দুই ছিনতাইকারী বাইকে উঠে পড়ে।

এরপর ভুক্তভোগী বাইকের সামনে এসে চাকা ধরে অনুরোধ করতে দেখা গেলে চাপাতি হাতে দুইজন আবার বাইক থেকে নেমে তাকে আঘাত করে সরিয়ে দেয়।

এরমধ্যে বাইকটি টান দিলে হামলাকারী একজন আবারও ভুক্তভোগীর দিকে চাপাতি হাতে তেড়ে যায়।

মাত্র এক মিনিটের মধ্যে ভুক্তভোগীর ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়া তিনজন হেলমেট পরা থাকায় ভিডিওতে কারো চেহারা দেখা যায়নি।

ভুক্তভোগীর নাম মো. আব্দুল্লাহ। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বারে।

ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব আব্দুল্লাহ তখন চলে যাওয়া বাইকের দিকে অপলক তাকিয়ে ছিলেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আব্দুল্লাহ বলেন, কোনো কথা না বলেই ওরা এসে চাপাতি ঘুরিয়ে আমার ব্যাগ, ব্যাগে থাকা চৌদ্দ হাজার টাকা, আমার মানিব্যাগ ও মোবাইলফোন নিয়ে যায়। আমি অনেক অনুরোধ করেছিলাম অন্তত ব্যাগটা যেন আমাকে দিয়ে যায়। কোনো কাজ হয়নি। কথা না বলে শুধু তারা চাপাতি দিয়ে কোপ দিতে চেয়েছে। পাঁচটা কোপ আমার শরীরের বিভিন্ন অংশে লেগেছে। না কাটলেও জখম হয়েছে অনেক।

তিনি আরও বলেন, আমার ব্যাগে অফিসের কিছু টাকাসহ আমার পরীক্ষা ও কলেজের ফির জন্য মোট চৌদ্দ হাজার টাকা ছিল। এজন্য আমি শেষ মুহূর্তে তাদের বাইকের চাকা আটকে ধরে অনুরোধ করেছিলাম, যেন আমার ব্যাগটা অন্তত দিয়ে যায়। তারা কোনো অনুরোধই শোনেনি। আমার কথার জবাবে তারা চাপাতি চালিয়েছে।