ঢাকা ০২:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘ভেঙ্গেছিস কলসীর কোনা তাই বলে কি প্রেম দেবো না’

নওরোজ রিপোর্ট
  • Update Time : ১০:২২:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৪
  • / ২৯ Time View

আদালতে বাড়তি সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে-এমন আশায় স্বৈরাচার খুনি হাসিনার দুর্নীতিবাজ দোসররা আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের পরিবর্তে বিএনপিপন্থী আইনজীবী নিয়োগ দিচ্ছে।

আদালতে সুফল লাভের আশায় বহু আওয়ামী ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, আমলা, প্রতিষ্ঠান মালিক বেশি অর্থের বিনিময়ে বিএনপির নামকরা আইনজীবীদের দারস্থ হয়েছেন। অধিক টাকার লোভে কেউ কেউ পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের বাঁচাতে এই অফার লুফেও নিয়েছেন। যা গত ১৫ বছরে আওয়ামী আইনজীবীরা করেননি, কিন্তু বিএনপিপন্থী কতিপয় আইনজীবীরা তার নজির স্থাপন করেছেন।

শেখ হাসিনার ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের সময় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা পেশাজীবী হিসেবে আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা রাজনৈতিক কমিটমেন্টের কারণেই কোন আওয়ামী লীগ আইনজীবী নিতো না। অর্থের চেয়েও তাদের কাছে দল বড় ছিল। অথচ পেশাদারিত্বের অজুহাতে বিএনপির আইনজীবীদের কেউ কেউ টাকার লোভে দেশে গণহত্যা করে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার দোসরদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা আইনি লড়াইয়ে নামার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন।

২০১৮ সালের ২৩ জুলাই কুষ্টিয়া আদালতে দায়েরকৃত মামলার জামিন নিতে গিয়ে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার নির্ভিক অকুতোভয় সাহসী সম্পাদক মাহমুদুর রহমান পৈচাশিক হামলার শিকার হন। কুষ্টিয়া কোর্ট চত্বরে তাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। তার রক্তাত মুখাবয়বের দৃশ্য বহুকাল মানুষের মনে থাকবে। মাহমুদুর রহমানকে যখন রক্তাক্ত করা হয়, তখন পাশে দাঁড়িয়ে ছাত্রলীগের অট্রহাসী আর বাহাদুরীর দৃশ্য উপভোগ করেন আওয়ামী লীগের শতাধিক আইনজীবী ও অর্ধশতাধিক পেটুয়া পুলিশ সদস্য।

২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর কারাবন্দি ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেনের উপর আক্রমন করা হয় রংপুর আদালত চত্বরে। ছাত্রলীগ-যুবলীগ সেদিন হামলে পড়েছিল মইনুল হোসেনের উপর। আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেনকে রক্ষায় এগিয়ে যাননি। কারণ, রাজনৈতিক কমিটমেন্ট।

আওয়ামী আইনজীবীদের পেশাদারিত্ব ন্যায়-অন্যায় ও মানবিকতার চেয়ে রাজনৈতিক কমিটমেন্টে অনেক দৃঢ়চেতা। মানবিকতার প্রশ্নে পেশাগত দায়িত্ব পালনে আইনি সহায়তা পাওয়া সাংবিধানিক অধিকার অজুহাত দেখিয়ে আওয়ামী আইনজীবীরা টাকা পয়সা নিয়ে মাহমুদুর রহমান বা ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেনের পক্ষে মামলায় লড়তে পারতেন। কিন্তু তারা সেটি করেননি। কারণ পেশায় আইনজীবী হলেও আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার প্রতি তাদের রাজনৈতিক কমিটমেন্ট ছিল অত্যন্ত প্রবল। পক্ষান্তরে স্বৈরাচারের দোসর সময় টিভি থেকে বরখাস্ত সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী আহমেদ জোবায়েরের পক্ষে আদালতে দাড়িয়েছেন সুপ্রীম কোর্ট বারের সভাপতি ও বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।

আপীল বিভাগের চেম্বার জাষ্টিস মো: আশরাফুল ইসলামের আদালতে তিনি জোবায়েরের পক্ষে লিভ দ্য আপিলের শুনানী করেন। এছাড়া এয়ারপোর্ট থেকে গ্রেফতার ফ্যাসিবাদের দোসর ৭১ টিভির বার্তা সম্পাদক শাকিল আহমেদ এবং হাসিনার ঘনিষ্ট সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত ফারজানা রূপার পক্ষে মামলায় লড়াই করছেন একজন জাতীয়বাদী ঘরানার আইনজীবী। পেশাদারিত্বের আবরণে তাদের এই আইনী সহযোগিতা মূলতঃ ফ্যাসিবাদের পক্ষেই কাজ করা হবে বলে মনে করছেন অনেক আইনজীবী। অথচ বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে যখন একের পর মিথ্যা বানোয়াট হাস্যকর মামলা দিয়ে শেখ হাসিনা বিচারিক হয়রানি করছিলেন, তখনও পেশাদারিত্ব নিয়ে একজন আওয়ামীপন্থী আইনজীবীকে পাওয়া যায়নি তাদের পক্ষে ওকালতি করতে। এর নামই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ।

Please Share This Post in Your Social Media

‘ভেঙ্গেছিস কলসীর কোনা তাই বলে কি প্রেম দেবো না’

নওরোজ রিপোর্ট
Update Time : ১০:২২:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৪

আদালতে বাড়তি সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে-এমন আশায় স্বৈরাচার খুনি হাসিনার দুর্নীতিবাজ দোসররা আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের পরিবর্তে বিএনপিপন্থী আইনজীবী নিয়োগ দিচ্ছে।

আদালতে সুফল লাভের আশায় বহু আওয়ামী ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, আমলা, প্রতিষ্ঠান মালিক বেশি অর্থের বিনিময়ে বিএনপির নামকরা আইনজীবীদের দারস্থ হয়েছেন। অধিক টাকার লোভে কেউ কেউ পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের বাঁচাতে এই অফার লুফেও নিয়েছেন। যা গত ১৫ বছরে আওয়ামী আইনজীবীরা করেননি, কিন্তু বিএনপিপন্থী কতিপয় আইনজীবীরা তার নজির স্থাপন করেছেন।

শেখ হাসিনার ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের সময় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা পেশাজীবী হিসেবে আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা রাজনৈতিক কমিটমেন্টের কারণেই কোন আওয়ামী লীগ আইনজীবী নিতো না। অর্থের চেয়েও তাদের কাছে দল বড় ছিল। অথচ পেশাদারিত্বের অজুহাতে বিএনপির আইনজীবীদের কেউ কেউ টাকার লোভে দেশে গণহত্যা করে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার দোসরদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা আইনি লড়াইয়ে নামার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন।

২০১৮ সালের ২৩ জুলাই কুষ্টিয়া আদালতে দায়েরকৃত মামলার জামিন নিতে গিয়ে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার নির্ভিক অকুতোভয় সাহসী সম্পাদক মাহমুদুর রহমান পৈচাশিক হামলার শিকার হন। কুষ্টিয়া কোর্ট চত্বরে তাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। তার রক্তাত মুখাবয়বের দৃশ্য বহুকাল মানুষের মনে থাকবে। মাহমুদুর রহমানকে যখন রক্তাক্ত করা হয়, তখন পাশে দাঁড়িয়ে ছাত্রলীগের অট্রহাসী আর বাহাদুরীর দৃশ্য উপভোগ করেন আওয়ামী লীগের শতাধিক আইনজীবী ও অর্ধশতাধিক পেটুয়া পুলিশ সদস্য।

২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর কারাবন্দি ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেনের উপর আক্রমন করা হয় রংপুর আদালত চত্বরে। ছাত্রলীগ-যুবলীগ সেদিন হামলে পড়েছিল মইনুল হোসেনের উপর। আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেনকে রক্ষায় এগিয়ে যাননি। কারণ, রাজনৈতিক কমিটমেন্ট।

আওয়ামী আইনজীবীদের পেশাদারিত্ব ন্যায়-অন্যায় ও মানবিকতার চেয়ে রাজনৈতিক কমিটমেন্টে অনেক দৃঢ়চেতা। মানবিকতার প্রশ্নে পেশাগত দায়িত্ব পালনে আইনি সহায়তা পাওয়া সাংবিধানিক অধিকার অজুহাত দেখিয়ে আওয়ামী আইনজীবীরা টাকা পয়সা নিয়ে মাহমুদুর রহমান বা ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেনের পক্ষে মামলায় লড়তে পারতেন। কিন্তু তারা সেটি করেননি। কারণ পেশায় আইনজীবী হলেও আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার প্রতি তাদের রাজনৈতিক কমিটমেন্ট ছিল অত্যন্ত প্রবল। পক্ষান্তরে স্বৈরাচারের দোসর সময় টিভি থেকে বরখাস্ত সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী আহমেদ জোবায়েরের পক্ষে আদালতে দাড়িয়েছেন সুপ্রীম কোর্ট বারের সভাপতি ও বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।

আপীল বিভাগের চেম্বার জাষ্টিস মো: আশরাফুল ইসলামের আদালতে তিনি জোবায়েরের পক্ষে লিভ দ্য আপিলের শুনানী করেন। এছাড়া এয়ারপোর্ট থেকে গ্রেফতার ফ্যাসিবাদের দোসর ৭১ টিভির বার্তা সম্পাদক শাকিল আহমেদ এবং হাসিনার ঘনিষ্ট সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত ফারজানা রূপার পক্ষে মামলায় লড়াই করছেন একজন জাতীয়বাদী ঘরানার আইনজীবী। পেশাদারিত্বের আবরণে তাদের এই আইনী সহযোগিতা মূলতঃ ফ্যাসিবাদের পক্ষেই কাজ করা হবে বলে মনে করছেন অনেক আইনজীবী। অথচ বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে যখন একের পর মিথ্যা বানোয়াট হাস্যকর মামলা দিয়ে শেখ হাসিনা বিচারিক হয়রানি করছিলেন, তখনও পেশাদারিত্ব নিয়ে একজন আওয়ামীপন্থী আইনজীবীকে পাওয়া যায়নি তাদের পক্ষে ওকালতি করতে। এর নামই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ।