ঢাকা ১০:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভূমিকম্পে কোথাও আটকা পড়লে যা করবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক
  • Update Time : ০৯:৫৭:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫
  • / ২৬ Time View

ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে কয়েক সেকেন্ডের এই ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত শিশুসহ পাঁচজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া রাজধানীসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় বিল্ডিং ধসে পড়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ডে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদী। এর মাত্রা ছিল ৫.৭ রিখটার স্কেল। এটি মধ্যম মাত্রার ভূমিকম্প।

এদিকে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিস) বলছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির তীব্রতা ছিল ৫ দশমিক ৫। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল নরসিংদী।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বহুদিন ধরেই সতর্ক করে আসছেন, বাংলাদেশ যে কোনো সময় বড় মাত্রার ভূমিকম্পের সম্মুখীন হতে পারে।

ভূমিকম্প যে কোনো সময় হতে পারে এবং আগেভাগে সঠিকভাবে অনুমান করা প্রায় অসম্ভব। তাই প্রয়োজন আগে থেকেই সচেতনতা ও প্রস্তুতি নেওয়া। আর যদি ভূমিকম্পের পর ধ্বংসাবশেষে আটকে পড়েন, তাহলে আরও বেশি সতর্কতার সঙ্গে প্রতিটি পদক্ষেপ নিতে হবে। চলুন জেনে নিই, ভূমিকম্পে কোথাও আটকা পড়লে কী কী করবেন-

১. শান্ত থাকুন এবং শব্দ করে অবস্থান জানান

ভয় না পেয়ে শান্ত থাকুন এবং জরুরি উদ্ধারকারী দলের জন্য অপেক্ষা করুন। তাদের কাছে নিজের অবস্থান জানানোর চেষ্টা করুন। পাইপ বা দেয়ালে টোকা দিন, যাতে উদ্ধারকারীরা আপনাকে সহজে খুঁজে পেতে পারে। সম্ভব হলে বাঁশি ব্যবহার করে শব্দ করুন, এতে বাইরে সংকেত পৌঁছাতে সুবিধা হবে।

২. চিৎকার কম করুন

অযথা চিৎকার করা থেকে বিরত থাকুন। এতে আপনার শ্বাসকষ্ট ও শক্তির অপচয় হতে পারে। তাই শুধু শেষ উপায় হিসেবে চিৎকার করুন, যখন অন্য কোনোভাবে সংকেত দেওয়ার সুযোগ না থাকে।

৩. বেশি নড়াচড়া না করা

ধ্বংসস্তূপ বা ভাঙা দেয়ালের নিচে চাপা পড়লে অতি নড়াচড়া থেকে বিরত থাকুন। এতে ধ্বংসাবশেষ সরে গিয়ে আরও আঘাত বা ক্ষতির ঝুঁকি বাড়তে পারে। শান্ত থেকে শরীর যতটা সম্ভব স্থির রাখাই সবচেয়ে নিরাপদ।

৪. মুখ ঢেকে রাখুন

ধুলাবালি ও ক্ষতিকর কণা যাতে শ্বাসতন্ত্রে প্রবেশ না করে, সে জন্য কাপড়, রুমাল বা স্কার্ফ দিয়ে মুখ ও নাক ভালোভাবে ঢেকে রাখুন।

ভূমিকম্পের পরে করণীয়

ভূমিকম্পের পরে যদি ঘর খুব ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সতর্কভাবে ঘরে ফিরে যান। গ্যাস লাইন লিক হয়েছে কি না নিশ্চিত না হলে চুলা ব্যবহার করবেন না এবং সতর্কবার্তা শুনে আরও ভূমিকম্পের ঝুঁকি আছে কিনা যাচাই করুন। ধ্বংসাবশেষের ওপর খালি পায়ে বা পাতলা জুতা পরে হাঁটবেন না। বাড়ি যদি ক্ষতিগ্রস্ত বা নিরাপদ না হয়, সেখানে অবস্থান করবেন না। মোমবাতির পরিবর্তে ফ্ল্যাশলাইট ব্যবহার করুন এবং বৈদ্যুতিক সুইচ অন করার আগে বিদ্যুৎ অফিসে ফোন করে নিশ্চিত হোন, কারণ বিদ্যুৎ সংযোগে বিস্ফোরণের ঝুঁকি থাকতে পারে। সর্বশেষে, আপনার প্রিয়জনকে জানান যে আপনি নিরাপদে আছেন।

সূত্র : বিবিসি বাংলা, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর

Please Share This Post in Your Social Media

ভূমিকম্পে কোথাও আটকা পড়লে যা করবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক
Update Time : ০৯:৫৭:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে কয়েক সেকেন্ডের এই ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত শিশুসহ পাঁচজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া রাজধানীসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় বিল্ডিং ধসে পড়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ডে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদী। এর মাত্রা ছিল ৫.৭ রিখটার স্কেল। এটি মধ্যম মাত্রার ভূমিকম্প।

এদিকে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিস) বলছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির তীব্রতা ছিল ৫ দশমিক ৫। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল নরসিংদী।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বহুদিন ধরেই সতর্ক করে আসছেন, বাংলাদেশ যে কোনো সময় বড় মাত্রার ভূমিকম্পের সম্মুখীন হতে পারে।

ভূমিকম্প যে কোনো সময় হতে পারে এবং আগেভাগে সঠিকভাবে অনুমান করা প্রায় অসম্ভব। তাই প্রয়োজন আগে থেকেই সচেতনতা ও প্রস্তুতি নেওয়া। আর যদি ভূমিকম্পের পর ধ্বংসাবশেষে আটকে পড়েন, তাহলে আরও বেশি সতর্কতার সঙ্গে প্রতিটি পদক্ষেপ নিতে হবে। চলুন জেনে নিই, ভূমিকম্পে কোথাও আটকা পড়লে কী কী করবেন-

১. শান্ত থাকুন এবং শব্দ করে অবস্থান জানান

ভয় না পেয়ে শান্ত থাকুন এবং জরুরি উদ্ধারকারী দলের জন্য অপেক্ষা করুন। তাদের কাছে নিজের অবস্থান জানানোর চেষ্টা করুন। পাইপ বা দেয়ালে টোকা দিন, যাতে উদ্ধারকারীরা আপনাকে সহজে খুঁজে পেতে পারে। সম্ভব হলে বাঁশি ব্যবহার করে শব্দ করুন, এতে বাইরে সংকেত পৌঁছাতে সুবিধা হবে।

২. চিৎকার কম করুন

অযথা চিৎকার করা থেকে বিরত থাকুন। এতে আপনার শ্বাসকষ্ট ও শক্তির অপচয় হতে পারে। তাই শুধু শেষ উপায় হিসেবে চিৎকার করুন, যখন অন্য কোনোভাবে সংকেত দেওয়ার সুযোগ না থাকে।

৩. বেশি নড়াচড়া না করা

ধ্বংসস্তূপ বা ভাঙা দেয়ালের নিচে চাপা পড়লে অতি নড়াচড়া থেকে বিরত থাকুন। এতে ধ্বংসাবশেষ সরে গিয়ে আরও আঘাত বা ক্ষতির ঝুঁকি বাড়তে পারে। শান্ত থেকে শরীর যতটা সম্ভব স্থির রাখাই সবচেয়ে নিরাপদ।

৪. মুখ ঢেকে রাখুন

ধুলাবালি ও ক্ষতিকর কণা যাতে শ্বাসতন্ত্রে প্রবেশ না করে, সে জন্য কাপড়, রুমাল বা স্কার্ফ দিয়ে মুখ ও নাক ভালোভাবে ঢেকে রাখুন।

ভূমিকম্পের পরে করণীয়

ভূমিকম্পের পরে যদি ঘর খুব ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সতর্কভাবে ঘরে ফিরে যান। গ্যাস লাইন লিক হয়েছে কি না নিশ্চিত না হলে চুলা ব্যবহার করবেন না এবং সতর্কবার্তা শুনে আরও ভূমিকম্পের ঝুঁকি আছে কিনা যাচাই করুন। ধ্বংসাবশেষের ওপর খালি পায়ে বা পাতলা জুতা পরে হাঁটবেন না। বাড়ি যদি ক্ষতিগ্রস্ত বা নিরাপদ না হয়, সেখানে অবস্থান করবেন না। মোমবাতির পরিবর্তে ফ্ল্যাশলাইট ব্যবহার করুন এবং বৈদ্যুতিক সুইচ অন করার আগে বিদ্যুৎ অফিসে ফোন করে নিশ্চিত হোন, কারণ বিদ্যুৎ সংযোগে বিস্ফোরণের ঝুঁকি থাকতে পারে। সর্বশেষে, আপনার প্রিয়জনকে জানান যে আপনি নিরাপদে আছেন।

সূত্র : বিবিসি বাংলা, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর