ভাষা সৈনিক আহমদ রফিকের মরদেহ শনিবার শহীদ মিনারে নেওয়া হবে

- Update Time : ০৬:০২:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫
- / ৬০ Time View
ভাষা সৈনিক আহমদ রফিকের মরদেহ সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আগামীকাল শনিবার সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। আজ শুক্রবার আহমদ রফিক ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও ট্রাস্টি ইসমাইল সাদী প্রেরিত এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বার্তায় বলা হয়েছে, বার্ধক্যজনিত কারণে আহমদ রফিক গতকাল রাত ১০টা ১২ মিনিটে বারডেম হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। তার মরদেহ বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে।
পারিবারিক ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কিডনি সমস্যার পাশাপাশি সম্প্রতি কয়েকবার মাইল্ড স্ট্রোকের শিকার হন তিনি। এর আগে গত ১১ সেপ্টেম্বর ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর তাকে পান্থপথের হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে সেখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধা না থাকায় গত রোববার তাকে বারডেম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
আহমদ রফিকের বিশেষ সহকারী রাসেল জানান, রাত ১০টার দিকে তার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়। এরপর পরামর্শ করে চিকিৎসকরা তার লাইফ সাপোর্ট খুলে নেন। এই ভাষাসংগ্রামী রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত বুধবার বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।
রাসেল জানান, তার মরদেহ রাতে বারডেমে থাকবে। তার দাফন হবে না। কারণ, তিনি মৃত্যুর আগে নিজের দেহ ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল মেডিকেল কলেজে দান করে গেছেন।
ইসমাইল সাদী প্রেরিত বার্তায় বলা হয়েছে, আহমদ রফিক ফাউন্ডেশনের আয়োজনে আগামীকাল শনিবার (৪ অক্টোবর) সকাল ১১টায় সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আহমদ রফিকের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শোক র্যালির মাধ্যমে তার মরদেহ ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ হাসাতালে প্রদান করে তাকে শেষ বিদায় জানানো হবে।
আহমদ রফিক নিউ ইস্কাটনের গাউসনগরের একটি ভাড়া বাসায় একাই থাকতেন। ১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্ম নেওয়া এ ভাষাসংগ্রামী ২০০৬ সালে স্ত্রীকে হারান। তিনি নিঃসন্তান। তার ব্যক্তিগত সংগ্রহে রয়েছে বিপুলসংখ্যক বই, যা ছাড়া অন্য কোনো উল্লেখযোগ্য সম্পদ নেই।
ভাষা আন্দোলনের অন্যতম প্রাবন্ধিক ইতিহাসবিদ এ লেখক শতাধিক গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনা করেছেন। পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বহু সম্মাননা। দুই বাংলার রবীন্দ্রচর্চায় তাঁর অবদান অনন্য। কলকাতার টেগর রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে তাঁকে দেওয়া হয়েছে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধি।
২০১৯ সাল থেকে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হতে শুরু করলে অস্ত্রোপচার করা হলেও ফল আশানুরূপ হয়নি। ২০২৩ সাল থেকে তিনি প্রায় দৃষ্টিহীন। এর আগেই ২০২১ সালে পড়ে গিয়ে পা ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থা ক্রমশ অবনতির দিকে যেতে থাকে। বুদ্ধিজীবী মহল থেকে বারবার আহমদ রফিকের উন্নত চিকিৎসা ও রাষ্ট্রীয় সহায়তার দাবি জানানো হয়েছিল।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়