ভারতে ইসলামবিদ্বেষী ঘটনার উত্থানে নয়াদিল্লিকে সতর্ক করল পাকিস্তান

- Update Time : ০৪:৩২:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫
- / ২৩ Time View
ভারতজুড়ে ইসলামবিদ্বেষী ঘটনা বৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। শনিবার এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শাফকাত আলী খান বলেন, ‘ভারতে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর ঘৃণাত্মক বক্তব্য, বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ এবং রাষ্ট্রীয় নিরবতা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।’
শনিবার (৩১ মে) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে জিও টিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানি মুখপাত্র আরও বলেন, ‘পাকিস্তান ভারত সরকারকে আহ্বান জানায়, তারা যেন জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সকল নাগরিকের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।’

সম্প্রতি ভারতের পেহেলগামে একটি ভয়াবহ হামলায় অন্তত ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার পর থেকে সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর চরমপন্থি হিন্দুত্ববাদীদের হামলা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। পাকিস্তান দাবি করেছে, এই ঘটনার পর দুই দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা বাড়ে এবং এর জবাবে পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনয়ানুম মারসুস’ নামের একটি বড় সামরিক অভিযান চালায়, যার আওতায় একাধিক ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় হামলা করা হয়।
ভারতে এপ্রিলের ২২ তারিখের ওই হামলার পর থেকে, দিল্লিভিত্তিক সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেকশন অব সিভিল রাইটস-এর তথ্য অনুযায়ী, দেশজুড়ে অন্তত ১৮৪টি ইসলামবিদ্বেষী ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হত্যাকাণ্ড, মারধর, হুমকি, দোকানপাট ও বাড়িঘরে হামলা, মৌখিক আক্রমণ ও ভয়ভীতি প্রদর্শন। এসব ঘটনার অর্ধেকেরও বেশি ক্ষেত্রে ঘৃণাভাষণ জড়িত ছিল বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
মুখপাত্র শাফকাত আলী খান বলেন, ‘যখন আত্মসংযম ও পুনর্মিলনের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, তখন রাজনৈতিক বা আদর্শিক স্বার্থে ধর্মীয় বিদ্বেষ উসকে দেওয়া আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের শামিল এবং তা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।’
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে সীমান্তপারের সন্ত্রাসে মদদ দেওয়ার অভিযোগ করা হলেও, কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। এদিকে চরমপন্থী উগ্র জাতীয়তাবাদী সামাজিক মাধ্যম অ্যাকাউন্টগুলো ভারতের মুসলিমদের ‘অনুপ্রবেশকারী’ বা ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে আখ্যা দিয়ে ঘৃণার বাতাবরণ আরও বাড়িয়ে তুলছে।
ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) সরকারকে ‘পাকিস্তানি নাগরিক ও তাদের স্লিপার সেলগুলোকে’ বহিষ্কারের আহ্বান জানায়। ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ভিএইচপি নেতা সুরেন্দ্র জৈন বলেন, ‘এই ঘটনার মাধ্যমে এটা স্পষ্ট, হামলাকারীর একটি নির্দিষ্ট ধর্ম ছিল।’
ইন্টারনেটে ছড়ানো ঘৃণার প্রভাব বাস্তব জীবনেও পড়েছে। পাকিস্তানের একটি শহরের নাম বহন করার কারণে, ভারতের হায়দরাবাদে চরমপন্থিরা ‘করাচি বেকারি’ নামের একটি দোকান ভেঙে ফেলে এবং দোকানের নাম পরিবর্তনের দাবি তোলে।
এছাড়াও ইউটিউবে ‘পেহেলে ধার্ম পুছা’ (প্রথমে তারা ধর্ম জিজ্ঞাসা করল) শিরোনামের একটি গান ছড়িয়ে পড়েছে, যাতে ভারতীয় মুসলিমদের হিন্দুদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ তুলে দেশ ছাড়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়