ঢাকা ১২:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
৫ আগস্টের পর হিন্দু সম্প্রদায়কে ভয় দেখানো হতো : হাসনাত আব্দুল্লাহ লবণের ট্রাকে ইয়াবা পাচারের মামলায় চালকের যাবজ্জীবন রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে প্রধান উপদেষ্টার সাত দফা প্রস্তাব বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা হচ্ছে না বুলবুল-ফাহিমের, করতে হবে নির্বাচন ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় জামায়াত নেতা বহিষ্কার ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট ব্লক করায় ৩০০ কোটির ক্ষতিপূরণ গুনছে ইউটিউব পুরান ঢাকাকে আগের ঐতিহ্যে ফিরিয়ে নিবো – আলহাজ্ব আব্দুর রহমান সাকিবকে আর কখনো বাংলাদেশের হয়ে খেলতে দেওয়া হবে না : ক্রীড়া উপদেষ্টা বিজিবি জনগণের পাশে ছিল, আছে এবং থাকবে : ডিজি লন্ডনে মহাত্মা গান্ধীর ভাস্কর্য ভাঙচুর, ভারতের প্রতিক্রিয়া

ভারতে আওয়ামী আস্তানা উদঘাটন

রাজনীতি ডেস্ক
  • Update Time : ০৪:১৯:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৬৭ Time View

জুলাইয়ের ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের আস্তানা উদ্‌ঘাটিত হয়েছে। তারা কলকাতায় মূল আস্তানা গেড়েছেন। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (আইবি) বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে কলকাতায় অবস্থান নেওয়া এমন ৭৩৪ পলাতক আওয়ামী ফ্যাসিস্টের একটি ডেটাবেস তৈরি করেছে। এই ডেটাবেসে তাদের নাম-ঠিকানা, পাসপোর্ট ও টেলিফোন নম্বরও উল্লেখ রয়েছে। ডেটাবেসটি আমাদের হাতে এসেছে।

এক অনুসন্ধানে এ তথ্য ছাড়াও পলাতকদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে চলে যাওয়ার পরপরই এসব নেতা ভারতে পালিয়ে যায়। পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের স্ত্রী-সন্তানও সেখানে অবস্থান করছেন। কোনো কোনো নেতা তাদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা, বাড়ির কাজের লোকও সঙ্গে নিয়ে গেছেন। পলাতক আওয়ামী নেতাদের নাম-ঠিকানা সংবলিত এই ডেটাবেসে তাদের পরিবারের সদস্যদের তথ্য সন্নিবেশ করা হয়েছে।

ভারতে অবস্থান করা এসব নেতার মধ্যে কয়েকজন ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে কথাও বলেছেন। তাদের কেউ কেউ পালিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকারও করেছেন। কয়েকজনকে বিভিন্ন বিদেশি গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত টকশোতে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের কঠোর সমালোচনা করতে দেখা গেছে।

অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, পলাতক নেতাদের কাছে বাংলাদেশি পাসপোর্ট রয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে এসব নেতার পাসপোর্ট ৫ আগস্টের পরপরই বাতিল করা হয়েছে। এরপরও ওই পাসপোর্ট তারা কীভাবে পেয়েছেন—তা রহস্যজনক। আরো জানা গেছে, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় করছেন কলকাতায় অবস্থানরত একাধিক পুলিশ ও সামরিক কর্মকর্তা। অনুসন্ধানে এও জানা গেছে, পলাতকরা দীর্ঘদিন ধরে ভারতে বিপুল অর্থ পাচার করেছেন।

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের প্রথম দিকে শহরের পার্ক, মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে চলাফেরা করতে দেখা গেলেও বর্তমানে তাদের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, এসব নেতার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তাদের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এ কারণে তারা নির্দিষ্ট কিছু এলাকার বাইরে যাচ্ছেন না।

এদিকে কলকাতায় অবস্থিত আওয়ামী লীগ নেতাদের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এসব নেতার পারিবারিক ব্যয়ের প্রায় পুরোটাই নিয়মিত বাংলাদেশ থেকেই যাচ্ছে। এর সিংহভাগই হুন্ডির মাধ্যমে যায় বলে সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।

পলাতক শেখ হাসিনার আশ্রয় হয়েছে দিল্লির অভিজাত লুটিয়েন্স বাংলো জোনের সুরক্ষিত একটি বাড়িতে। বাংলোর ঠিকানা হলো ১১ রাজাজি মার্গ। বাকি আওয়ামী নেতারা আস্তানা গেড়েছেন কলকাতায়। ওবায়দুল কাদের, শেখ সেলিম, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মতো ক্ষমতাচ্যুত মন্ত্রী এবং শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে একেবারে ইউনিয়ন পর্যায়ের অনেক নেতার বসবাস এখন কলকাতায়। জুলাই গণহত্যা এবং বিগত ১৫ বছর ধরে গুম, খুন, নির্যাতন, বেপরোয়া দুর্নীতিসহ নানা অপকর্মে জড়িত আ.লীগ নেতার পাশাপাশি ওই সরকারের শীর্ষ আমলা, পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা, নির্বাচন কমিশনার, সরকারি আইনজীবীসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সামরিক বাহিনীর শীর্ষ জেনারেলরাও আশ্রয় নিয়েছেন কলকাতায়। অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ১০ আগস্ট পর্যন্ত ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার এই ডেটাবেসে অন্তত ৭৩৪ জনের তথ্য-উপাত্ত সংরক্ষণ করা হয়েছে। ডেটাবেসে প্রত্যেকের নামের পাশাপাশি তার পিতা বা স্বামী-স্ত্রীর নাম, বাংলাদেশি পাসপোর্ট নম্বর, দলীয় পদ-পদবি, বাংলাদেশে স্থায়ী ঠিকানা, কলকাতার বর্তমান ঠিকানাসহ তারা যে ফোন নম্বরটি ব্যবহার করছেন—তা সবিস্তারে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা ও কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, এই ডেটাবেসে প্রতিদিন যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন নাম। কলকাতায় আস্তানা গাড়া প্রত্যেকেই ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রয়েছেন। বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যারাই ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, তারা কেউই যেন গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের বাইরে না থাকেন, তা নিশ্চিত করতে চাইছে ভারতের ডিপ স্টেট। ইতোমধ্যে প্রত্যেকের জন্য বৈধ বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিশ্চিত করা হয়েছে, যা রীতিমতো রহস্যের জন্ম দিয়েছে। অধিকাংশই অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছেন; অথচ তাদের প্রত্যেকের হাতে এখন বৈধ বাংলাদেশি পাসপোর্ট! এ ব্যাপারে কলকাতার একটি সূত্র জানিয়েছে, পাসপোর্ট পাওয়ার ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের কোনো একটি গোষ্ঠীকে সহযোগিতা করেছে।

এদিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে, কলকাতার অভিজাত এলাকা থেকে শুরু করে শহরতলিতে আশ্রয় নিয়েছেন পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা। কেউ কেউ বাড়ি ভাড়া করে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে রীতিমতো সংসার পেতে বসেছেন। অনেকে আবার থাকছেন হোটেল ভাড়া করে। তবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাধারণ নেতারা রুম ভাড়া নিয়ে মেস সিস্টেমে থাকছেন। ভারতীয় ডেটাবেসের তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার স্ত্রী ইশরাতুন্নেছা কাদেরকে নিয়ে ‘পিএস ওয়ান-১০, থাকদারী, নিউ টাউন, কলকাতা’—এই ঠিকানায় অবস্থান করছেন। তার হাতে এখন যে বাংলাদেশি পাসপোর্টটি রয়েছে, তার নম্বর ডি-০০০১০৭৫৯। ওবায়দুল কাদের কলকাতায় যে মোবাইল সিম ব্যবহার করছেন, তার নম্বর +৯১৯৩৩০৩৪১৮১০।

আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম তার দুই ছেলে শেখ ফজলে নাইম ও শেখ ফজলে ফাহিমকে (এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি) নিয়ে কলকাতায় অবস্থান করছেন। তার বর্তমান বাংলাদেশি পাসপোর্ট নম্বর ডি-০০০১২০৬৯। তার ফোন নম্বর +৯১৭০০৫৬৮৩৬৯৩।

প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, তার স্ত্রী পারভীন চৌধুরী এবং কাজের লোক মো. মামুন হোসেনকে নিয়ে তার সংসারজীবন পার করছেন কলকাতায় বসে। তার বর্তমান বাংলাদেশি পাসপোর্ট নম্বর এ-১২৩২৮৭৯৬। তার কলকাতার ফোন নম্বর +৯১৭৪৩৯৩৩৪৭৬৪।

প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক তার স্ত্রী সাইয়েদা আনজুমান বানু, মেয়ে আমরিন রাখি, জামাতা মো. নাজমুল ইসলাম, নাতি আফফান সিদ্দিক, নাতনি মেজরিশ কবীর, নাতি নাজেইর ওয়াজদি আসওয়াত, এপিএস অপূর্ব ত্রিপুরা এবং পিএস (রাজনৈতিক) মাসুদুর রহমান বিপ্লবকে নিয়ে কলকাতায় বসবাস করছেন। নানকের বর্তমান বাংলাদেশি পাসপোর্ট নম্বর বি-০০৬৯২২৬৬। তিনি এখনো বাংলাদেশি নম্বর ব্যবহার করছেন। তার ফোন নম্বর ০১৭৭৭৭৭৭৭৭৫।

প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান তার স্ত্রী শাহীন আখতার, দুই মেয়ে অনিকা ফারিহা জামান ও মাইশা সামিহা জামানকে নিয়ে কলকাতা সদরে অবস্থান করছেন। তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট নম্বর ডি-০০০১২৮৩০। তিনি কলকাতায় বাংলাদেশি সিম ব্যবহার করছেন। তার বর্তমান ফোন নম্বর ০১৭১১৮১০৯৭০।

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল তার মেয়ে সাফিয়া তাসনিম খান ও কাজের লোক মো. সাইফুল ইসলামকে নিয়ে কলকাতার নিউ টাউনের রোজ ডেল টাওয়ারে বসবাস করছেন। তার বর্তমান বাংলাদেশি পাসপোর্ট নম্বর ডি-০০০১০০২০। কলকাতায় তার ব্যবহৃত ফোন নম্বর +৯১৯৩৩০৩৬০৪৫৪।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ তার স্ত্রী ফৌজিয়া আলমকে নিয়ে নিউ টাউন অ্যাকশন এরিয়া-৩, কলকাতা—এ ঠিকানায় অবস্থান করছেন। তার বর্তমান বাংলাদেশি পাসপোর্ট নম্বর ডি-০০০১১৯৫৮। তার বর্তমান ফোন নম্বর +৯১৬৯০৯৭৯৩০৩৩।

সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু তার স্ত্রী সীমা হামিদকে নিয়ে কলকাতার অভিজাত এলাকা সল্টলেকের সেক্টর-২, সিজে ব্লক, সিজে ৩৩৩—এ ঠিকানায় বসবাস করছেন। তার কাছে থাকা বাংলাদেশি পাসপোর্ট নম্বর ডি-০০০১২৪৭৭। তার বর্তমান ফোন নম্বর +৯১৯৩৩০৩৮৯৪২২।

আইইবির সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর কলকাতায় কেষ্টোপুর এলাকায় প্রফুল্ল কুমার রোডে অবস্থিত বিশ্বরবর অ্যাপার্টমেন্টে থাকছেন। তার বর্তমান বাংলাদেশি পাসপোর্ট নম্বর ডি-০০০১২৯৬৪। তার বর্তমান ফোন নম্বর +৯১৮১১৮৯৭৮২৮৩।

অন্য নেতাদের মধ্যে রয়েছেন শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই সাবেক এমপি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ (বরিশাল-১)। তিনি কলকাতায় আছেন এক সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে। এছাড়া শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলাল উদ্দিন (বাগেরহাট-১) ও তার ছেলে শেখ তন্ময় (বাগেরহাট-২), শেখ হেলালের ভাই সাবেক এমপি শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল (খুলনা-২), শেখ সেলিমের বোনের স্বামী যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, শেখ হাসিনার ভাগ্নে চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরী লিটন (মাদারীপুর-১) ও মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন (ফরিদপুর-৪), আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম (ঢাকা-৮) কলকাতায় অবস্থান করছেন।

অন্যদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক (গাজীপুর-১), স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম (কুমিল্লা-৯), শিক্ষামন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল (চট্টগ্রাম-৯), স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক (মানিকগঞ্জ-৩), রেলপথমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম (রাজবাড়ী-২), যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহ্সান রাসেল (গাজীপুর-২), দ্বিতীয় স্ত্রী সিলভিয়া পারভীনসহ সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম (রাজশাহী-৬, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ (ময়মনসিং-৩), সাবেক প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজহার খান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরিফ আহমেদ (ময়মনসিংহ-২), আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক নজিবুল্লাহ হিরু, সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম (জামালপুর-৩), সফিউল আলম খান নাদেল (মৌলভীবাজার-৩), এসএম কামাল হোসেন (খুলনা-৩), সুজিত রায় নন্দী, দলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সাবেক এমপি সেলিম মাহমুদ (চাঁদপুর-১), উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, দলের কেন্দ্রীয় নেতা রেমন্ড আরেং কলকাতায় অবস্থান করছেন।

এছাড়া কলকাতায় আছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন (ঢাকা-৬), সাবেক এমপি মৃণাল কান্তি দাস (মুন্সীগঞ্জ-৩), সাবেক এমপি অসীম কুমার উকিল (নেত্রকোনা-৩) ও তার স্ত্রী অপু উকিল, সাবেক এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী (রাজশাহী-১), কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (খাগড়াছড়ি), সাবেক হুইপ নজরুল ইসলাম বাবু (নারায়ণগঞ্জ-২), সাবেক হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল (কক্সবাজার-৩), আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার (কুমিল্লা-৬), তাহসিন বাহার সূচনা (সাবেক মেয়র, কুসিক), আলী আসগর টগর (চুয়াডাঙ্গা-২), শিবলী সাদিক (দিনাজপুর-৩), মাহমুদ হাসান রিপন (গাইবান্ধা-৫), ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা (রাজশাহী-২), আয়েন উদ্দিন (রাজশাহী-৩), তারভীর শাকিল জয় (সিরাজগঞ্জ-১) হাবিবে মিল্লাত (সিরাজগঞ্জ-২), আকরামুল হক (সিরাজগঞ্জ-২), সাইফুজ্জামান শিখর (মাগুরা-১), বীরেন শিকদার (মাগুরা-২), এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ (বাগেরহাট-৪), আক্তারুজ্জামান (খুলনা-৬), সাবেক সিইসি নূরুল হুদার ভাগ্নে এসএম শাহজাহান (পটুয়াখালী-৩), পংকজ নাথ (বরিশাল-৪), একেএম আউয়াল সাইদুর রহমান (পিরোজপুর-১), মহিউদ্দিন মহারাজ (পিরোজপুর-২), আমানুর রহমান রানা (টাঙ্গাইল-৩), ছোট মনির ((টাঙ্গাইল-২), অনুপম শাহজাহান জয় (টাঙ্গাইল-৩), মো. জোয়াহেরুল ইসলাম (টাঙ্গাইল-৮), শাহীন চাকলাদার (যশোর-৬), শওকত হাচানুর রহমান রিমন (বরগুনা-২), সাবেক হুইপ আতিউর রহমান আতিক (শেরপুর-১), সানোয়ার হোসেন ছানু (শেরপুর-১), আব্দুল মালেক সরকার (ময়মনসিংহ-৬), ফাহিম গোলন্দাজ বাবেল (ময়মনসিংহ-১০), মোস্তাক আহমেদ রবি (নেত্রকোনা-১), সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি (কিশোরগঞ্জ-১), আওলাদ হোসেন (ঢাকা-৪), মশিউর রহমান সজল (ঢাকা-৫), যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন নিখিল (ঢাকা-১৪), ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা (ঢাকা-১৫), মো. হাবিব হাসান (ঢাকা-১৮), সাইফুল ইসলাম (ঢাকা-১৯), শাহদাব আকবর (ফরিদপুর-২), মোয়াজ্জেম হোসেন রতন (সুনামগঞ্জ-১), জিল্লুর রহমান (মৌলভীবাজার-৩), ময়েজ উদ্দিন শরিফ (মৌলভীবাজার-২), জাহাঙ্গীর আলম সরকার (কুমিল্লা-৩), প্রাণ গোপাল দত্ত (কুমিল্লা-৭), আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম (ফেনী-১), নিজাম উদ্দিন হাজারী (ফেনী-২), নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন (লক্ষ্মীপুর-২), মহিউদ্দিন বাচ্চু (চট্টগ্রাম-১০), আশেক উল্লাহ রফিক (কক্সবাজার-২) ও মহিলা এমপি পারুল আক্তার।

এর বাইরে জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বেশকিছু মধ্যম সারির নেতা, জেলা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়রও আছেন সেখানে। তাদের মধ্যে রয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওমর শরিফ, ঢাকা দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজল কুণ্ডু, সাবেক ছাত্রনেতা জয়দেব নন্দী, গোলাম সারোয়ার কবীর, যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, ঢাকা উত্তর সিটি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় থাকা অভিনেত্রী তারিন জাহানও বর্তমানে আছেন কলকাতায়।

Please Share This Post in Your Social Media

ভারতে আওয়ামী আস্তানা উদঘাটন

রাজনীতি ডেস্ক
Update Time : ০৪:১৯:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জুলাইয়ের ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের আস্তানা উদ্‌ঘাটিত হয়েছে। তারা কলকাতায় মূল আস্তানা গেড়েছেন। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (আইবি) বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে কলকাতায় অবস্থান নেওয়া এমন ৭৩৪ পলাতক আওয়ামী ফ্যাসিস্টের একটি ডেটাবেস তৈরি করেছে। এই ডেটাবেসে তাদের নাম-ঠিকানা, পাসপোর্ট ও টেলিফোন নম্বরও উল্লেখ রয়েছে। ডেটাবেসটি আমাদের হাতে এসেছে।

এক অনুসন্ধানে এ তথ্য ছাড়াও পলাতকদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে চলে যাওয়ার পরপরই এসব নেতা ভারতে পালিয়ে যায়। পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের স্ত্রী-সন্তানও সেখানে অবস্থান করছেন। কোনো কোনো নেতা তাদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা, বাড়ির কাজের লোকও সঙ্গে নিয়ে গেছেন। পলাতক আওয়ামী নেতাদের নাম-ঠিকানা সংবলিত এই ডেটাবেসে তাদের পরিবারের সদস্যদের তথ্য সন্নিবেশ করা হয়েছে।

ভারতে অবস্থান করা এসব নেতার মধ্যে কয়েকজন ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে কথাও বলেছেন। তাদের কেউ কেউ পালিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকারও করেছেন। কয়েকজনকে বিভিন্ন বিদেশি গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত টকশোতে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের কঠোর সমালোচনা করতে দেখা গেছে।

অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, পলাতক নেতাদের কাছে বাংলাদেশি পাসপোর্ট রয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে এসব নেতার পাসপোর্ট ৫ আগস্টের পরপরই বাতিল করা হয়েছে। এরপরও ওই পাসপোর্ট তারা কীভাবে পেয়েছেন—তা রহস্যজনক। আরো জানা গেছে, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় করছেন কলকাতায় অবস্থানরত একাধিক পুলিশ ও সামরিক কর্মকর্তা। অনুসন্ধানে এও জানা গেছে, পলাতকরা দীর্ঘদিন ধরে ভারতে বিপুল অর্থ পাচার করেছেন।

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের প্রথম দিকে শহরের পার্ক, মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে চলাফেরা করতে দেখা গেলেও বর্তমানে তাদের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, এসব নেতার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তাদের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এ কারণে তারা নির্দিষ্ট কিছু এলাকার বাইরে যাচ্ছেন না।

এদিকে কলকাতায় অবস্থিত আওয়ামী লীগ নেতাদের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এসব নেতার পারিবারিক ব্যয়ের প্রায় পুরোটাই নিয়মিত বাংলাদেশ থেকেই যাচ্ছে। এর সিংহভাগই হুন্ডির মাধ্যমে যায় বলে সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।

পলাতক শেখ হাসিনার আশ্রয় হয়েছে দিল্লির অভিজাত লুটিয়েন্স বাংলো জোনের সুরক্ষিত একটি বাড়িতে। বাংলোর ঠিকানা হলো ১১ রাজাজি মার্গ। বাকি আওয়ামী নেতারা আস্তানা গেড়েছেন কলকাতায়। ওবায়দুল কাদের, শেখ সেলিম, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মতো ক্ষমতাচ্যুত মন্ত্রী এবং শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে একেবারে ইউনিয়ন পর্যায়ের অনেক নেতার বসবাস এখন কলকাতায়। জুলাই গণহত্যা এবং বিগত ১৫ বছর ধরে গুম, খুন, নির্যাতন, বেপরোয়া দুর্নীতিসহ নানা অপকর্মে জড়িত আ.লীগ নেতার পাশাপাশি ওই সরকারের শীর্ষ আমলা, পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা, নির্বাচন কমিশনার, সরকারি আইনজীবীসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সামরিক বাহিনীর শীর্ষ জেনারেলরাও আশ্রয় নিয়েছেন কলকাতায়। অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ১০ আগস্ট পর্যন্ত ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার এই ডেটাবেসে অন্তত ৭৩৪ জনের তথ্য-উপাত্ত সংরক্ষণ করা হয়েছে। ডেটাবেসে প্রত্যেকের নামের পাশাপাশি তার পিতা বা স্বামী-স্ত্রীর নাম, বাংলাদেশি পাসপোর্ট নম্বর, দলীয় পদ-পদবি, বাংলাদেশে স্থায়ী ঠিকানা, কলকাতার বর্তমান ঠিকানাসহ তারা যে ফোন নম্বরটি ব্যবহার করছেন—তা সবিস্তারে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা ও কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, এই ডেটাবেসে প্রতিদিন যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন নাম। কলকাতায় আস্তানা গাড়া প্রত্যেকেই ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রয়েছেন। বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যারাই ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, তারা কেউই যেন গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের বাইরে না থাকেন, তা নিশ্চিত করতে চাইছে ভারতের ডিপ স্টেট। ইতোমধ্যে প্রত্যেকের জন্য বৈধ বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিশ্চিত করা হয়েছে, যা রীতিমতো রহস্যের জন্ম দিয়েছে। অধিকাংশই অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছেন; অথচ তাদের প্রত্যেকের হাতে এখন বৈধ বাংলাদেশি পাসপোর্ট! এ ব্যাপারে কলকাতার একটি সূত্র জানিয়েছে, পাসপোর্ট পাওয়ার ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের কোনো একটি গোষ্ঠীকে সহযোগিতা করেছে।

এদিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে, কলকাতার অভিজাত এলাকা থেকে শুরু করে শহরতলিতে আশ্রয় নিয়েছেন পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা। কেউ কেউ বাড়ি ভাড়া করে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে রীতিমতো সংসার পেতে বসেছেন। অনেকে আবার থাকছেন হোটেল ভাড়া করে। তবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাধারণ নেতারা রুম ভাড়া নিয়ে মেস সিস্টেমে থাকছেন। ভারতীয় ডেটাবেসের তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার স্ত্রী ইশরাতুন্নেছা কাদেরকে নিয়ে ‘পিএস ওয়ান-১০, থাকদারী, নিউ টাউন, কলকাতা’—এই ঠিকানায় অবস্থান করছেন। তার হাতে এখন যে বাংলাদেশি পাসপোর্টটি রয়েছে, তার নম্বর ডি-০০০১০৭৫৯। ওবায়দুল কাদের কলকাতায় যে মোবাইল সিম ব্যবহার করছেন, তার নম্বর +৯১৯৩৩০৩৪১৮১০।

আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম তার দুই ছেলে শেখ ফজলে নাইম ও শেখ ফজলে ফাহিমকে (এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি) নিয়ে কলকাতায় অবস্থান করছেন। তার বর্তমান বাংলাদেশি পাসপোর্ট নম্বর ডি-০০০১২০৬৯। তার ফোন নম্বর +৯১৭০০৫৬৮৩৬৯৩।

প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, তার স্ত্রী পারভীন চৌধুরী এবং কাজের লোক মো. মামুন হোসেনকে নিয়ে তার সংসারজীবন পার করছেন কলকাতায় বসে। তার বর্তমান বাংলাদেশি পাসপোর্ট নম্বর এ-১২৩২৮৭৯৬। তার কলকাতার ফোন নম্বর +৯১৭৪৩৯৩৩৪৭৬৪।

প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক তার স্ত্রী সাইয়েদা আনজুমান বানু, মেয়ে আমরিন রাখি, জামাতা মো. নাজমুল ইসলাম, নাতি আফফান সিদ্দিক, নাতনি মেজরিশ কবীর, নাতি নাজেইর ওয়াজদি আসওয়াত, এপিএস অপূর্ব ত্রিপুরা এবং পিএস (রাজনৈতিক) মাসুদুর রহমান বিপ্লবকে নিয়ে কলকাতায় বসবাস করছেন। নানকের বর্তমান বাংলাদেশি পাসপোর্ট নম্বর বি-০০৬৯২২৬৬। তিনি এখনো বাংলাদেশি নম্বর ব্যবহার করছেন। তার ফোন নম্বর ০১৭৭৭৭৭৭৭৭৫।

প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান তার স্ত্রী শাহীন আখতার, দুই মেয়ে অনিকা ফারিহা জামান ও মাইশা সামিহা জামানকে নিয়ে কলকাতা সদরে অবস্থান করছেন। তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট নম্বর ডি-০০০১২৮৩০। তিনি কলকাতায় বাংলাদেশি সিম ব্যবহার করছেন। তার বর্তমান ফোন নম্বর ০১৭১১৮১০৯৭০।

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল তার মেয়ে সাফিয়া তাসনিম খান ও কাজের লোক মো. সাইফুল ইসলামকে নিয়ে কলকাতার নিউ টাউনের রোজ ডেল টাওয়ারে বসবাস করছেন। তার বর্তমান বাংলাদেশি পাসপোর্ট নম্বর ডি-০০০১০০২০। কলকাতায় তার ব্যবহৃত ফোন নম্বর +৯১৯৩৩০৩৬০৪৫৪।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ তার স্ত্রী ফৌজিয়া আলমকে নিয়ে নিউ টাউন অ্যাকশন এরিয়া-৩, কলকাতা—এ ঠিকানায় অবস্থান করছেন। তার বর্তমান বাংলাদেশি পাসপোর্ট নম্বর ডি-০০০১১৯৫৮। তার বর্তমান ফোন নম্বর +৯১৬৯০৯৭৯৩০৩৩।

সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু তার স্ত্রী সীমা হামিদকে নিয়ে কলকাতার অভিজাত এলাকা সল্টলেকের সেক্টর-২, সিজে ব্লক, সিজে ৩৩৩—এ ঠিকানায় বসবাস করছেন। তার কাছে থাকা বাংলাদেশি পাসপোর্ট নম্বর ডি-০০০১২৪৭৭। তার বর্তমান ফোন নম্বর +৯১৯৩৩০৩৮৯৪২২।

আইইবির সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর কলকাতায় কেষ্টোপুর এলাকায় প্রফুল্ল কুমার রোডে অবস্থিত বিশ্বরবর অ্যাপার্টমেন্টে থাকছেন। তার বর্তমান বাংলাদেশি পাসপোর্ট নম্বর ডি-০০০১২৯৬৪। তার বর্তমান ফোন নম্বর +৯১৮১১৮৯৭৮২৮৩।

অন্য নেতাদের মধ্যে রয়েছেন শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই সাবেক এমপি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ (বরিশাল-১)। তিনি কলকাতায় আছেন এক সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে। এছাড়া শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলাল উদ্দিন (বাগেরহাট-১) ও তার ছেলে শেখ তন্ময় (বাগেরহাট-২), শেখ হেলালের ভাই সাবেক এমপি শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল (খুলনা-২), শেখ সেলিমের বোনের স্বামী যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, শেখ হাসিনার ভাগ্নে চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরী লিটন (মাদারীপুর-১) ও মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন (ফরিদপুর-৪), আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম (ঢাকা-৮) কলকাতায় অবস্থান করছেন।

অন্যদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক (গাজীপুর-১), স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম (কুমিল্লা-৯), শিক্ষামন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল (চট্টগ্রাম-৯), স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক (মানিকগঞ্জ-৩), রেলপথমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম (রাজবাড়ী-২), যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহ্সান রাসেল (গাজীপুর-২), দ্বিতীয় স্ত্রী সিলভিয়া পারভীনসহ সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম (রাজশাহী-৬, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ (ময়মনসিং-৩), সাবেক প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজহার খান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরিফ আহমেদ (ময়মনসিংহ-২), আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক নজিবুল্লাহ হিরু, সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম (জামালপুর-৩), সফিউল আলম খান নাদেল (মৌলভীবাজার-৩), এসএম কামাল হোসেন (খুলনা-৩), সুজিত রায় নন্দী, দলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সাবেক এমপি সেলিম মাহমুদ (চাঁদপুর-১), উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, দলের কেন্দ্রীয় নেতা রেমন্ড আরেং কলকাতায় অবস্থান করছেন।

এছাড়া কলকাতায় আছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন (ঢাকা-৬), সাবেক এমপি মৃণাল কান্তি দাস (মুন্সীগঞ্জ-৩), সাবেক এমপি অসীম কুমার উকিল (নেত্রকোনা-৩) ও তার স্ত্রী অপু উকিল, সাবেক এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী (রাজশাহী-১), কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (খাগড়াছড়ি), সাবেক হুইপ নজরুল ইসলাম বাবু (নারায়ণগঞ্জ-২), সাবেক হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল (কক্সবাজার-৩), আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার (কুমিল্লা-৬), তাহসিন বাহার সূচনা (সাবেক মেয়র, কুসিক), আলী আসগর টগর (চুয়াডাঙ্গা-২), শিবলী সাদিক (দিনাজপুর-৩), মাহমুদ হাসান রিপন (গাইবান্ধা-৫), ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা (রাজশাহী-২), আয়েন উদ্দিন (রাজশাহী-৩), তারভীর শাকিল জয় (সিরাজগঞ্জ-১) হাবিবে মিল্লাত (সিরাজগঞ্জ-২), আকরামুল হক (সিরাজগঞ্জ-২), সাইফুজ্জামান শিখর (মাগুরা-১), বীরেন শিকদার (মাগুরা-২), এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ (বাগেরহাট-৪), আক্তারুজ্জামান (খুলনা-৬), সাবেক সিইসি নূরুল হুদার ভাগ্নে এসএম শাহজাহান (পটুয়াখালী-৩), পংকজ নাথ (বরিশাল-৪), একেএম আউয়াল সাইদুর রহমান (পিরোজপুর-১), মহিউদ্দিন মহারাজ (পিরোজপুর-২), আমানুর রহমান রানা (টাঙ্গাইল-৩), ছোট মনির ((টাঙ্গাইল-২), অনুপম শাহজাহান জয় (টাঙ্গাইল-৩), মো. জোয়াহেরুল ইসলাম (টাঙ্গাইল-৮), শাহীন চাকলাদার (যশোর-৬), শওকত হাচানুর রহমান রিমন (বরগুনা-২), সাবেক হুইপ আতিউর রহমান আতিক (শেরপুর-১), সানোয়ার হোসেন ছানু (শেরপুর-১), আব্দুল মালেক সরকার (ময়মনসিংহ-৬), ফাহিম গোলন্দাজ বাবেল (ময়মনসিংহ-১০), মোস্তাক আহমেদ রবি (নেত্রকোনা-১), সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি (কিশোরগঞ্জ-১), আওলাদ হোসেন (ঢাকা-৪), মশিউর রহমান সজল (ঢাকা-৫), যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন নিখিল (ঢাকা-১৪), ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা (ঢাকা-১৫), মো. হাবিব হাসান (ঢাকা-১৮), সাইফুল ইসলাম (ঢাকা-১৯), শাহদাব আকবর (ফরিদপুর-২), মোয়াজ্জেম হোসেন রতন (সুনামগঞ্জ-১), জিল্লুর রহমান (মৌলভীবাজার-৩), ময়েজ উদ্দিন শরিফ (মৌলভীবাজার-২), জাহাঙ্গীর আলম সরকার (কুমিল্লা-৩), প্রাণ গোপাল দত্ত (কুমিল্লা-৭), আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম (ফেনী-১), নিজাম উদ্দিন হাজারী (ফেনী-২), নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন (লক্ষ্মীপুর-২), মহিউদ্দিন বাচ্চু (চট্টগ্রাম-১০), আশেক উল্লাহ রফিক (কক্সবাজার-২) ও মহিলা এমপি পারুল আক্তার।

এর বাইরে জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বেশকিছু মধ্যম সারির নেতা, জেলা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়রও আছেন সেখানে। তাদের মধ্যে রয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওমর শরিফ, ঢাকা দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজল কুণ্ডু, সাবেক ছাত্রনেতা জয়দেব নন্দী, গোলাম সারোয়ার কবীর, যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, ঢাকা উত্তর সিটি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় থাকা অভিনেত্রী তারিন জাহানও বর্তমানে আছেন কলকাতায়।