ঢাকা ০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতের বিরুদ্ধে যখন গোটা দেশ ঐক্যবদ্ধ তখন জাতীয় প্রেস ক্লাবে স্বৈরাচারের উদ্ভব!

নওরোজ রিপোর্ট
  • Update Time : ০৮:৫৭:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৬৩ Time View

বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল ও ঘোলাটে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দক্ষিণ এশিয়ার লেডি হিটলারখ্যাত শেখ হাসিনা ও ছোট বোন শেখ রেহেনা চোরের মত পালিয়ে ভারতে যায়। ভারতে বসেই মোদি সরকারের ইন্ধন ও সহযোগিতায় বাংলাদেশের পরিস্থিতি অস্থির ও অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তার সাথে এদেশের কতিপয় কুলাঙ্গার দেশপ্রেমিক নামধারীরা সহযোগিতা করে যাচ্ছে। দেশের পরিস্থিতি অস্থির করে তুলে তারা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চাইছে।

আধিপত্যবাদী ভারত এবং তার পোষ্য স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে গোটা দেশ ফুঁসে উঠেছে। প্রতিদিন বিভিন্ন সংগঠনের সভা, সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরাম গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করে।

এদিকে প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহম্মদ ইউনূসের আহবানে গত বুধবার আওয়ামী লীগ ব্যতিত সব রাজনৈতিক দলের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দলমত নির্বিশেষে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানানো হয়। পরদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করেন ধর্মীয় দলগুলোর নেতৃবৃন্দের সাথে। ওই বৈঠকেও সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানানো হয়।

অভিজ্ঞমহলের মতে, যে সময়ে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও তার দোসরদের বিরুদ্ধে গোটা জাতি একাট্টা হয়ে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, ঠিক সেই মুহুর্তে গণতন্ত্রের সূতিকাগারখ্যাত জাতীয় প্রেস ক্লাবে আবির্ভূত হয়েছে ‘একটি স্বৈরাচারী, স্বেচ্ছাচারী, সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর।’ তারা অত্যন্ত সুকৌশলে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে দীক্ষিত জাতীয়তাবাদী সাংবাদিকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছে। তারা যখন-তখন যার-তার সদস্যপদ বাতিল করছে ঠুনকো অজুহাতে।

অনেকে অভিযোগ করছেন, এই স্বৈরাচারী গোষ্ঠীর মূলহোতা কাদের গনি চৌধুরী। এই কাদের গনি চৌধুরী গত ১৫ বছরের বেশী সময় ধরে সাংবাদিকতায়ই নেই। যেখানে তার সদস্যপদ চলে যাবার কথা। সেখানে তিনি আজ নেতৃত্ব দিচ্ছেন জাতীয়তাবাদী সাংবাদিকদের সদস্যপদ বাতিলের। তার সাথে যুক্ত হয়েছেন আরো দু’একজন। একজন তো সাংবাদিকতা ছেড়েছেন প্রায় বিশ বছর আগে। করেন মাস্টারী। তিনিও পুরো দস্তুর সদস্য। তার নাম আবদুল হাই সিকদার। তিনি স্বৈরাচারী এরশাদের আহবানে বঙ্গভবনে কবিতা পাঠ করতে গিয়েছিলেন। জনশ্রুতি রয়েছে, সেখানে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে অশ্লীল কবিতা পড়েছিলেন। যা শুনে স্বয়ং এরশাদ মন্তব্য করেছিলেন, কবিতা কি এত অশ্লীল হয়। এই সিকদার আবার মঈন-উ-আহমদের ডাকে সেনানিবাসে হাজির হয়েছিলেন। অথচ আজ তিনিই বড় জাতীয়তাবাদী!

অনেকে বলে থাকেন, এই মোসায়েব কথামালার জোরেই সবাইকে মুগ্ধ করে ফেলেন! শুধু তাই নয়, তিনি আবার ব্যবস্থাপনা কমিটিতে কো-অপ্ট হয়েছেন। অথচ গঠনতন্ত্র মোতাবেক তার অনেক আগেই সহযোগী সদস্য হবার কথা। আরেকজন ফটো সাংবাদিক এ কে এম মোহসিন। এক যুগেরও বেশী সময় ধরে কোন পত্রিকায় চাকরি করেন না। তার সদস্যপদও সহযোগী হবার কথা অথচ তিনিও ব্যবস্থাপনা কমিটিতে কো-অপ্ট হয়েছেন। আবার নিজের মেয়েকেও দিয়েছেন সদস্যপদ। অথচ তিন দশকের পুরনো সদস্যদের সদস্যপদ বাতিল করে উল্লাস করেন।

অনেকের মতে, তারা ক্লাবের মালিক-মোক্তার সেজে বসেছেন। কখন কে ক্লাবে ঢুকলো, কেউ মেহমান নিয়ে ঢুকলো কিনা সে সব তারা তদারকি করেন। নির্বাচিত হলে যে, তারা কি করতেন, সেটা বলাই বাহুল্য। অবশ্য তারা কোন গঠনতন্ত্রের ধার ধারেন না। তারা বলে থাকেন, ‘দেশে বিপ্লব হয়েছে। এখন আবার কিসের গঠনতন্ত্র? ছুঁড়ে ফেলেন এই গঠনতন্ত্র। আমরা যেভাবে চালাই, সেভাবেই ক্লাব চলতে থাকবে। (চলবে)

Please Share This Post in Your Social Media

ভারতের বিরুদ্ধে যখন গোটা দেশ ঐক্যবদ্ধ তখন জাতীয় প্রেস ক্লাবে স্বৈরাচারের উদ্ভব!

নওরোজ রিপোর্ট
Update Time : ০৮:৫৭:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪

বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল ও ঘোলাটে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দক্ষিণ এশিয়ার লেডি হিটলারখ্যাত শেখ হাসিনা ও ছোট বোন শেখ রেহেনা চোরের মত পালিয়ে ভারতে যায়। ভারতে বসেই মোদি সরকারের ইন্ধন ও সহযোগিতায় বাংলাদেশের পরিস্থিতি অস্থির ও অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তার সাথে এদেশের কতিপয় কুলাঙ্গার দেশপ্রেমিক নামধারীরা সহযোগিতা করে যাচ্ছে। দেশের পরিস্থিতি অস্থির করে তুলে তারা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চাইছে।

আধিপত্যবাদী ভারত এবং তার পোষ্য স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে গোটা দেশ ফুঁসে উঠেছে। প্রতিদিন বিভিন্ন সংগঠনের সভা, সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরাম গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করে।

এদিকে প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহম্মদ ইউনূসের আহবানে গত বুধবার আওয়ামী লীগ ব্যতিত সব রাজনৈতিক দলের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দলমত নির্বিশেষে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানানো হয়। পরদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করেন ধর্মীয় দলগুলোর নেতৃবৃন্দের সাথে। ওই বৈঠকেও সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানানো হয়।

অভিজ্ঞমহলের মতে, যে সময়ে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও তার দোসরদের বিরুদ্ধে গোটা জাতি একাট্টা হয়ে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, ঠিক সেই মুহুর্তে গণতন্ত্রের সূতিকাগারখ্যাত জাতীয় প্রেস ক্লাবে আবির্ভূত হয়েছে ‘একটি স্বৈরাচারী, স্বেচ্ছাচারী, সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর।’ তারা অত্যন্ত সুকৌশলে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে দীক্ষিত জাতীয়তাবাদী সাংবাদিকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছে। তারা যখন-তখন যার-তার সদস্যপদ বাতিল করছে ঠুনকো অজুহাতে।

অনেকে অভিযোগ করছেন, এই স্বৈরাচারী গোষ্ঠীর মূলহোতা কাদের গনি চৌধুরী। এই কাদের গনি চৌধুরী গত ১৫ বছরের বেশী সময় ধরে সাংবাদিকতায়ই নেই। যেখানে তার সদস্যপদ চলে যাবার কথা। সেখানে তিনি আজ নেতৃত্ব দিচ্ছেন জাতীয়তাবাদী সাংবাদিকদের সদস্যপদ বাতিলের। তার সাথে যুক্ত হয়েছেন আরো দু’একজন। একজন তো সাংবাদিকতা ছেড়েছেন প্রায় বিশ বছর আগে। করেন মাস্টারী। তিনিও পুরো দস্তুর সদস্য। তার নাম আবদুল হাই সিকদার। তিনি স্বৈরাচারী এরশাদের আহবানে বঙ্গভবনে কবিতা পাঠ করতে গিয়েছিলেন। জনশ্রুতি রয়েছে, সেখানে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে অশ্লীল কবিতা পড়েছিলেন। যা শুনে স্বয়ং এরশাদ মন্তব্য করেছিলেন, কবিতা কি এত অশ্লীল হয়। এই সিকদার আবার মঈন-উ-আহমদের ডাকে সেনানিবাসে হাজির হয়েছিলেন। অথচ আজ তিনিই বড় জাতীয়তাবাদী!

অনেকে বলে থাকেন, এই মোসায়েব কথামালার জোরেই সবাইকে মুগ্ধ করে ফেলেন! শুধু তাই নয়, তিনি আবার ব্যবস্থাপনা কমিটিতে কো-অপ্ট হয়েছেন। অথচ গঠনতন্ত্র মোতাবেক তার অনেক আগেই সহযোগী সদস্য হবার কথা। আরেকজন ফটো সাংবাদিক এ কে এম মোহসিন। এক যুগেরও বেশী সময় ধরে কোন পত্রিকায় চাকরি করেন না। তার সদস্যপদও সহযোগী হবার কথা অথচ তিনিও ব্যবস্থাপনা কমিটিতে কো-অপ্ট হয়েছেন। আবার নিজের মেয়েকেও দিয়েছেন সদস্যপদ। অথচ তিন দশকের পুরনো সদস্যদের সদস্যপদ বাতিল করে উল্লাস করেন।

অনেকের মতে, তারা ক্লাবের মালিক-মোক্তার সেজে বসেছেন। কখন কে ক্লাবে ঢুকলো, কেউ মেহমান নিয়ে ঢুকলো কিনা সে সব তারা তদারকি করেন। নির্বাচিত হলে যে, তারা কি করতেন, সেটা বলাই বাহুল্য। অবশ্য তারা কোন গঠনতন্ত্রের ধার ধারেন না। তারা বলে থাকেন, ‘দেশে বিপ্লব হয়েছে। এখন আবার কিসের গঠনতন্ত্র? ছুঁড়ে ফেলেন এই গঠনতন্ত্র। আমরা যেভাবে চালাই, সেভাবেই ক্লাব চলতে থাকবে। (চলবে)