ঢাকা ০২:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতের দিকে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়াহ, কেমন থাকবে বাংলাদেশের আবহাওয়া

Reporter Name
  • Update Time : ০১:৪৩:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
  • / ৯ Time View

ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়াহ

দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর পাশে শ্রীলঙ্কা উপকূলে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়াহ উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে এগোচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে এগোতে থাকবে।

‘আশা করা যাচ্ছে, আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ঝড়টি দুর্বল হয়ে পড়বে। ডিটওয়াহর প্রভাব ভারতের তামিলনাড়ু, অন্ধ্র প্রদেশ ও দক্ষিণ ওডিশায় পড়তে পারে। বাংলাদেশে এর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে না,’ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক।

আজ শুক্রবার সকাল ৬টায় এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৯৫৫ কিলোমিটার, কক্সবাজার থেকে এক হাজার ৯০০ কিলোমিটার, মোংলা থেকে এক হাজার ৮৪৫ কিলোমিটার ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৮৪০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ রয়েছে ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কেন্দ্রের আশে পাশের এলাকায় সাগর উত্তাল থাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে গভীর সাগরে বিচরণ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

নাজমুল আরও বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে, এই ঝড়ের প্রভাব কমে এলে আগামী ২ ডিসেম্বর থেকে দেশের তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে।’

বন্যা-ভূমিধসে শ্রীলঙ্কায় ৫৬ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ২১

প্রবল বর্ষণে সৃষ্ট ভূমিধস ও বন্যায় শ্রীলঙ্কায় চলতি সপ্তাহে অন্তত ৫৬ জন মারা গেছেন। নিখোঁজ রয়েছেন ২১ জন। সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় এটি আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর একটি।

দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে শুক্রবার দ্বীপের মধ্য ও উত্তরাঞ্চলের কিছু এলাকায় ২০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হতে পারে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, শহরজুড়ে বন্যার পানিতে ভেসে যাচ্ছে বাড়িঘর।

নদ-নদীর পানি বাড়তে থাকায় নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের দ্রুত উঁচু স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (ডিএমসি)।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, তীব্র প্রতিকূল আবহাওয়ায় প্রায় ৪৪ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সারা দেশে প্রায় ২০ হাজার ৫০০ সেনা সদস্যকে উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণ কাজে মোতায়েন করা হয়েছে।

আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কেলানি নদীর নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে সেচ অধিদপ্তর। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে রাজধানী কলম্বোও রয়েছে।প্রদেশগুলোকে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রেলওয়ে বিভাগ ঘোষণা করেছে, জরুরি কয়েকটি সার্ভিস ছাড়া শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সব ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে।

এ-লেভেল (অ্যাডভান্সড লেভেল) পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে।

চলতি শতাব্দীতে শ্রীলঙ্কায় সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল ২০০৩ সালের জুন মাসে। সে সময় ২৫৪ জন প্রাণ হারান। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।

Please Share This Post in Your Social Media

ভারতের দিকে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়াহ, কেমন থাকবে বাংলাদেশের আবহাওয়া

Reporter Name
Update Time : ০১:৪৩:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫

দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর পাশে শ্রীলঙ্কা উপকূলে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়াহ উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে এগোচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে এগোতে থাকবে।

‘আশা করা যাচ্ছে, আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ঝড়টি দুর্বল হয়ে পড়বে। ডিটওয়াহর প্রভাব ভারতের তামিলনাড়ু, অন্ধ্র প্রদেশ ও দক্ষিণ ওডিশায় পড়তে পারে। বাংলাদেশে এর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে না,’ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক।

আজ শুক্রবার সকাল ৬টায় এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৯৫৫ কিলোমিটার, কক্সবাজার থেকে এক হাজার ৯০০ কিলোমিটার, মোংলা থেকে এক হাজার ৮৪৫ কিলোমিটার ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৮৪০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ রয়েছে ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কেন্দ্রের আশে পাশের এলাকায় সাগর উত্তাল থাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে গভীর সাগরে বিচরণ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

নাজমুল আরও বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে, এই ঝড়ের প্রভাব কমে এলে আগামী ২ ডিসেম্বর থেকে দেশের তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে।’

বন্যা-ভূমিধসে শ্রীলঙ্কায় ৫৬ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ২১

প্রবল বর্ষণে সৃষ্ট ভূমিধস ও বন্যায় শ্রীলঙ্কায় চলতি সপ্তাহে অন্তত ৫৬ জন মারা গেছেন। নিখোঁজ রয়েছেন ২১ জন। সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় এটি আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর একটি।

দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে শুক্রবার দ্বীপের মধ্য ও উত্তরাঞ্চলের কিছু এলাকায় ২০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হতে পারে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, শহরজুড়ে বন্যার পানিতে ভেসে যাচ্ছে বাড়িঘর।

নদ-নদীর পানি বাড়তে থাকায় নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের দ্রুত উঁচু স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (ডিএমসি)।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, তীব্র প্রতিকূল আবহাওয়ায় প্রায় ৪৪ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সারা দেশে প্রায় ২০ হাজার ৫০০ সেনা সদস্যকে উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণ কাজে মোতায়েন করা হয়েছে।

আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কেলানি নদীর নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে সেচ অধিদপ্তর। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে রাজধানী কলম্বোও রয়েছে।প্রদেশগুলোকে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রেলওয়ে বিভাগ ঘোষণা করেছে, জরুরি কয়েকটি সার্ভিস ছাড়া শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সব ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে।

এ-লেভেল (অ্যাডভান্সড লেভেল) পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে।

চলতি শতাব্দীতে শ্রীলঙ্কায় সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল ২০০৩ সালের জুন মাসে। সে সময় ২৫৪ জন প্রাণ হারান। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।