ঢাকা ০৫:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
সিলেট প্রেসক্লাব নির্বাচনে সভাপতি ইকরামুল কবির, সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় ১৪ জন নিহতের ঘটনায় চালক-হেলপার কারাগারে সূর্যের প্রখরতা আর ভ্যাপসা গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ বিএনপির লক্ষ্য একাত্তর মুছে সাত চল্লিশে ফিরে যাওয়া: শাহরিয়ার কবির  হানিমুনে যাওয়া হলো না নবদম্পতির, একই পরিবারের ৬ জন নিহত ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় নিহত ১৪ জনের মরদেহ হস্তান্তর বাংলাদেশে আশ্রয় নিলো আরও ৪৬ বিজিপি সদস্য মোদিকে নির্বাচনে নিষিদ্ধ করার দাবিতে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা মাদক ব্যবসায় বদির দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পেয়েছে সিআইডি বিয়ের মিথ্যে নাটক সাজিয়ে অবৈধ সর্ম্পক স্থাপন, আসামী গ্রেফতার

ভারতীয় সিরিয়াল দেখে ছাত্রকে হত্যা করল গৃহশিক্ষক

চাঁদপুর প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৮:১২:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ মে ২০২৩
  • / ৯১ Time View

নিহত আদিল মোহাম্মদ সোহান। ছবি: সংগৃহীত

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে আদিল মোহাম্মদ সোহান (৮) নামের এক শিশুকে হত্যা করেছে তারই গৃহশিক্ষক মো. আবদুল আহাদ (১৭)।

ভারতীয় সিরিয়াল সিআইডি দেখে আদিলকে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করতে চেয়েছিল ওই গৃহশিক্ষক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আজ বুধবার দুপুরে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিলন মাহমুদ সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

নিহত সোহান উপজেলার পৌর এলাকার রুদ্রগাঁও তালুকদার বাড়ির আনোয়ার হোসেনের ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে এসপি জানান, শিশু আদিল মোহাম্মদ সোহান গত ১৫ মে মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়। পরে তার স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খুঁজে না পেয়ে পরদিন ১৬ মে ফরিদগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেন। গত ১৯ মে সকালে নিখোঁজ শিশুর বাড়ির পাশের আবদুল মতিনের চাষকৃত জমি থেকে মাটিচাপা দেওয়া আদিলের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এরপর ওইদিনই শিশুর পিতা আনোয়ার হোসেন ফরিদগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশের একটি দল মামলাটির তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে পুলিশ শিশুটির গৃহশিক্ষক কিশোর আহাদকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।

জিজ্ঞাসাবাদে আটক মো. আবদুল আহাদ পুলিশকে জানায়, সে নিয়মিত ভারতীয় সিরিয়াল সিআইডি দেখত। সেই আলোকে ঘটনার দিন মাগরিবের পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে মসজিদ এলাকা থেকে আদিলকে বাড়ির পাশের নির্জন নার্সারিতে ধরে নিয়ে যায়। সেখানে আদিলের মুখ ও গলা চেপে ধরলে সে নিস্তেজ হয়ে যায়। ওই সময় আহাদ তার মায়ের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে আদিলের মায়ের নম্বরে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য কল দেয়। কিন্তু আদিলের মা তার সন্তানকে খুঁজতে যাওয়ার সময় মোবাইল ফোন ঘরে রেখে যান। যে কারণে ফোন রিসিভ হয়নি। পরে আদিলের পরিবারের সঙ্গে মিলে আহাদও খুঁজতে থাকার অভিনয় করে।

রাত ১২টার দিকে খোঁজা শেষে সবাই ঘরে চলে গেলে আহাদ ঘটনাস্থলে আদিলকে দেখতে গিয়ে দেখেন আদিল জীবিত নেই। এরপর সে রাত ১টার দিকে প্রতিবেশী রেনু বেগমের রান্না ঘর থেকে দা ও কোদাল এনে মাটি খুঁড়ে আবদুল মতিনের চাষকৃত জমিতে আদিলের মরদেহ মাটিচাপা দেয়। এরপর দা পরিস্কার করে ওই দা রান্না ঘরে রেখে দেয় এবং তার মায়ের ব্যবহৃত সীমকার্ড বাচ্চু মিয়ার পুকুরে ফেলে দেয়।

পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, কিশোর অপরাধী মো. আবদুল আহাদের বয়স ১৭ বছর ৬ মাস। সে একই এলাকায় শরীফ তালুকদারের ছেলে। এ বছর সে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। তার পরিবারে আর্থিক সংকট আছে। আদিলের গৃহশিক্ষক হওয়ার কারণে সে ওই পরিবারের ঘনিষ্ঠ ছিলো। সে জানতো আদিলের ঘরে কিছু টাকা আছে। যে কারণে সে এই পরিকল্পনা করে। সে সিরিয়ালে দেখেছে ৪০ সেকেন্ড মুখ চেপে ধরলে মারা যায় না এবং অজ্ঞান হয়ে থাকে। কিন্তু তার সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগেনি বরং শিশুটির মৃত্যু হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

ভারতীয় সিরিয়াল দেখে ছাত্রকে হত্যা করল গৃহশিক্ষক

Update Time : ০৮:১২:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ মে ২০২৩

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে আদিল মোহাম্মদ সোহান (৮) নামের এক শিশুকে হত্যা করেছে তারই গৃহশিক্ষক মো. আবদুল আহাদ (১৭)।

ভারতীয় সিরিয়াল সিআইডি দেখে আদিলকে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করতে চেয়েছিল ওই গৃহশিক্ষক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আজ বুধবার দুপুরে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিলন মাহমুদ সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

নিহত সোহান উপজেলার পৌর এলাকার রুদ্রগাঁও তালুকদার বাড়ির আনোয়ার হোসেনের ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে এসপি জানান, শিশু আদিল মোহাম্মদ সোহান গত ১৫ মে মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়। পরে তার স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খুঁজে না পেয়ে পরদিন ১৬ মে ফরিদগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেন। গত ১৯ মে সকালে নিখোঁজ শিশুর বাড়ির পাশের আবদুল মতিনের চাষকৃত জমি থেকে মাটিচাপা দেওয়া আদিলের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এরপর ওইদিনই শিশুর পিতা আনোয়ার হোসেন ফরিদগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশের একটি দল মামলাটির তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে পুলিশ শিশুটির গৃহশিক্ষক কিশোর আহাদকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।

জিজ্ঞাসাবাদে আটক মো. আবদুল আহাদ পুলিশকে জানায়, সে নিয়মিত ভারতীয় সিরিয়াল সিআইডি দেখত। সেই আলোকে ঘটনার দিন মাগরিবের পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে মসজিদ এলাকা থেকে আদিলকে বাড়ির পাশের নির্জন নার্সারিতে ধরে নিয়ে যায়। সেখানে আদিলের মুখ ও গলা চেপে ধরলে সে নিস্তেজ হয়ে যায়। ওই সময় আহাদ তার মায়ের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে আদিলের মায়ের নম্বরে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য কল দেয়। কিন্তু আদিলের মা তার সন্তানকে খুঁজতে যাওয়ার সময় মোবাইল ফোন ঘরে রেখে যান। যে কারণে ফোন রিসিভ হয়নি। পরে আদিলের পরিবারের সঙ্গে মিলে আহাদও খুঁজতে থাকার অভিনয় করে।

রাত ১২টার দিকে খোঁজা শেষে সবাই ঘরে চলে গেলে আহাদ ঘটনাস্থলে আদিলকে দেখতে গিয়ে দেখেন আদিল জীবিত নেই। এরপর সে রাত ১টার দিকে প্রতিবেশী রেনু বেগমের রান্না ঘর থেকে দা ও কোদাল এনে মাটি খুঁড়ে আবদুল মতিনের চাষকৃত জমিতে আদিলের মরদেহ মাটিচাপা দেয়। এরপর দা পরিস্কার করে ওই দা রান্না ঘরে রেখে দেয় এবং তার মায়ের ব্যবহৃত সীমকার্ড বাচ্চু মিয়ার পুকুরে ফেলে দেয়।

পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, কিশোর অপরাধী মো. আবদুল আহাদের বয়স ১৭ বছর ৬ মাস। সে একই এলাকায় শরীফ তালুকদারের ছেলে। এ বছর সে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। তার পরিবারে আর্থিক সংকট আছে। আদিলের গৃহশিক্ষক হওয়ার কারণে সে ওই পরিবারের ঘনিষ্ঠ ছিলো। সে জানতো আদিলের ঘরে কিছু টাকা আছে। যে কারণে সে এই পরিকল্পনা করে। সে সিরিয়ালে দেখেছে ৪০ সেকেন্ড মুখ চেপে ধরলে মারা যায় না এবং অজ্ঞান হয়ে থাকে। কিন্তু তার সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগেনি বরং শিশুটির মৃত্যু হয়।