ঢাকা ০৮:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
রমেকের ডরমেটরি থেকে চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী সোসাইটির আয়োজনে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সিডি এলবাম এর প্রকাশনা অনুষ্ঠিত ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ৬ নারী দুর্নীতিবাজদের লুটপাটের সুযোগ দিচ্ছে সরকার ইবিতে কোটা নিয়ে পরস্পরবিরোধী বিক্ষোভ সাজাপ্রাপ্ত আসামির জামিন হওয়ায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ভুক্তভোগী প‌রিবারের সংবাদ সম্মেলন ১৩ বৎসর পর সাবেক এমপি’র স্ত্রী হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন ভারতীয় কারখানায় তৈরি বিপুল পরিমান অবৈধ চোরাই ফোন উদ্ধার, গ্রেফতার ৪ দিনাজপুর বোর্ডে পরীক্ষার্থী ১১৩৪২০, বেড়েছে মেয়ে শিক্ষার্থী রংপুরে ৬ মাসের মধ্যে রোবটিক সার্জারী শুরু হতে যাচ্ছে

ভারতীয় কারখানায় তৈরি বিপুল পরিমান অবৈধ চোরাই ফোন উদ্ধার, গ্রেফতার ৪

শরিফুল হক পাভেল
  • Update Time : ০৩:৩৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ জুলাই ২০২৪
  • / ১২ Time View

ভারত থেকে কুমিল্লা সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে বিপুল পরিমাণ মোবাইলফোন বাংলাদেশে এনে তা কম দামে বিক্রয়কারী একটি মোবাইল চোরাকারবারীর চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়। এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে চোরাই মোবাইল উদ্ধারসহ চক্রের ৪ জনকে গ্রেফতার করে র‍্যাব-৩।

 

সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফয়জুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, গত ২৯ জুন রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ভারতীয় চোরাই মোবাইল চোরাকারবারী চক্রের মূলহোতা ১। আবু তাহের (২৬), ২। মোঃ মেহেদী হাসান (২২), ৩। মোঃ রুবেল হোসেন (২৯), ৪। মোঃ নূর নবী (৩২)কে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ৮০৮ টি চোরাই মোবাইলফোন, ২ টি প্রাইভেটকার এবং নগদ ৫,৩৬৯/-টাকা উদ্ধার করা হয়।

 

গ্রেফতারকৃত আসামিরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ভাবে চোরাইপথে কুমিল্লা সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ভারতীয় কারখানায় তৈরী আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ব্রান্ডের মোবাইল ফোন চোরাকারবারীর মাধ্যমে কুমিল্লা-ঢাকা রুট ব্যবহার করে রাজধানীতে নিয়ে আসে। মূলত সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার কারনে অধিক লাভের আশায় গ্রাহকের কাছে কমদামে বিক্রয় করা হয় ফলে বাজারে এ সকল মোবাইল ফোনের অনেক চাহিদা রয়েছে। এছাড়াও এ সকল ফোনের ওগঊও নম্বর বিটিআরসির নথিভুক্ত না থাকায় অপরাধীরা বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমের জন্য এধরনের মোবাইল ব্যবহার করে থাকে।

 

র‍্যাব জানায়, চোরাইপথে আনা এ সকল মোবাইল তারা রাজধানীর বিভিন্ন মোবাইল বিক্রয়কারী মার্কেটে সরবরাহ করত।

 

গ্রেফতারকৃত আবু তাহের ভারত থেকে মোবাইল ফোন চোরাকারবারী এই চক্রটির মূলহোতা। তাহের গত ৩ বছর আগে কুমিল্লা জেলার গৌরীপুর এলাকায় একটি মোবাইল শো-রুমে বিক্রয়কর্মী হিসেবে চাকরি শুরু করে। তখন থেকেই কুমিল্লার বিভিন্ন সীমান্ত পথে অবৈধভাবে সংঘবদ্ধ মোবাইল চোরাকারবারী চক্রের সাথে তার সখ্যতা গড়ে উঠে। একপর্যায়ে মোবাইলের শো-রুমে চাকুরির পাশাপাশি সে নিজেও এসব ভারতীয় ব্রান্ডের চোরাই মোবাইলের চালান আনিয়ে কুমিল্লাসহ রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে সরবরাহ করতে শুরু করে। অল্প সময়ে অধিক অর্থ লাভের আশায় এবং তার এই অপরাধ কর্মকান্ডটি বিস্তৃত করতে সে নিজেই একটি সংঘবদ্ধ চক্র গড়ে তোলে। তার নেতৃত্বে চক্রটি কুমিল্লা সীমান্ত এলাকা দিয়ে গত দেড়মাসে এ ধরনের ৫টি বড় চালান ঢাকায় সরবরাহ করেছে বলে আসামিরা স্বীকার করেছে।

 

গ্রেফতারকৃত মেহেদী চক্রটির মূলহোতা আবু তাহেরের অন্যতম সহযোগী। সে কুমিল্লা সদর দক্ষিণের বাসিন্দা। তার এক পরিচিত ভাইয়ের মাধ্যমে চোরাইপথে মোবাইল আমদানির চক্রে তাহেরের সাথে জড়িয়েছে বলে জানা যায়। গত দেড় মাসে সে তাহের এর সাথে মিলে ৫ টি বড় চালান নির্বিঘ্নে ঢাকায় সরবরাহ করেছে। তার দাবী সে কুমিল্লা সদরের জনৈক সাজ্জাদ ওরফে শাকিল কর্তৃক বেতনভুক্ত কর্মচারী তবে তার এই দাবীর সত্যতা পাওয়া যায়নি।

 

গ্রেফতারকৃত রুবেল একজন গাড়ি চালক। প্রথমে সে রেন্ট এ কার এর গাড়ি ভাড়ায় চালালেও পরবর্তীতে তাহের এর চক্রে যোগ দেয়ার পরে তাহের তাকে একটি প্রাইভেটকার ভাড়ায় চালাতে দেয়। সে প্রাইভেটকারটি চালানোর আড়ালে চোরাইপথে আসা মোবাইলসমূহ তাহেরের নির্দেশে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহের কাজ করে থাকে। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত নূরনবী ফেনী জেলার মহিপাল এলাকার জনৈক টিটু চৌধুরীর ব্যক্তিগত গাড়িচালক হিসেবে চাকুরি করত। তাহেরের সাথে পরিচয়ের পর অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের আশায় সে চোরাই মোবাইল ফোন পরিবহনের এই চক্রের প্রস্তাবে রাজি হয় এবং তাহেরের নির্দেশে বিভিন্ন সময় মোবাইল ফোনের চালান বিভিন্ন এলাকায় পৌছে দেয়ার কাজ শুরু করে।

Please Share This Post in Your Social Media

ভারতীয় কারখানায় তৈরি বিপুল পরিমান অবৈধ চোরাই ফোন উদ্ধার, গ্রেফতার ৪

Update Time : ০৩:৩৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ জুলাই ২০২৪

ভারত থেকে কুমিল্লা সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে বিপুল পরিমাণ মোবাইলফোন বাংলাদেশে এনে তা কম দামে বিক্রয়কারী একটি মোবাইল চোরাকারবারীর চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়। এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে চোরাই মোবাইল উদ্ধারসহ চক্রের ৪ জনকে গ্রেফতার করে র‍্যাব-৩।

 

সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফয়জুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, গত ২৯ জুন রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ভারতীয় চোরাই মোবাইল চোরাকারবারী চক্রের মূলহোতা ১। আবু তাহের (২৬), ২। মোঃ মেহেদী হাসান (২২), ৩। মোঃ রুবেল হোসেন (২৯), ৪। মোঃ নূর নবী (৩২)কে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ৮০৮ টি চোরাই মোবাইলফোন, ২ টি প্রাইভেটকার এবং নগদ ৫,৩৬৯/-টাকা উদ্ধার করা হয়।

 

গ্রেফতারকৃত আসামিরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ভাবে চোরাইপথে কুমিল্লা সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ভারতীয় কারখানায় তৈরী আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ব্রান্ডের মোবাইল ফোন চোরাকারবারীর মাধ্যমে কুমিল্লা-ঢাকা রুট ব্যবহার করে রাজধানীতে নিয়ে আসে। মূলত সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার কারনে অধিক লাভের আশায় গ্রাহকের কাছে কমদামে বিক্রয় করা হয় ফলে বাজারে এ সকল মোবাইল ফোনের অনেক চাহিদা রয়েছে। এছাড়াও এ সকল ফোনের ওগঊও নম্বর বিটিআরসির নথিভুক্ত না থাকায় অপরাধীরা বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমের জন্য এধরনের মোবাইল ব্যবহার করে থাকে।

 

র‍্যাব জানায়, চোরাইপথে আনা এ সকল মোবাইল তারা রাজধানীর বিভিন্ন মোবাইল বিক্রয়কারী মার্কেটে সরবরাহ করত।

 

গ্রেফতারকৃত আবু তাহের ভারত থেকে মোবাইল ফোন চোরাকারবারী এই চক্রটির মূলহোতা। তাহের গত ৩ বছর আগে কুমিল্লা জেলার গৌরীপুর এলাকায় একটি মোবাইল শো-রুমে বিক্রয়কর্মী হিসেবে চাকরি শুরু করে। তখন থেকেই কুমিল্লার বিভিন্ন সীমান্ত পথে অবৈধভাবে সংঘবদ্ধ মোবাইল চোরাকারবারী চক্রের সাথে তার সখ্যতা গড়ে উঠে। একপর্যায়ে মোবাইলের শো-রুমে চাকুরির পাশাপাশি সে নিজেও এসব ভারতীয় ব্রান্ডের চোরাই মোবাইলের চালান আনিয়ে কুমিল্লাসহ রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে সরবরাহ করতে শুরু করে। অল্প সময়ে অধিক অর্থ লাভের আশায় এবং তার এই অপরাধ কর্মকান্ডটি বিস্তৃত করতে সে নিজেই একটি সংঘবদ্ধ চক্র গড়ে তোলে। তার নেতৃত্বে চক্রটি কুমিল্লা সীমান্ত এলাকা দিয়ে গত দেড়মাসে এ ধরনের ৫টি বড় চালান ঢাকায় সরবরাহ করেছে বলে আসামিরা স্বীকার করেছে।

 

গ্রেফতারকৃত মেহেদী চক্রটির মূলহোতা আবু তাহেরের অন্যতম সহযোগী। সে কুমিল্লা সদর দক্ষিণের বাসিন্দা। তার এক পরিচিত ভাইয়ের মাধ্যমে চোরাইপথে মোবাইল আমদানির চক্রে তাহেরের সাথে জড়িয়েছে বলে জানা যায়। গত দেড় মাসে সে তাহের এর সাথে মিলে ৫ টি বড় চালান নির্বিঘ্নে ঢাকায় সরবরাহ করেছে। তার দাবী সে কুমিল্লা সদরের জনৈক সাজ্জাদ ওরফে শাকিল কর্তৃক বেতনভুক্ত কর্মচারী তবে তার এই দাবীর সত্যতা পাওয়া যায়নি।

 

গ্রেফতারকৃত রুবেল একজন গাড়ি চালক। প্রথমে সে রেন্ট এ কার এর গাড়ি ভাড়ায় চালালেও পরবর্তীতে তাহের এর চক্রে যোগ দেয়ার পরে তাহের তাকে একটি প্রাইভেটকার ভাড়ায় চালাতে দেয়। সে প্রাইভেটকারটি চালানোর আড়ালে চোরাইপথে আসা মোবাইলসমূহ তাহেরের নির্দেশে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহের কাজ করে থাকে। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত নূরনবী ফেনী জেলার মহিপাল এলাকার জনৈক টিটু চৌধুরীর ব্যক্তিগত গাড়িচালক হিসেবে চাকুরি করত। তাহেরের সাথে পরিচয়ের পর অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের আশায় সে চোরাই মোবাইল ফোন পরিবহনের এই চক্রের প্রস্তাবে রাজি হয় এবং তাহেরের নির্দেশে বিভিন্ন সময় মোবাইল ফোনের চালান বিভিন্ন এলাকায় পৌছে দেয়ার কাজ শুরু করে।