ঢাকা ০৬:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০২৪, ৪ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ফল প্রত্যাখ্যান পুননির্বাচনের দাবি

ব্যারিস্টার সোহরাব খান ও শাহিদা আক্তারের সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার
  • Update Time : ০৭:০৯:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ জুন ২০২৪
  • / ২৬ Time View

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাচনে আনারস প্রতীকে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ব্যারিস্টার সোহরাব খান চৌধুরী ও দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীকে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শাহিদা আক্তার উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু না হওয়ার প্রতিবাদে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন।

আজ রোববার ২ জুন জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনিয়মের অভিযোগ এনে পুননির্বাচনের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, অনিয়মের অভিযোগ এনে পুননির্বাচনের দাবি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনের দিন লিখিত ও মৌখিকভাবে রিটার্নিং অফিসার বরাবর ভোটে দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, উপজেলা নির্বাচনে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেয়াসহ ভোটারদের ভোট প্রদানে বাধা দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক জালভোট দেওয়া হয়েছে। যা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে গেলে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।

তারা বলেছেন, কেন্দ্রে ভোটারদের আসতে বাধা দিয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী। পোলিং এজেন্টদেরও বের করে দেয়া হয়েছে। তারা বলেন, সারাদিন আমরা ঘুরেছি একটা ফেয়ার নির্বাচন করার জন্য। কিন্তু নিজ চোখে দেখেছি অনেক কেন্দ্রে কোনো ভোটার সেখানে নেই। ছোট ছোট ছেলেরা সেখানে ভোট দিচ্ছে।
তারা আরও বলেন, এই নির্বাচন আমরা মেনে নিতে পারি না। এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করলাম। আমাদের দেশে আইন আছে। সেই বিচারের অপেক্ষায় রইলাম।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো :

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ, আস্সালামু আলাইকুম
আপনারা জানেন ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের ৩য় ধাপে সারা দেশের বিভিন্ন উপজেলার সাথে কুমিল্লা-৫ ও কুমল্লা-৪ নির্বাচনী এলাকার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা ও দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদেও গত ২৯ মে ২০২৪ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে কুমিল্লা থেকে প্লট একে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও স্ট্রাইকিং ফোর্স সহ এমনই এক ছকে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রেরণ করে এবং আমাদের স্থানীয় এমপি (কুমিল্লা-৫) আবু জাহের স্থানীয় প্রশাসনকে বায়েস্ট করে প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার দিয়ে নির্লজ্জভাবে ও কুমিল্লা শহরের সন্ত্রাসীদের এলাকায় এনে জোড়পূর্বক কেন্দ্র দখল করে সীল মেরে আমার আনারস প্রতীকের নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেয় ।
প্রিয় জাতীর বিবেকগণ,
জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কণ্যা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, প্রিয় নেত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন যাতে এমপির স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী না হয় এবং নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু করতে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্থানীয় এমপি আবু জাহের তার আপন ভাতিজা অপিকে (ঘোড়া প্রতীক) বিজয়ী করার জন্য প্লট একে পরিকল্পনা করে কুমিল্লা শহরের সমস্ত পুলিশের ডিউটি বিন্যাস করা হয় ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার প্রতিটি কেন্দ্রে এমনকি প্রশাসনিক সুবিধা নিতে জেলা প্রশাসনকে দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটগুলোকে নিয়োগ করা হয় ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রশাসনের প্রকাশ্য সহায়তা নিয়ে আমাকে পরাজিত করিয়েছে।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,
দুপুর দুইটার পর প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসাররা নিজেরাই নির্লজ্জভাবে ভোট কেটে ঘোড়া প্রতীকে সীল মেরে ভোট বাক্সে ডুকিয়েছে প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রে। তার মধ্যে সারাদিনই প্রক্সিভোট দেয়া তো লেগেই ছিলো। আমার প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীর নিজ এলাকা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকা দেয়া স্বত্বেও সেখানে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি উপরন্তু ছাপ্পা মেরে ভোট কেঁটে নিতে উৎসাহী হয়ে ব্যালটে ঘোড়া প্রতীকে সীল মেরে ভোট বাক্সে ঢুকিয়ে দেয় ৷
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,
আমার প্রধান প্রতিদ্বন্ধী ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা আবু তৈয়ব অপির চাচা স্বতন্ত্র এমপি আবু জাহের নির্বাচন কমিশনকে তোয়াক্কা না করে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ভাতিজার পক্ষে নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন এবং টি আর কাবিখা বা বিভিন্ন বরাদ্দ দেয়ার নাম করে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদেরকে ও সাধারণ জনগণকে যা জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কমিশনে বার বার অভিযোগ করেও কোন ফলাফল পাইনি। নির্বাচনী প্রচারনার পুরোটা সময় এমপি জাহের স্থানীয় ও কুমিল্লা শহরের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে। তারপরও যেহেতু ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার জনগণ আমার পক্ষে ছিল, তাই সকল ভয় ভীতির উর্দ্ধে উঠে আমি নির্বাচনী প্রচারণার মাঠে ছিলাম।
বিশ্বাস ছিল, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে প্রশাসন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ করবে। কিন্তু নির্বাচনের দুই দিন আগে থেকেই স্থানীয় এমপির সন্ত্রাসী বাহিনী বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করে বলেছে, কেন্দ্রে লাশ পড়বে, বিরাট গন্ডগোল হবে ইত্যাদি। একই সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রিজাইডিং অফিসারসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা কর্মচারিরা গণতন্ত্রের কবর রচনা করে এমপি জাহেরের ভাতিজার পক্ষে কাজ করে এবং তাদের ঘোড়া প্রতীকের পক্ষে প্রকাশ্য সীল মেরে বাক্স ভরাট করতে সহায়তা করে। অধিকাংশ কেন্দ্র থেকে সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যেই আমার আনারস প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দেয়। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন গুলোর কেন্দ্র গুলোতে চোরাকারবারি ও মাদক বিক্রেতা ও মাদক সেবীদের কেন্দ্রের বাহিরে পাহাড়ায় বসিয়ে তারা ভিতরে ঘোড়া মার্কার সিল মেরেছে।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,
আমি নির্বাচনে হারিনি । আমাকে হারানো হয়েছে। কুমিল্লা জেলার প্রশাসনের মাধ্যমে প্ল্যান প্রোগ্রাম ও প্লট একে তারা জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে বিরোধী দল বিএনপির ভোট বর্জনের আন্দোলনের যৌক্তিকতা তুলে ধরতে সহায়তা করেছে।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
এই সরকারের কমিটম্যান্ট ছিলো ফ্রি এন্ড ফেয়ার নির্বাচনের কিন্তু জেলা প্রশাসনের নিরংকুশ ছত্রছায়ায় ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুকুলে রেখে ভোট কাটার মহাউৎসবে মেতে উঠে এমপি আবু জাহের ও তার ভাতিজা আবু তৈয়ব অপি। ম্যাজিস্ট্রেটরা সার্বক্ষণিক এমপি সাহেবের সাথে ফোনে তাদের কৃত অপকর্মের আপডেট দিতে থাকে, যা উপস্থিত জনতা শুনতে পায় ৷ ভোট চলাকালীন সময় কুমিল্লা শহরের বহিরাগতরা এসে দুপুর ২টার পর ভোটকেন্দ্র দখলে নেয় এবং ভোট কাটায় অংশ নেয় তাতে প্রিজাইডিং পোলিং এজেন্টরা মিলে সহযোগিতা করে।
প্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা,
যেহেতু গত ২৯ মে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় জনগণ ভোট দিতে পারেনি ও আমাদের স্থানীয় এমপি (কুমিল্লা-৫) আবু জাহেরের সন্ত্রাসী বাহিনীর জবর দখল করে ভোট কারচুপির কারণে, তাই আমি এই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি। যদি নির্বাচন কমিশন এই নির্বাচন বাতিল না করে তাহলে ভোটের প্রতি মানুষের এখনো যেই নূন্যতম আস্থা আছে সেটাও নষ্ট হয়ে যাবে। এমনিতেই একটি অংশ রাজনীতি বিমুখ হয়ে পড়েছে, এই অবস্থা চলতে থাকলে ভদ্র লোকেরা আর নির্বাচন করতে আসবে না। গণতন্ত্রের স্বার্থে এবং মানুষের ভোটাধিকার রক্ষা করার স্বার্থে মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার মহোদয়ের কাছে পুনরায় কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

Please Share This Post in Your Social Media

ফল প্রত্যাখ্যান পুননির্বাচনের দাবি

ব্যারিস্টার সোহরাব খান ও শাহিদা আক্তারের সংবাদ সম্মেলন

Update Time : ০৭:০৯:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ জুন ২০২৪

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাচনে আনারস প্রতীকে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ব্যারিস্টার সোহরাব খান চৌধুরী ও দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীকে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শাহিদা আক্তার উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু না হওয়ার প্রতিবাদে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন।

আজ রোববার ২ জুন জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনিয়মের অভিযোগ এনে পুননির্বাচনের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, অনিয়মের অভিযোগ এনে পুননির্বাচনের দাবি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনের দিন লিখিত ও মৌখিকভাবে রিটার্নিং অফিসার বরাবর ভোটে দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, উপজেলা নির্বাচনে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেয়াসহ ভোটারদের ভোট প্রদানে বাধা দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক জালভোট দেওয়া হয়েছে। যা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে গেলে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।

তারা বলেছেন, কেন্দ্রে ভোটারদের আসতে বাধা দিয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী। পোলিং এজেন্টদেরও বের করে দেয়া হয়েছে। তারা বলেন, সারাদিন আমরা ঘুরেছি একটা ফেয়ার নির্বাচন করার জন্য। কিন্তু নিজ চোখে দেখেছি অনেক কেন্দ্রে কোনো ভোটার সেখানে নেই। ছোট ছোট ছেলেরা সেখানে ভোট দিচ্ছে।
তারা আরও বলেন, এই নির্বাচন আমরা মেনে নিতে পারি না। এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করলাম। আমাদের দেশে আইন আছে। সেই বিচারের অপেক্ষায় রইলাম।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো :

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ, আস্সালামু আলাইকুম
আপনারা জানেন ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের ৩য় ধাপে সারা দেশের বিভিন্ন উপজেলার সাথে কুমিল্লা-৫ ও কুমল্লা-৪ নির্বাচনী এলাকার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা ও দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদেও গত ২৯ মে ২০২৪ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে কুমিল্লা থেকে প্লট একে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও স্ট্রাইকিং ফোর্স সহ এমনই এক ছকে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রেরণ করে এবং আমাদের স্থানীয় এমপি (কুমিল্লা-৫) আবু জাহের স্থানীয় প্রশাসনকে বায়েস্ট করে প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার দিয়ে নির্লজ্জভাবে ও কুমিল্লা শহরের সন্ত্রাসীদের এলাকায় এনে জোড়পূর্বক কেন্দ্র দখল করে সীল মেরে আমার আনারস প্রতীকের নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেয় ।
প্রিয় জাতীর বিবেকগণ,
জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কণ্যা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, প্রিয় নেত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন যাতে এমপির স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী না হয় এবং নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু করতে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্থানীয় এমপি আবু জাহের তার আপন ভাতিজা অপিকে (ঘোড়া প্রতীক) বিজয়ী করার জন্য প্লট একে পরিকল্পনা করে কুমিল্লা শহরের সমস্ত পুলিশের ডিউটি বিন্যাস করা হয় ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার প্রতিটি কেন্দ্রে এমনকি প্রশাসনিক সুবিধা নিতে জেলা প্রশাসনকে দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটগুলোকে নিয়োগ করা হয় ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রশাসনের প্রকাশ্য সহায়তা নিয়ে আমাকে পরাজিত করিয়েছে।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,
দুপুর দুইটার পর প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসাররা নিজেরাই নির্লজ্জভাবে ভোট কেটে ঘোড়া প্রতীকে সীল মেরে ভোট বাক্সে ডুকিয়েছে প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রে। তার মধ্যে সারাদিনই প্রক্সিভোট দেয়া তো লেগেই ছিলো। আমার প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীর নিজ এলাকা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকা দেয়া স্বত্বেও সেখানে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি উপরন্তু ছাপ্পা মেরে ভোট কেঁটে নিতে উৎসাহী হয়ে ব্যালটে ঘোড়া প্রতীকে সীল মেরে ভোট বাক্সে ঢুকিয়ে দেয় ৷
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,
আমার প্রধান প্রতিদ্বন্ধী ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা আবু তৈয়ব অপির চাচা স্বতন্ত্র এমপি আবু জাহের নির্বাচন কমিশনকে তোয়াক্কা না করে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ভাতিজার পক্ষে নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন এবং টি আর কাবিখা বা বিভিন্ন বরাদ্দ দেয়ার নাম করে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদেরকে ও সাধারণ জনগণকে যা জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কমিশনে বার বার অভিযোগ করেও কোন ফলাফল পাইনি। নির্বাচনী প্রচারনার পুরোটা সময় এমপি জাহের স্থানীয় ও কুমিল্লা শহরের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে। তারপরও যেহেতু ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার জনগণ আমার পক্ষে ছিল, তাই সকল ভয় ভীতির উর্দ্ধে উঠে আমি নির্বাচনী প্রচারণার মাঠে ছিলাম।
বিশ্বাস ছিল, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে প্রশাসন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ করবে। কিন্তু নির্বাচনের দুই দিন আগে থেকেই স্থানীয় এমপির সন্ত্রাসী বাহিনী বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করে বলেছে, কেন্দ্রে লাশ পড়বে, বিরাট গন্ডগোল হবে ইত্যাদি। একই সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রিজাইডিং অফিসারসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা কর্মচারিরা গণতন্ত্রের কবর রচনা করে এমপি জাহেরের ভাতিজার পক্ষে কাজ করে এবং তাদের ঘোড়া প্রতীকের পক্ষে প্রকাশ্য সীল মেরে বাক্স ভরাট করতে সহায়তা করে। অধিকাংশ কেন্দ্র থেকে সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যেই আমার আনারস প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দেয়। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন গুলোর কেন্দ্র গুলোতে চোরাকারবারি ও মাদক বিক্রেতা ও মাদক সেবীদের কেন্দ্রের বাহিরে পাহাড়ায় বসিয়ে তারা ভিতরে ঘোড়া মার্কার সিল মেরেছে।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,
আমি নির্বাচনে হারিনি । আমাকে হারানো হয়েছে। কুমিল্লা জেলার প্রশাসনের মাধ্যমে প্ল্যান প্রোগ্রাম ও প্লট একে তারা জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে বিরোধী দল বিএনপির ভোট বর্জনের আন্দোলনের যৌক্তিকতা তুলে ধরতে সহায়তা করেছে।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
এই সরকারের কমিটম্যান্ট ছিলো ফ্রি এন্ড ফেয়ার নির্বাচনের কিন্তু জেলা প্রশাসনের নিরংকুশ ছত্রছায়ায় ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুকুলে রেখে ভোট কাটার মহাউৎসবে মেতে উঠে এমপি আবু জাহের ও তার ভাতিজা আবু তৈয়ব অপি। ম্যাজিস্ট্রেটরা সার্বক্ষণিক এমপি সাহেবের সাথে ফোনে তাদের কৃত অপকর্মের আপডেট দিতে থাকে, যা উপস্থিত জনতা শুনতে পায় ৷ ভোট চলাকালীন সময় কুমিল্লা শহরের বহিরাগতরা এসে দুপুর ২টার পর ভোটকেন্দ্র দখলে নেয় এবং ভোট কাটায় অংশ নেয় তাতে প্রিজাইডিং পোলিং এজেন্টরা মিলে সহযোগিতা করে।
প্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা,
যেহেতু গত ২৯ মে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় জনগণ ভোট দিতে পারেনি ও আমাদের স্থানীয় এমপি (কুমিল্লা-৫) আবু জাহেরের সন্ত্রাসী বাহিনীর জবর দখল করে ভোট কারচুপির কারণে, তাই আমি এই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি। যদি নির্বাচন কমিশন এই নির্বাচন বাতিল না করে তাহলে ভোটের প্রতি মানুষের এখনো যেই নূন্যতম আস্থা আছে সেটাও নষ্ট হয়ে যাবে। এমনিতেই একটি অংশ রাজনীতি বিমুখ হয়ে পড়েছে, এই অবস্থা চলতে থাকলে ভদ্র লোকেরা আর নির্বাচন করতে আসবে না। গণতন্ত্রের স্বার্থে এবং মানুষের ভোটাধিকার রক্ষা করার স্বার্থে মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার মহোদয়ের কাছে পুনরায় কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।