ঢাকা ০৮:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্যর্থ প্রশাসনের প্রতীক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা : ব্যারিস্টার ফুয়াদ

কামরুল হাসান টিটু, রংপুর ব্যুরো
  • Update Time : ০৬:১২:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১০১ Time View

আমার বাংলাদেশ-এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, অনেক উপদেষ্টাকে তাদের কর্মকান্ডের জন্য জেলে যাওয়া লাগতে পারে।

তিনি বলেছেন, ‘রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যর্থদের দায় এড়ানো যায় না, আর এ ব্যর্থতার দায়ে শীর্ষে রয়েছেন বর্তমান সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।তাই ব্যর্থদের তালিকা করা হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে গোল্ড মেডেল দিতে হবে। তার দ্বারা জাতীয় নির্বাচন কিভাবে সম্ভব। তাই রাষ্ট্রের  দায়িত্বে থেকে ভাল কাজ করতে পারবে এমন ব্যক্তিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়িত্ব দিতে হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের বিচার প্রক্রিয়াকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে।’

বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি হলরুমে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে জাতীয় নির্বাচনে নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর শঙ্কা তৈরি হয়েছে।দেশের জনগণ এখন উদ্বিগ্ন। নির্বাচন কমিশনের চেয়ে বেশি অনাস্থা এখন নিরাপত্তাব্যবস্থার ওপর। জনগণ মনে করে, প্রশাসন নিরপেক্ষ না থাকলে সুষ্ঠু ভোট সম্ভব নয়।’অভিযোগ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীর বিচারপ্রক্রিয়াকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন, যা রাষ্ট্রীয় ন্যায়বিচার ব্যবস্থার জন্য বিপজ্জনক উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারে।
আইনের শাসন যদি প্রভাবশালীদের হাতে বন্দি হয়ে পড়ে, তাহলে সাধারণ মানুষের ন্যায়বিচার আর থাকবে না।’

ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ডিজিএফআইয়ের ৪-৫ জন লে. জেনারেল ভারতে পালিয়ে গিয়েছে। এতে করে এ রাষ্ট্রের নিরাপত্তা চরম হুমকিতে রয়েছে। তারা শত্রু রাষ্ট্রের কাছে দেশের গোপন তথ্য বিক্রি করে দিয়েছে। ভারত সরকারের সহযোগিতায় ও আওয়ামী লীগের পৃষ্ঠপোষকতায় ভারতে তারা ভাল লাইফ লীড করছে।

তিনি বলেন, অপরাধের সঙ্গে জড়িত সেনা কর্মকর্তা, পরিবহন ব্যবসায়ী কিংবা যেই হোক না কেন, সবাইকে সমান আইনের মুখোমুখি হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা দেখছি, কিছু প্রভাবশালী অপরাধীকে জেলে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এটা এক ধরনের বৈষম্য, যা রাষ্ট্রীয় নীতির পরিপন্থী। এবি পার্টি জনগণের অধিকারের রাজনীতি করে এবং দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য সম অধিকার ও ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা দিতে চায়।

আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যেখানে আইন সবার জন্য সমান হবে—অপরাধীর পরিচয় নয়, অপরাধই হবে বিচারযোগ্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা যারা অপরাধের সাথে জড়িত তাদের বিচার শুরু হয়েছে। তবে তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে এসি গাড়িতে করে, এসেছেন হলিউডের নায়কদের মত সাজগোজ করে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীর ভেতরে থাকা বাড়িকে সাব জেল ঘোষণা করেছেন। যাদের ক্ষমতা নেই, গরীবেরা থাকবে কাশিমপুর কারাগারে আর ক্ষমতাবানরা থাকবে ফাইভ স্টার জেলে। বাসায় বসে আইফোন ব্যবহার করে বট আইডি দিয়ে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র করছে তারা, এটি হতে পারে না।’

ফুয়াদ বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিশৃঙ্খলা চলছে। শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষকদের দাবি মেনে নেয়ায় তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। শিক্ষকরা বাড়ি ফিরে গেছেন। আর অনেক দাবী ন্যায্যতার সাথে মানা হয়নি। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সমাজসেবা ও মহিলা সংস্থার পিডি, ডিপিডি, সচিব থেকে শুরু করে রুট লেভেল পর্যন্ত সিন্ডিকেট রয়েছে। তারা অর্থের বিনিময়ে জনবল নিয়োগসহ দূর্নীতি করছেন।

তিনি আরও বলেন, উত্তরাঞ্চলে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এখানে শিল্প-কারখানা হলে বেকারত্ব ঘুচবে। তরুনরা মাদকে ঝুঁকবে না। ফলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। এছাড়া সুস্বাস্থ্যের জন্য ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত খেলাধুলার বিস্তৃতি ঘটাতে হবে। কৃষকদের ন্যায্য মূল্যে সার সরবরাহ করতে হবে। শিক্ষার উন্নয়ন করলে দেশ এগিয়ে যাবে।

এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ‘আমরা রাজনীতি করতে এসেছি মানুষের অধিকার ফেরানোর জন্য। যারা দুর্নীতিকে ঢাল বানিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়, তাদের সময় শেষ হয়ে আসছে। জনগণ এখন পরিবর্তন চায়, জবাবদিহি চায়। রাষ্ট্রযন্ত্রকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার বন্ধ না করলে আগামী নির্বাচনও বিতর্কিত হয়ে পড়বে। এবি পার্টি চায় একটি নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন, যেখানে জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবে।’
সভায় আরো বক্তব্য দেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য মাহবুবুর রহমান মাহবুব, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান এবং রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক। মতবিনিময় সভায় এবি পার্টির রংপুর মহানগর ও জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

ব্যর্থ প্রশাসনের প্রতীক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা : ব্যারিস্টার ফুয়াদ

কামরুল হাসান টিটু, রংপুর ব্যুরো
Update Time : ০৬:১২:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

আমার বাংলাদেশ-এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, অনেক উপদেষ্টাকে তাদের কর্মকান্ডের জন্য জেলে যাওয়া লাগতে পারে।

তিনি বলেছেন, ‘রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যর্থদের দায় এড়ানো যায় না, আর এ ব্যর্থতার দায়ে শীর্ষে রয়েছেন বর্তমান সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।তাই ব্যর্থদের তালিকা করা হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে গোল্ড মেডেল দিতে হবে। তার দ্বারা জাতীয় নির্বাচন কিভাবে সম্ভব। তাই রাষ্ট্রের  দায়িত্বে থেকে ভাল কাজ করতে পারবে এমন ব্যক্তিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়িত্ব দিতে হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের বিচার প্রক্রিয়াকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে।’

বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি হলরুমে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে জাতীয় নির্বাচনে নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর শঙ্কা তৈরি হয়েছে।দেশের জনগণ এখন উদ্বিগ্ন। নির্বাচন কমিশনের চেয়ে বেশি অনাস্থা এখন নিরাপত্তাব্যবস্থার ওপর। জনগণ মনে করে, প্রশাসন নিরপেক্ষ না থাকলে সুষ্ঠু ভোট সম্ভব নয়।’অভিযোগ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীর বিচারপ্রক্রিয়াকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন, যা রাষ্ট্রীয় ন্যায়বিচার ব্যবস্থার জন্য বিপজ্জনক উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারে।
আইনের শাসন যদি প্রভাবশালীদের হাতে বন্দি হয়ে পড়ে, তাহলে সাধারণ মানুষের ন্যায়বিচার আর থাকবে না।’

ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ডিজিএফআইয়ের ৪-৫ জন লে. জেনারেল ভারতে পালিয়ে গিয়েছে। এতে করে এ রাষ্ট্রের নিরাপত্তা চরম হুমকিতে রয়েছে। তারা শত্রু রাষ্ট্রের কাছে দেশের গোপন তথ্য বিক্রি করে দিয়েছে। ভারত সরকারের সহযোগিতায় ও আওয়ামী লীগের পৃষ্ঠপোষকতায় ভারতে তারা ভাল লাইফ লীড করছে।

তিনি বলেন, অপরাধের সঙ্গে জড়িত সেনা কর্মকর্তা, পরিবহন ব্যবসায়ী কিংবা যেই হোক না কেন, সবাইকে সমান আইনের মুখোমুখি হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা দেখছি, কিছু প্রভাবশালী অপরাধীকে জেলে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এটা এক ধরনের বৈষম্য, যা রাষ্ট্রীয় নীতির পরিপন্থী। এবি পার্টি জনগণের অধিকারের রাজনীতি করে এবং দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য সম অধিকার ও ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা দিতে চায়।

আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যেখানে আইন সবার জন্য সমান হবে—অপরাধীর পরিচয় নয়, অপরাধই হবে বিচারযোগ্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা যারা অপরাধের সাথে জড়িত তাদের বিচার শুরু হয়েছে। তবে তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে এসি গাড়িতে করে, এসেছেন হলিউডের নায়কদের মত সাজগোজ করে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীর ভেতরে থাকা বাড়িকে সাব জেল ঘোষণা করেছেন। যাদের ক্ষমতা নেই, গরীবেরা থাকবে কাশিমপুর কারাগারে আর ক্ষমতাবানরা থাকবে ফাইভ স্টার জেলে। বাসায় বসে আইফোন ব্যবহার করে বট আইডি দিয়ে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র করছে তারা, এটি হতে পারে না।’

ফুয়াদ বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিশৃঙ্খলা চলছে। শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষকদের দাবি মেনে নেয়ায় তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। শিক্ষকরা বাড়ি ফিরে গেছেন। আর অনেক দাবী ন্যায্যতার সাথে মানা হয়নি। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সমাজসেবা ও মহিলা সংস্থার পিডি, ডিপিডি, সচিব থেকে শুরু করে রুট লেভেল পর্যন্ত সিন্ডিকেট রয়েছে। তারা অর্থের বিনিময়ে জনবল নিয়োগসহ দূর্নীতি করছেন।

তিনি আরও বলেন, উত্তরাঞ্চলে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এখানে শিল্প-কারখানা হলে বেকারত্ব ঘুচবে। তরুনরা মাদকে ঝুঁকবে না। ফলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। এছাড়া সুস্বাস্থ্যের জন্য ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত খেলাধুলার বিস্তৃতি ঘটাতে হবে। কৃষকদের ন্যায্য মূল্যে সার সরবরাহ করতে হবে। শিক্ষার উন্নয়ন করলে দেশ এগিয়ে যাবে।

এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ‘আমরা রাজনীতি করতে এসেছি মানুষের অধিকার ফেরানোর জন্য। যারা দুর্নীতিকে ঢাল বানিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়, তাদের সময় শেষ হয়ে আসছে। জনগণ এখন পরিবর্তন চায়, জবাবদিহি চায়। রাষ্ট্রযন্ত্রকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার বন্ধ না করলে আগামী নির্বাচনও বিতর্কিত হয়ে পড়বে। এবি পার্টি চায় একটি নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন, যেখানে জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবে।’
সভায় আরো বক্তব্য দেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য মাহবুবুর রহমান মাহবুব, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান এবং রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক। মতবিনিময় সভায় এবি পার্টির রংপুর মহানগর ও জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।