ঢাকা ০৬:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
রপ্তানির আড়ালে মানিলন্ডারিং

বেক্সিমকোর সালমানসহ ২৮ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১৭ মামলা

নওরোজ ডেস্ক
  • Update Time : ০৫:৩২:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৮ Time View

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তদন্তে বেক্সিমকো গ্রুপের বিরুদ্ধে বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য। সিআইডি জানিয়েছে, বেক্সিমকোর কয়েকটি প্রতিষ্ঠান পণ্য রপ্তানির আড়ালে গত ১২ বছরে তিনটি দেশে ৯৫৭ কোটি টাকা পাচার করেছে। এই ঘটনায় গ্রুপটির মালিক-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সিআইডির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

জানা গেছে, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও বিধি মোতাবেক পরিচালিত সিআইডির অনুসন্ধানে বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান এবং তার ভাই বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান এ এস এফ রহমানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বেক্সিমকো গ্রুপের মালিকানাধীন মোট ১৭টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে জনতা ব্যাংক থেকে ৯৩টি এলসি/সেলস কন্ট্রাক্ট (বিক্রয় চুক্তি) নিয়ে এর বিপরীতে পণ্য রপ্তানি করে। কিন্তু নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও রপ্তানিমূল্যের প্রায় ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশে না এনে বিদেশে পাচারের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।

অনুসন্ধানে প্রাপ্ত রেকর্ড পর্যালোচনায় দেখা যায়- অ্যাডভেঞ্চার গার্মেন্টস লিমিটেড, অ্যাপোলো অ্যাপারেলস লিমিটেড, অটাম লুপ অ্যাপারেলস লিমিটেড, বেক্সটেক্স গার্মেন্টস লিমিটেড, কসমোপলিটান অ্যাপারেলস লিমিটেড, কোজি অ্যাপারেলস লিমিটেড, এসেস ফ্যাশন লিমিটেড, ইন্টারন্যাশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপারেলস লিমিটেড, কাঁচপুর অ্যাপারেলস লিমিটেড, মিডওয়েস্ট গার্মেন্টস লিমিটেড, পিয়ারলেস গার্মেন্টস লিমিটেড, পিঙ্ক মেকার গার্মেন্টস লিমিটেড, প্ল্যাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেড, স্কাইনেট অ্যাপারেলস লিমিটেড, স্প্রিংফুল অ্যাপারেলস লিমিটেড, আরবান ফ্যাশনস লিমিটেড ও উইন্টার স্প্রিন্ট গার্মেন্টস লিমিটেডের মাধ্যমে প্রায় ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যমানের পণ্য সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে।

বাংলাদেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী পণ্য রপ্তানি করার পর রপ্তানিমূল্য চার মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন করার বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও যথাসময়ে রপ্তানিমূল্য বাংলাদেশে প্রত্যাবাসন না করে সালমান এফ রহমানসহ বেক্সিমকো গ্রুপের অন্য স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এই অর্থ বিদেশে পাচার করার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

বিদেশে রপ্তানি হওয়া পণ্যগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ পণ্যই বেক্সিমকো গ্রুপের মালিক সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান এবং এ এস এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের যৌথ মালিকানাধীন আর আর গ্লোবাল ট্রেডিং (এফজেডই)-এর শারজাহ, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরবের ঠিকানায় রপ্তানি করা হয়েছে।

এ ছাড়া জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, ইউকে, তুরস্ক, শ্রীলংকাসহ বিভিন্ন দেশেও পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে রপ্তানিমূল্য বাংলাদেশে না এনে ওই আসামিরা পারস্পরিক যোগসাজশে বিদেশে পাচার করেছেন।

বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সোহেল রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান তার ভাই সালমান এফ রহমান। দুবাইয়ে আর আর গ্লোবালের মূল প্রতিষ্ঠান আর আর হোল্ডিংসের প্রতিষ্ঠাতা সোহেল রহমানের ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমান ও সালমান এফ রহমানের ছেলে শায়ান এফ রহমান। দুবাইয়ের আল গারহৌদ এলাকার জালফা বিল্ডিংয়ের ঠিকানায় আর আর হোল্ডিংসের নিবন্ধন হয়। ৫ আগস্টের আগে আর আর হোল্ডিংসের ওয়েবসাইটে প্রতিষ্ঠানটির নানা ব্যবসার ও প্রতিষ্ঠাতাদের তথ্য দেওয়া ছিল। পরে প্রতিষ্ঠাতাসহ কিছু তথ্য সরিয়ে ফেলা হয়। প্রতিষ্ঠানটি তেল-গ্যাস, পোশাকসহ নানা খাতের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত বলে সেখানে উল্লেখ আছে।

নওরোজ/এসএইচ

Please Share This Post in Your Social Media

রপ্তানির আড়ালে মানিলন্ডারিং

বেক্সিমকোর সালমানসহ ২৮ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১৭ মামলা

নওরোজ ডেস্ক
Update Time : ০৫:৩২:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তদন্তে বেক্সিমকো গ্রুপের বিরুদ্ধে বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য। সিআইডি জানিয়েছে, বেক্সিমকোর কয়েকটি প্রতিষ্ঠান পণ্য রপ্তানির আড়ালে গত ১২ বছরে তিনটি দেশে ৯৫৭ কোটি টাকা পাচার করেছে। এই ঘটনায় গ্রুপটির মালিক-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সিআইডির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

জানা গেছে, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও বিধি মোতাবেক পরিচালিত সিআইডির অনুসন্ধানে বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান এবং তার ভাই বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান এ এস এফ রহমানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বেক্সিমকো গ্রুপের মালিকানাধীন মোট ১৭টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে জনতা ব্যাংক থেকে ৯৩টি এলসি/সেলস কন্ট্রাক্ট (বিক্রয় চুক্তি) নিয়ে এর বিপরীতে পণ্য রপ্তানি করে। কিন্তু নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও রপ্তানিমূল্যের প্রায় ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশে না এনে বিদেশে পাচারের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।

অনুসন্ধানে প্রাপ্ত রেকর্ড পর্যালোচনায় দেখা যায়- অ্যাডভেঞ্চার গার্মেন্টস লিমিটেড, অ্যাপোলো অ্যাপারেলস লিমিটেড, অটাম লুপ অ্যাপারেলস লিমিটেড, বেক্সটেক্স গার্মেন্টস লিমিটেড, কসমোপলিটান অ্যাপারেলস লিমিটেড, কোজি অ্যাপারেলস লিমিটেড, এসেস ফ্যাশন লিমিটেড, ইন্টারন্যাশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপারেলস লিমিটেড, কাঁচপুর অ্যাপারেলস লিমিটেড, মিডওয়েস্ট গার্মেন্টস লিমিটেড, পিয়ারলেস গার্মেন্টস লিমিটেড, পিঙ্ক মেকার গার্মেন্টস লিমিটেড, প্ল্যাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেড, স্কাইনেট অ্যাপারেলস লিমিটেড, স্প্রিংফুল অ্যাপারেলস লিমিটেড, আরবান ফ্যাশনস লিমিটেড ও উইন্টার স্প্রিন্ট গার্মেন্টস লিমিটেডের মাধ্যমে প্রায় ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যমানের পণ্য সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে।

বাংলাদেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী পণ্য রপ্তানি করার পর রপ্তানিমূল্য চার মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন করার বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও যথাসময়ে রপ্তানিমূল্য বাংলাদেশে প্রত্যাবাসন না করে সালমান এফ রহমানসহ বেক্সিমকো গ্রুপের অন্য স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এই অর্থ বিদেশে পাচার করার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

বিদেশে রপ্তানি হওয়া পণ্যগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ পণ্যই বেক্সিমকো গ্রুপের মালিক সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান এবং এ এস এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের যৌথ মালিকানাধীন আর আর গ্লোবাল ট্রেডিং (এফজেডই)-এর শারজাহ, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরবের ঠিকানায় রপ্তানি করা হয়েছে।

এ ছাড়া জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, ইউকে, তুরস্ক, শ্রীলংকাসহ বিভিন্ন দেশেও পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে রপ্তানিমূল্য বাংলাদেশে না এনে ওই আসামিরা পারস্পরিক যোগসাজশে বিদেশে পাচার করেছেন।

বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সোহেল রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান তার ভাই সালমান এফ রহমান। দুবাইয়ে আর আর গ্লোবালের মূল প্রতিষ্ঠান আর আর হোল্ডিংসের প্রতিষ্ঠাতা সোহেল রহমানের ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমান ও সালমান এফ রহমানের ছেলে শায়ান এফ রহমান। দুবাইয়ের আল গারহৌদ এলাকার জালফা বিল্ডিংয়ের ঠিকানায় আর আর হোল্ডিংসের নিবন্ধন হয়। ৫ আগস্টের আগে আর আর হোল্ডিংসের ওয়েবসাইটে প্রতিষ্ঠানটির নানা ব্যবসার ও প্রতিষ্ঠাতাদের তথ্য দেওয়া ছিল। পরে প্রতিষ্ঠাতাসহ কিছু তথ্য সরিয়ে ফেলা হয়। প্রতিষ্ঠানটি তেল-গ্যাস, পোশাকসহ নানা খাতের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত বলে সেখানে উল্লেখ আছে।

নওরোজ/এসএইচ