বীর মুক্তিযোদ্ধা লায়ন আকবর হোসেন আর নেই

- Update Time : ০৭:৪৪:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫
- / ১৩ Time View
রংপুরের বিশিষ্ট সাংবাদিক, সমাজসেবক, সংগঠক ও মানবিক কাজে আজীবন সক্রিয় থাকা রনাঙ্গনের যোদ্ধা বীরমুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন অবশেষে হার মানলেন দুরারোগ্য ক্যান্সারের কাছে। চলে গেলে না ফেরার দেশে। গতকাল বুধবার সকাল ১০ টা ২০ মিনিটে দিকে রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। ইন্না লিল্লাহী ওয়া ইন্না ইলাইহির রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭২ বছর। তিনি স্ত্রী সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে দুরারোগ্য ক্যান্সারসহ নানাবিধ রোগে ভুগছিলেন। সর্বশেষ তিনি রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিসিইউতে লাইফসাপোর্টে ছিলেন।
রংপুর নগরীর ইসলামপুর হনুমানতলায় বসবাস করলেও আকবর হোসেন এর জন্ম নীলকন্ঠ সোটাপীর এলাকায়। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। দেশমাতৃকার টানে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন তিনি। স্বধীনতা পরবর্তী সময়ে তিনি ছিলেন জাতীয় ও আঞ্চলিক গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনের নেতৃত্বে। সাংবাদিকতা করেছেন দীর্ঘদিন। তিনি রংপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক (১৯৮২–৮৩) ছিলেন। প্রতিষ্ঠাতাকালীন সময়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বৃহত্তর রংপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক (১৯৭২–৭৫), সুজন রংপুর জেলার সভাপতি ও দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির জেলার সাধারণ সম্পাদক, প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বধির সংঘের সভাপতি ছিলেন। শিক্ষানুরাগী হিসেবে আকবর হোসেন লায়ন্স ক্লাব রংপুরের প্রেসিডেন্ট ও লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি, নীলকন্ঠ নিউ মডেল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। শিক্ষা অনুরাগী হিসেবে তিনি রঙ্গপুর সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক, শিখা সংসদের সাধারণ সম্পাদক, রংপুর পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক, বিভাগীয় লেখক পরিষদের উপদেষ্টা ও সম্মিলিত লেখক সমাজ রংপুরের উপদেষ্টাসহ নানা সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।
মরহুম আকবর হোসেন এর ১ম জানাযা বাদ আছর পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে এবং দ্বিতীয় জানাযা বাদ মাগরিব নীলকন্ঠ সোটাপীর এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে নীলকন্ঠে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন কার্য সম্পুন্ন হয়। এর আগে বিকেল ৪ টায় লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে তাঁর মরদেহ নেওয়া হয়। বিকেল সাড়ে ৪ টায় সর্বস্তরের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নেওয়া হয় পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে। সেখানেই গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
এদিকে বীরমুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন এর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সাহিত্য সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অঙ্গনে। সুজন মহানগরের সভাপতি ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, ওনার সাথে সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন করেছি একসাথে। তিনি আমাদের অভিভাবক ছিলেন। ওনার পরামর্শে আমরা কাজ করেছি। উনি একজন দক্ষ সংগঠক ছিলেন। ওনাকে হারিয়ে আমরা সত্যিকার অর্থে একজন অভিভাবক হারালাম। প্রয়াত আকবর হোসেনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এডভোকেট জোবায়দুল ইসলাম বুলেট বলেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেনের মৃত্যুতে আমরা পরোপকারী প্রকৃত অভিভাবক হারাইলাম। তিনি আমাদের সবসময় আপদে বিপদে আগলে রাখতেন। তাঁর মৃত্যুতে অপূরণীয় ক্ষতি হলো, যা পূরণ হওয়ার মতো নয়। প্রাবন্ধিক ও প্রয়াত আকবর হোসেন এর বন্ধু রেজাউল করিম মুকুল জানান, বীরমুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেনের সাথে দীর্ঘদিনের পথচলা। একসাথে বেড়ে ওঠা। তিনি আমাদের বন্ধু হলেও অভিভাবক ছিলেন আমাদের। আমরা ওনাকে হারিয়ে গভীর শোকাহত।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়