ঢাকা ০৬:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিয়ারিং প্যাড কী, মেট্রোরেল ও সেতু নির্মাণে কেন ব্যবহার করা হয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৬:০২:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৩৯৩ Time View

ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর ফার্মগেট অংশে মেট্রোরেলের পিলারের একটি ‘বিয়ারিং প্যাড’ খুলে নিচে পড়ে আবুল কালাম (৩৫) নামে এক পথচারী নিহত হয়েছেন। তার বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঈশ্বরকাঠি গ্রামে।

এ ঘটনার পর আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর মেট্রোরেলে একটি ‘বিয়ারিং প্যাড’ খুলে পড়ে। এ কারণে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১১ ঘণ্টা বন্ধ থাকে ট্রেন চলাচল। সেবার প্রাণহানি না ঘটলেও এবার একজন নিহত হন।

তবে পাঁচ সপ্তাহের ব্যবধানে মেট্রো রেললাইনের বিয়ারিং প্যাড দুইবার খসে পড়ার পর এর কাঠামো ও কাজ নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে গুরুতর নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি হয়।

মেট্রো রেললাইনের নিচের অংশে উড়ালপথের পিলারের সঙ্গে রাবারের তৈরি ‘বিয়ারিং প্যাড’ থাকে। এটা সেতু বা উড়াল সেতুতে বসানো হয় কম্পন প্রতিরোধের জন্য। এগুলোর প্রতিটি আনুমানিক ১৪০ থেকে ১৫০ কেজি ওজনের হয়। এসব ‘বিয়ারিং প্যাড’ ছাড়া ট্রেন চালালে উড়ালপথ দেবে যাওয়া কিংবা স্থানচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

ইলাস্টোমোরিক বিয়ারিং প্যাড নিওপ্রেন বা প্রাকৃতিক রাবার দিয়ে তৈরি, যা পিয়ার ও ভায়াডাক্টের সংযোগস্থলে বসানো হয়। কোনোটির ভেতরে কয়েক পরতে থাকে স্টিলের কাঠামো, আর ওপরে থাকে রাবার।

ঝাঁকুনি প্রতিরোধের পাশাপাশি সেতু বা ফ্লাইওভারকে টেকসই করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ‘বিয়ারিং প্যাড’। দীর্ঘদিন ব্যবহারের কারণে সেতু বা ফ্লাইওভারের অবকাঠামোর যে ক্ষয় হয়, ‘বিয়ারিং প্যাড’ সেটিকেও প্রতিরোধ করে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী কামরুল হাসান বলেন, ‘কোনো সেতুর পিয়ার ও গার্ডারের মধ্যে স্থিতিস্থাপকতা সৃষ্টির জন্য এই ধরনের রাবার প্যাড ব্যবহার করা হয়। এগুলো বাংলাদেশেও তৈরি হয়, আবার বিদেশ থেকেও আনানো যায়। এক একটি প্যাডের ওজন হতে পারে ৫০ থেকে ২০০ কেজি পর্যন্ত। বুয়েট এসব রাবার প্যাডের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে ছাড়পত্র দেয়।’

Please Share This Post in Your Social Media

বিয়ারিং প্যাড কী, মেট্রোরেল ও সেতু নির্মাণে কেন ব্যবহার করা হয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
Update Time : ০৬:০২:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

রাজধানীর ফার্মগেট অংশে মেট্রোরেলের পিলারের একটি ‘বিয়ারিং প্যাড’ খুলে নিচে পড়ে আবুল কালাম (৩৫) নামে এক পথচারী নিহত হয়েছেন। তার বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঈশ্বরকাঠি গ্রামে।

এ ঘটনার পর আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর মেট্রোরেলে একটি ‘বিয়ারিং প্যাড’ খুলে পড়ে। এ কারণে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১১ ঘণ্টা বন্ধ থাকে ট্রেন চলাচল। সেবার প্রাণহানি না ঘটলেও এবার একজন নিহত হন।

তবে পাঁচ সপ্তাহের ব্যবধানে মেট্রো রেললাইনের বিয়ারিং প্যাড দুইবার খসে পড়ার পর এর কাঠামো ও কাজ নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে গুরুতর নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি হয়।

মেট্রো রেললাইনের নিচের অংশে উড়ালপথের পিলারের সঙ্গে রাবারের তৈরি ‘বিয়ারিং প্যাড’ থাকে। এটা সেতু বা উড়াল সেতুতে বসানো হয় কম্পন প্রতিরোধের জন্য। এগুলোর প্রতিটি আনুমানিক ১৪০ থেকে ১৫০ কেজি ওজনের হয়। এসব ‘বিয়ারিং প্যাড’ ছাড়া ট্রেন চালালে উড়ালপথ দেবে যাওয়া কিংবা স্থানচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

ইলাস্টোমোরিক বিয়ারিং প্যাড নিওপ্রেন বা প্রাকৃতিক রাবার দিয়ে তৈরি, যা পিয়ার ও ভায়াডাক্টের সংযোগস্থলে বসানো হয়। কোনোটির ভেতরে কয়েক পরতে থাকে স্টিলের কাঠামো, আর ওপরে থাকে রাবার।

ঝাঁকুনি প্রতিরোধের পাশাপাশি সেতু বা ফ্লাইওভারকে টেকসই করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ‘বিয়ারিং প্যাড’। দীর্ঘদিন ব্যবহারের কারণে সেতু বা ফ্লাইওভারের অবকাঠামোর যে ক্ষয় হয়, ‘বিয়ারিং প্যাড’ সেটিকেও প্রতিরোধ করে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী কামরুল হাসান বলেন, ‘কোনো সেতুর পিয়ার ও গার্ডারের মধ্যে স্থিতিস্থাপকতা সৃষ্টির জন্য এই ধরনের রাবার প্যাড ব্যবহার করা হয়। এগুলো বাংলাদেশেও তৈরি হয়, আবার বিদেশ থেকেও আনানো যায়। এক একটি প্যাডের ওজন হতে পারে ৫০ থেকে ২০০ কেজি পর্যন্ত। বুয়েট এসব রাবার প্যাডের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে ছাড়পত্র দেয়।’