ঢাকা ০৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এবার তিন আসনে লড়বেন খালেদা জিয়া

রাজনীতি ডেস্ক
  • Update Time : ০৮:২০:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১২৪ Time View

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে তিনটি সংসদীয় আসন থেকে প্রার্থী হচ্ছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

ফেনী-১, বগুড়া-৭ ও দিনাজপুর-৩ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

সোমবার বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ২৩৭ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ পাঁচটি আসনে প্রার্থী হতে পারেন। এর আগে বিভিন্ন সময়ে খালেদা জিয়া পাঁচটি আসনেও নির্বাচন করেছেন; কখনো হারেননি।

খালেদা জিয়ার পৈত্রিক আদি নিবাস ফেনীতে। আর তার স্বামী বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পৈত্রিক বাড়ি বগুড়ায়।

খালেদা জিয়ার জন্ম, শৈশব ও পড়াশোনা দিনাজপুর শহরে হলেও এর আগে তিনি কখনো এখান থেকে প্রার্থী হননি। দিনাজপুর-৩ আসন থেকে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে খালেদা জিয়ার বড়বোন খুরশীদ জাহান হক প্রার্থী হন।

বগুড়া-৬: প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান বগুড়া ‘বিএনপির ঘাঁটি’ হিসেবে পরিচিত দলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই।

খালেদা জিয়া সেই ১৯৯১ সাল থেকে শ্বশুর বাড়ি বগুড়ার দুটি আসনে নির্বাচন করে আসছেন। বগুড়া-৬ (সদর) এবং বগুড়া-৭ (গাবতলী ও শাহজাহানপুর) আসনে তিনি কখনো পরাজয়ের মুখ দেখেননি।

বগুড়া-৭ সংসদীয় আসনের বিগত ১২টি নির্বাচনের মধ্যে বিএনপি ছয়বার (এর মধ্যে খালেদা জিয়া পাঁচবার), জাতীয় পার্টি তিনবার, আওয়ামী লীগ দুবার এবং স্বতস্ত্র (বিএনপির সমর্থনে) প্রার্থী একবার জয় পেয়েছেন।

খালেদা জিয়া চারবার বগুড়া-৬ আসন নিজের হাতে রেখে বগুড়া-৭ আসনটি ছেড়ে দিয়েছেন।

বগুড়া-৭ আসনে চারবারের মধ্যে একবার (২০০৮ সালের) উপ-নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন মওদুদ আহমদ। বাকি তিনবার (১৯৯১, ১৯৯৬-জুন এবং ২০০১ সালের) জয়ী হয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু।

এবার বগুড়া-৬ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে খালেদার ছেলে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

১১ অক্টোবর ঢাকার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বগুড়ার সাতটি আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সভা ছিল। সেই সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন তারেক রহমান। সভায় মোট ২২ জন নেতা উপস্থিত ছিলেন।

সেই সভার তিন দিন পর পাঁচজনকে ফোন করে নির্বাচনি প্রচার জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে বগুড়া-৬ এবং বগুড়া-৭ নিয়ে কাউকে ফোন দেওয়া হয়নি। তখন থেকেই স্থানীয় নেতাকর্মীদের ধারণা ছিল, হয়ত এ দুটি আসনে ‘জিয়া পরিবারের’ কেউ প্রার্থী হবেন।

ফেনী-১: ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলা নিয়ে গঠিত ফেনী-১ আসন। ১৯৭৩ সালের পর থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিগত ৫০ বছরের নির্বাচনে বেশিরভাগ সময় বিএনপির প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।

বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই আসন থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ফেনী জেলায় খালেদা জিয়ার আদি পৈত্রিক নিবাস। ফলে নির্বাচন এলেই এখানে স্লোগান উঠে ‘ফেনীর মেয়ে খালেদা, গর্ব মোদের আলাদা’।

১৯৯১, ১৯৯৬, ১৯৯৬ (জুন), ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়া এ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে খালেদা জিয়া আসনটি ছেড়ে দিলে উপ-নির্বাচনে বিজয়ী হন তার ছোট ভাই সাঈদ ইস্কান্দার।

২০১৪ সালে বিএনপি ভোট বর্জন করেছিল। ২০১৮ সালের দণ্ডিত হওয়ায় খালেদা জিয়া এখানে প্রার্থী হতে পারেননি। তখন প্রার্থী হয়েছিলেন রফিকুল ইসলাম মজনু।

দিনাজপুর-৩: আসনটি সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত।

১২টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এখানে বিএনপি ১৯৭৯, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে জয়লাভ করে। ১৯৭৯ সালে প্রথমবার বিএনপির প্রার্থী হিসেবে রেজওয়ানুল হক ইদু চৌধুরী জয়লাভ করেন।পরের দুবার জয় পান খুরশীদ জাহান হক।

Please Share This Post in Your Social Media

এবার তিন আসনে লড়বেন খালেদা জিয়া

রাজনীতি ডেস্ক
Update Time : ০৮:২০:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে তিনটি সংসদীয় আসন থেকে প্রার্থী হচ্ছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

ফেনী-১, বগুড়া-৭ ও দিনাজপুর-৩ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

সোমবার বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ২৩৭ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ পাঁচটি আসনে প্রার্থী হতে পারেন। এর আগে বিভিন্ন সময়ে খালেদা জিয়া পাঁচটি আসনেও নির্বাচন করেছেন; কখনো হারেননি।

খালেদা জিয়ার পৈত্রিক আদি নিবাস ফেনীতে। আর তার স্বামী বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পৈত্রিক বাড়ি বগুড়ায়।

খালেদা জিয়ার জন্ম, শৈশব ও পড়াশোনা দিনাজপুর শহরে হলেও এর আগে তিনি কখনো এখান থেকে প্রার্থী হননি। দিনাজপুর-৩ আসন থেকে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে খালেদা জিয়ার বড়বোন খুরশীদ জাহান হক প্রার্থী হন।

বগুড়া-৬: প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান বগুড়া ‘বিএনপির ঘাঁটি’ হিসেবে পরিচিত দলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই।

খালেদা জিয়া সেই ১৯৯১ সাল থেকে শ্বশুর বাড়ি বগুড়ার দুটি আসনে নির্বাচন করে আসছেন। বগুড়া-৬ (সদর) এবং বগুড়া-৭ (গাবতলী ও শাহজাহানপুর) আসনে তিনি কখনো পরাজয়ের মুখ দেখেননি।

বগুড়া-৭ সংসদীয় আসনের বিগত ১২টি নির্বাচনের মধ্যে বিএনপি ছয়বার (এর মধ্যে খালেদা জিয়া পাঁচবার), জাতীয় পার্টি তিনবার, আওয়ামী লীগ দুবার এবং স্বতস্ত্র (বিএনপির সমর্থনে) প্রার্থী একবার জয় পেয়েছেন।

খালেদা জিয়া চারবার বগুড়া-৬ আসন নিজের হাতে রেখে বগুড়া-৭ আসনটি ছেড়ে দিয়েছেন।

বগুড়া-৭ আসনে চারবারের মধ্যে একবার (২০০৮ সালের) উপ-নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন মওদুদ আহমদ। বাকি তিনবার (১৯৯১, ১৯৯৬-জুন এবং ২০০১ সালের) জয়ী হয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু।

এবার বগুড়া-৬ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে খালেদার ছেলে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

১১ অক্টোবর ঢাকার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বগুড়ার সাতটি আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সভা ছিল। সেই সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন তারেক রহমান। সভায় মোট ২২ জন নেতা উপস্থিত ছিলেন।

সেই সভার তিন দিন পর পাঁচজনকে ফোন করে নির্বাচনি প্রচার জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে বগুড়া-৬ এবং বগুড়া-৭ নিয়ে কাউকে ফোন দেওয়া হয়নি। তখন থেকেই স্থানীয় নেতাকর্মীদের ধারণা ছিল, হয়ত এ দুটি আসনে ‘জিয়া পরিবারের’ কেউ প্রার্থী হবেন।

ফেনী-১: ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলা নিয়ে গঠিত ফেনী-১ আসন। ১৯৭৩ সালের পর থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিগত ৫০ বছরের নির্বাচনে বেশিরভাগ সময় বিএনপির প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।

বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই আসন থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ফেনী জেলায় খালেদা জিয়ার আদি পৈত্রিক নিবাস। ফলে নির্বাচন এলেই এখানে স্লোগান উঠে ‘ফেনীর মেয়ে খালেদা, গর্ব মোদের আলাদা’।

১৯৯১, ১৯৯৬, ১৯৯৬ (জুন), ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়া এ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে খালেদা জিয়া আসনটি ছেড়ে দিলে উপ-নির্বাচনে বিজয়ী হন তার ছোট ভাই সাঈদ ইস্কান্দার।

২০১৪ সালে বিএনপি ভোট বর্জন করেছিল। ২০১৮ সালের দণ্ডিত হওয়ায় খালেদা জিয়া এখানে প্রার্থী হতে পারেননি। তখন প্রার্থী হয়েছিলেন রফিকুল ইসলাম মজনু।

দিনাজপুর-৩: আসনটি সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত।

১২টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এখানে বিএনপি ১৯৭৯, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে জয়লাভ করে। ১৯৭৯ সালে প্রথমবার বিএনপির প্রার্থী হিসেবে রেজওয়ানুল হক ইদু চৌধুরী জয়লাভ করেন।পরের দুবার জয় পান খুরশীদ জাহান হক।