ঢাকা ০৫:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্যালাইন -ওষুধ সংকটে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত

এস এম সাইফুল ইসলাম কবির। বাগেরহাট :
  • Update Time : ০৫:০২:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ১৬৪ Time View

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জউপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্যালাইন ও ওষুধ সংকট দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ডেঙ্গু রোগীদের জন্য ব্যবহৃত নরমাল স্যালাইন (০ক্স৯% সোডিয়াম ক্লোরাইড) সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। দীর্ঘদিন যাবৎ হাসপাতালে এ স্যালাইন না থাকায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর স্বজনদের বাহিরের ফার্মেসিতে ছুটাছুটি করতে দেখা যায়।

ফলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ৫ লক্ষাধিক উপজেলাবাসী। সঙ্কট সমাধানে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হচ্ছে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।

অনেক রোগীর স্বজনদের বাগেরহাট, খুলনা ও ঢাকা থেকে নানা বিড়ম্বনার শিকার হয়ে চড়া মূল্যে স্যালাইন সংগ্রহ করতে হচ্ছে।

সরকারিভাবে ওষুধ সরবরাহ কম হওয়ায় চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এতে করে হাসপাতালের চিকিৎসারতদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পাওয়ার একমাত্র ভরসা ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির বর্হিঃবিভাগ, আন্তঃবিভাগ ও জরুরী বিভাগে দৈনিক গড়ে প্রায় ৪৫০-৬০০ রোগী বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন।

সরকারি বরাদ্দকৃত ওষুধ দিয়ে প্রতিদিন রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। একজন রোগীর জন্য যেখানে দুটি স্যালাইন প্রয়োজন, সেখানে একটি করে স্যালাইন দিতে পারছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক রোগী ও স্বজনের অভিযোগ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়ার পর প্রয়োজনীয় বেশির ভাগ ওষুধই হাসপাতালের চিকিৎসকদের দেওয়া স্লিপের মাধ্যমে বাইরের ফার্মেসিগুলো থেকে টাকা দিয়ে কিনে আনতে হচ্ছে।

প্রয়োজনীয় ওষুধ না পেয়ে প্রান্তিক শ্রেণির রোগীরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বিনা চিকিৎসায় বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। যাদের সামর্থ্য আছে তারা বাইরের দোকান থেকে ওষুধ কিনে নিচ্ছেন।

যাদের সামর্থ্য নেই তাদের বিনা চিকিৎসায় বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে।এদিকে স্যালাইনের অভাবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধগুলো বাইরের ফার্মেসিগুলোতেও পাওয়া যাচ্ছে না। আবার পাওয়া গেলেও দাম বেশি নিচ্ছেন তারা।

স্যালাইন সংকটের বিষয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (আবাসিক) মেডিকেল অফিসার ডাঃশেখ নাদিরুজ্জামান আকাশ বলেন, অনেক গরীব অসহায় ও দুস্থ রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে জরুরী ভিত্তিতে এখানে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন।

বিশেষ করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেকাংশে বেড়ে যাওয়ায় নরমাল স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট দেখা দিয়েছে।

আমাদের স্টকে যা ছিল তা অনেক পূর্বেই শেষ হয়ে গেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শর্মী রায় বলেন, প্রয়োজনীয় ওষুধ ও স্যালাইনের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও সবসময় প্রকৃত চাহিদা অনুযায়ী ওষুধ ও স্যালাইন সরকারি ওষুধ সাপ্লাই কোম্পানি (ইডিসিএল) থেকে পাওয়া যায় না।

তবুও সবসময় চেষ্টা থাকে জনগণের কষ্ট লাঘব করা, যাতে তারা আরও সেবা পায়। চাহিদানুযায়ী সবসময় প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া সরকারের পক্ষে সম্ভব হয় না।

Please Share This Post in Your Social Media

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্যালাইন -ওষুধ সংকটে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত

এস এম সাইফুল ইসলাম কবির। বাগেরহাট :
Update Time : ০৫:০২:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জউপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্যালাইন ও ওষুধ সংকট দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ডেঙ্গু রোগীদের জন্য ব্যবহৃত নরমাল স্যালাইন (০ক্স৯% সোডিয়াম ক্লোরাইড) সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। দীর্ঘদিন যাবৎ হাসপাতালে এ স্যালাইন না থাকায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর স্বজনদের বাহিরের ফার্মেসিতে ছুটাছুটি করতে দেখা যায়।

ফলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ৫ লক্ষাধিক উপজেলাবাসী। সঙ্কট সমাধানে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হচ্ছে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।

অনেক রোগীর স্বজনদের বাগেরহাট, খুলনা ও ঢাকা থেকে নানা বিড়ম্বনার শিকার হয়ে চড়া মূল্যে স্যালাইন সংগ্রহ করতে হচ্ছে।

সরকারিভাবে ওষুধ সরবরাহ কম হওয়ায় চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এতে করে হাসপাতালের চিকিৎসারতদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পাওয়ার একমাত্র ভরসা ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির বর্হিঃবিভাগ, আন্তঃবিভাগ ও জরুরী বিভাগে দৈনিক গড়ে প্রায় ৪৫০-৬০০ রোগী বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন।

সরকারি বরাদ্দকৃত ওষুধ দিয়ে প্রতিদিন রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। একজন রোগীর জন্য যেখানে দুটি স্যালাইন প্রয়োজন, সেখানে একটি করে স্যালাইন দিতে পারছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক রোগী ও স্বজনের অভিযোগ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়ার পর প্রয়োজনীয় বেশির ভাগ ওষুধই হাসপাতালের চিকিৎসকদের দেওয়া স্লিপের মাধ্যমে বাইরের ফার্মেসিগুলো থেকে টাকা দিয়ে কিনে আনতে হচ্ছে।

প্রয়োজনীয় ওষুধ না পেয়ে প্রান্তিক শ্রেণির রোগীরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বিনা চিকিৎসায় বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। যাদের সামর্থ্য আছে তারা বাইরের দোকান থেকে ওষুধ কিনে নিচ্ছেন।

যাদের সামর্থ্য নেই তাদের বিনা চিকিৎসায় বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে।এদিকে স্যালাইনের অভাবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধগুলো বাইরের ফার্মেসিগুলোতেও পাওয়া যাচ্ছে না। আবার পাওয়া গেলেও দাম বেশি নিচ্ছেন তারা।

স্যালাইন সংকটের বিষয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (আবাসিক) মেডিকেল অফিসার ডাঃশেখ নাদিরুজ্জামান আকাশ বলেন, অনেক গরীব অসহায় ও দুস্থ রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে জরুরী ভিত্তিতে এখানে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন।

বিশেষ করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেকাংশে বেড়ে যাওয়ায় নরমাল স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট দেখা দিয়েছে।

আমাদের স্টকে যা ছিল তা অনেক পূর্বেই শেষ হয়ে গেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শর্মী রায় বলেন, প্রয়োজনীয় ওষুধ ও স্যালাইনের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও সবসময় প্রকৃত চাহিদা অনুযায়ী ওষুধ ও স্যালাইন সরকারি ওষুধ সাপ্লাই কোম্পানি (ইডিসিএল) থেকে পাওয়া যায় না।

তবুও সবসময় চেষ্টা থাকে জনগণের কষ্ট লাঘব করা, যাতে তারা আরও সেবা পায়। চাহিদানুযায়ী সবসময় প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া সরকারের পক্ষে সম্ভব হয় না।