বাকৃবির গণতদন্ত কমিশনের তদন্ত থমকে, ন্যায়বিচার নিয়ে ধোঁয়াশা

- Update Time : ১০:১৬:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫
- / ১০৬ Time View
বিগত সাড়ে ১৫ বছরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) সংঘঠিত সকল প্রকার দুর্নীতি, জুলুম-নির্যাতন এবং আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়মের বিষয় তদন্ত করে সুপারিশ প্রদানের জন্য গঠিত হয় গণতদন্ত কমিশন।
গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. হেলাল উদ্দীন স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে ২৬ সদস্য বিশিষ্ট গণতদন্ত কমিশন গঠনের বিষয়টি প্রকাশ করা হয়। কমিশন গঠনের প্রায় আট মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি দেখা যায় নি । ফলে বিভিন্ন মহলে চলছে আলোচনা সমালোচনা এবং ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিয়ে শঙ্কার অভিযোগ করেছে অনেকেই। এছাড়াও বিভিন্ন অনিয়মে অভিযুক্তদের কাছ থেকে একটি পক্ষ অর্থ গ্রহণ করে মিটমাট করার অভিযোগও উঠে আসছে বিভিন্ন মাধ্যমে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গণতদন্ত কমিশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রোফরেস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ড. জি এম মুজিবর রহমানকে চেয়ারম্যান ও কৃষি সম্প্রসারণ শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান সরকারকে সদস্য-সচিব হিসেবে মনোনীত করা হয়। এছাড়াও উপদেষ্টা হিসেবে ময়মনসিংহ জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট মো. খালেদ হোসেন টিপুকে মনোনীত করে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকদের সমন্বয়ে ২৬ সদস্য বিশিষ্ট ওই কমিশন গঠন করা হয়।
অনলাইন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ বক্স স্থাপন করে প্রথম ধাপে শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সশরীরে অভিযোগ গ্রহণ শুরু হয় গত বছরের ৯ অক্টোবর । যা শেষ হয় গত বছরের ১৬ নভেম্বর। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের থেকে অভিযোগ গ্রহণ করা হবে বলে ওই সময় জানানো হয়।
এরপরে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই তদন্ত কমিশনের । যার ফলে ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিয়ে ধোঁয়াশা ও শঙ্কা তৈরি হয়েছে অভিযোগকারী শিক্ষার্থীদের মনে।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিশনের সদস্য-সচিব অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান সরকার বলেন, তদন্ত কমিশনের কাজের অগ্রগতি হচ্ছে, সামনে খুব দ্রুতই দৃশ্যমান হবে। আমাদের টিচিং, রিসার্চসহ নানা কাজের পাশাপাশি এই তদন্ত কমিশনের কাজ করতে হয়। তবে আগামী সিন্ডিকেট মিটিং হয়ে গেলে কাজ দৃশ্যমান হবে বলে আশা করা যায়। তদন্ত কমিশনে শতাধিক অভিযোগ পড়েছে, এর মধ্যে অনেক আছে চিরকুট ধরনের যেগুলো বিবেচনায় নেওয়া যাবে না। তবে আমরা তিন চারটা বড় অভিযোগ নিয়ে কাজ করছি। একটা ঘটনার সাথে অনেক মানুষ জড়িত। সকলকে আলাদা আলাদা করে ডেকে তদন্ত করা একটু সময়সাপেক্ষ ও জটিল।
তিনি আরও বলেন, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যেটা করেছে কোনো প্রকার তদন্ত ছাড়াই প্রশাসনিক আদেশে নিষিদ্ধ বা বহিষ্কার করেছে। তবে আমরা চাচ্ছি নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এবং একই সাথে অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগীর কথা শুনে সুপারিশ করতে। একই ঘটনার সাথে অভিযুক্ত এবং তার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে ডেকে যাচাই বাছাই করার কারণে আমাদের সময় বেশি লাগছে। আমরা ৭০ এর বেশি শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আবার অনেক শিক্ষার্থী আছেন যারা অভিযুক্ত এবং ২০১৫ বা এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে গেছে। তাদের সাথে আমরা যোগাযোগ করতে পারছি না। তাই বিষয়গুলো একটু জটিল। তাই সময় বেশি লাগছে।
অভিযুক্তদের থেকে একটি পক্ষ অর্থ গ্রহণ করে মিটমাট করার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা এ ব্যাপারে কিছু জানি না। আমাদের কাছে যে অভিযোগ গুলো এসেছে এগুলো নিয়ে আমরা তদন্ত করবো। এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া।