ঢাকা ১২:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
৪৯তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের গনিতে প্রথম কুবির অলি উল্লাহ শয়তানের নিশ্বাস প্রয়োগ করে অর্থ ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেয়া চক্রের মূলহোতা গ্রেফতার আওয়ামী লীগ নিয়ে আসলে কী বলেছেন মির্জা ফখরুল অস্ত্রধারীদের দেখামাত্র এসএমজি দিয়ে ব্রাশফায়ারের নির্দেশ সিএমপি কমিশনারের গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভুল তথ্যে বিভ্রান্ত হবেন না: মির্জা ফখরুল দুর্নীতির খবর প্রকাশের পর সহকারী সচিব ও উপসচিবের মাস্তানি হঠাৎ জরুরি বৈঠক ডেকেছেন তারেক রহমান, শুরু রাত সাড়ে ৮টায় অনলাইন ভ্যাট রিফান্ড মডিউল চালু করলো এনবিআর শিবির-স্বৈরাচারের মিশেল বাণিজ্যে মুক্তি পাচ্ছে বন্দিরা মাইকেল জ্যাকসনের বায়োপিকের টিজারে রেকর্ড

বাংলার গানের মেধাবী শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণ

বিনোদন ডেস্ক
  • Update Time : ১১:২৪:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ১৯৮ Time View

বাংলা গানের এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল। ‘আমি বাংলায় গান গাই’-গানটি গেয়ে বাঙালির হৃদয়ে স্থায়ী আসন গড়া খ্যাতিমান শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় আর নেই।

দীর্ঘ রোগভোগের পর গত শনিবার সকাল ১০টার দিকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। গত জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকেই গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এই বরেণ্য শিল্পী। স্নায়ুজনিত জটিলতা ও নাক-কান-গলার সংক্রমণ নিয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার করা হয়, কিন্তু পরবর্তীতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন এবং শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটে। নিউমোনিয়াসহ নানা জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত পৃথিবী থেকে বিদায় নেন এই গুণী সংগীতশিল্পী।

১৯৪২ সালের ২৫ জুন অবিভক্ত বাংলার বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। দেশভাগের পর পরিবারসহ চলে আসেন ভারতে এবং পশ্চিমবঙ্গের চুঁচুড়ায় বসবাস শুরু করেন। ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি ঝোঁক ছিল তার। নিজের লেখা গানে নিজেই সুর দিতেন। ১৯৬২ সালে প্রথম গান রচনা করেন এবং পরবর্তী এক দশকে বেশ কিছু গণসংগীত সৃষ্টি করেন।

প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের গানের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও আবেগঘন সৃষ্টি হলো ‘আমি বাংলায় গান গাই’। গানটি ২০১১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হলেও এর আগে থেকেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এই গান যেন বাঙালির আবেগ, ভালোবাসা আর মাতৃভাষার প্রতি গভীর টানকে অনন্যভাবে প্রকাশ করে। সংগীতের পাশাপাশি সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনেও যুক্ত ছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। একসময় নকশাল আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি এবং তার পরিচিতি ছিল ‘সেজদা কমরেড’ নামে। তিনি ছিলেন নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন কলেজের প্রাক্তন শিক্ষক এবং ইউনাইটেড ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার স্ট্যাটিসটিকস অ্যান্ড লং রেঞ্জ প্ল্যানিং বিভাগের সাবেক প্রধান ব্যবস্থাপক।

প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘চার্লি চ্যাপলিন’, ‘ডিঙ্গা ভাসাও আলু বেচো’, ‘স্বপ্নপুরে’, ‘ওঠো হে’, ‘তোমাকে দেখেছিলাম’, ‘অনেক নতুন বন্ধু হোক’, ‘দুই কানুর উপাখ্যান’ ইত্যাদি। তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘যেতে হবে’ প্রকাশিত হয় ১৯৯৪ সালে। এছাড়া ‘পাথরে পাথরে নাচে আগুন’, ‘হযবরল’, ‘আঁধার নামে’সহ আরও বেশ কিছু জনপ্রিয় অ্যালবাম রয়েছে তার নামের সঙ্গে। প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে সংগীত জগতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ভারত ও বাংলাদেশের সংগীতপ্রেমীরা তাকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছেন। প্রতুল মুখোপাধ্যায় তার গানের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তার কণ্ঠের সুর, তার গানের কথা বাঙালির হৃদয়ে বেঁচে থাকবে অনন্তকাল।

Please Share This Post in Your Social Media

বাংলার গানের মেধাবী শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণ

বিনোদন ডেস্ক
Update Time : ১১:২৪:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বাংলা গানের এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল। ‘আমি বাংলায় গান গাই’-গানটি গেয়ে বাঙালির হৃদয়ে স্থায়ী আসন গড়া খ্যাতিমান শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় আর নেই।

দীর্ঘ রোগভোগের পর গত শনিবার সকাল ১০টার দিকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। গত জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকেই গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এই বরেণ্য শিল্পী। স্নায়ুজনিত জটিলতা ও নাক-কান-গলার সংক্রমণ নিয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার করা হয়, কিন্তু পরবর্তীতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন এবং শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটে। নিউমোনিয়াসহ নানা জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত পৃথিবী থেকে বিদায় নেন এই গুণী সংগীতশিল্পী।

১৯৪২ সালের ২৫ জুন অবিভক্ত বাংলার বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। দেশভাগের পর পরিবারসহ চলে আসেন ভারতে এবং পশ্চিমবঙ্গের চুঁচুড়ায় বসবাস শুরু করেন। ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি ঝোঁক ছিল তার। নিজের লেখা গানে নিজেই সুর দিতেন। ১৯৬২ সালে প্রথম গান রচনা করেন এবং পরবর্তী এক দশকে বেশ কিছু গণসংগীত সৃষ্টি করেন।

প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের গানের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও আবেগঘন সৃষ্টি হলো ‘আমি বাংলায় গান গাই’। গানটি ২০১১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হলেও এর আগে থেকেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এই গান যেন বাঙালির আবেগ, ভালোবাসা আর মাতৃভাষার প্রতি গভীর টানকে অনন্যভাবে প্রকাশ করে। সংগীতের পাশাপাশি সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনেও যুক্ত ছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। একসময় নকশাল আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি এবং তার পরিচিতি ছিল ‘সেজদা কমরেড’ নামে। তিনি ছিলেন নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন কলেজের প্রাক্তন শিক্ষক এবং ইউনাইটেড ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার স্ট্যাটিসটিকস অ্যান্ড লং রেঞ্জ প্ল্যানিং বিভাগের সাবেক প্রধান ব্যবস্থাপক।

প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘চার্লি চ্যাপলিন’, ‘ডিঙ্গা ভাসাও আলু বেচো’, ‘স্বপ্নপুরে’, ‘ওঠো হে’, ‘তোমাকে দেখেছিলাম’, ‘অনেক নতুন বন্ধু হোক’, ‘দুই কানুর উপাখ্যান’ ইত্যাদি। তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘যেতে হবে’ প্রকাশিত হয় ১৯৯৪ সালে। এছাড়া ‘পাথরে পাথরে নাচে আগুন’, ‘হযবরল’, ‘আঁধার নামে’সহ আরও বেশ কিছু জনপ্রিয় অ্যালবাম রয়েছে তার নামের সঙ্গে। প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে সংগীত জগতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ভারত ও বাংলাদেশের সংগীতপ্রেমীরা তাকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছেন। প্রতুল মুখোপাধ্যায় তার গানের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তার কণ্ঠের সুর, তার গানের কথা বাঙালির হৃদয়ে বেঁচে থাকবে অনন্তকাল।