বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভুটানে পণ্য পরিবহনের ট্রায়াল রান আজ থেকে
- Update Time : ০১:০৯:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫
- / ৪৮ Time View
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগের বাংলাদেশ সফরের মধ্যেই আজ (২২ নভেম্বর) থেকে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে পণ্য পরিবহনের (ট্রানজিট) প্রথম পরীক্ষামূলক কার্যক্রম বা ‘ট্রায়াল রান’ শুরু করছে দেশটি। ২২ থেকে ২৪ নভেম্বর—এই তিন দিনে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১৫ টনের একটি চালান নিয়ে বুড়িমারী স্থলবন্দর হয়ে এবং ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভুটানে যাবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দ্বিতীয় ট্রায়াল রান সফলভাবে শেষ হলেই দক্ষিণ এশিয়ার এই স্থলবেষ্টিত দেশটি চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ৬৮৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নিয়মিত পণ্য পরিবহন করতে পারবে।
এদিকে, একটি সরকারি গেজেট বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে ২২ থেকে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করবেন এবং এ সময় তিনি ভিভিআইপি প্রটোকল পাবেন।
ট্রায়াল ট্রানজিটের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে জানান, ভুটানি পণ্য পরিবহনের সুবিধার্থে বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ইতিমধ্যেই লিখিত সম্মতি দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এই সফরের সময় দুই দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে বাণিজ্য বা বিনিয়োগ সংক্রান্ত কোনো দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে না। তবে শনিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক নৈশভোজে তারা আমন্ত্রিত হয়েছেন। আগামী জানুয়ারিতে ভুটানের সাথে পরবর্তী বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ২২ মার্চ বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে ‘এগ্রিমেন্ট অন দ্য মুভমেন্ট অব ট্রাফিক-ইন-ট্রানজিট’ চুক্তি ও প্রটোকল সই হয়। গত বছরের এপ্রিলে ভুটানে অনুষ্ঠিত বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকে উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছিল যে, পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে দুটি ট্রায়াল রান সম্পন্ন হওয়ার পর চুক্তিটি কার্যকর হবে।
গত অক্টোবরে ভুটান একটি ‘নোট ভার্বাল’-এর মাধ্যমে বাংলাদেশকে জানায় যে, প্রথম ট্রায়াল রানের জন্য ১৫ টনের একটি চালান চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশ্যে লোড করা হয়েছে। থাইল্যান্ড থেকে আমদানিকৃত এই পণ্য খালাস ও পরিবহনের জন্য মেসার্স অভি কার্গো কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে ভারতের সাথে ট্রানজিট চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ চারটি ট্রায়াল রান সম্পন্ন করেছিল। চুক্তিটি বাস্তবায়নের দিকে এগোনোর কথা থাকলেও সরকার পরিবর্তনের পর এ বিষয়ে আর কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ভারত কর্তৃক চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের ট্রানজিট ফি ও চার্জ আগে একটি আন্তঃসরকারি কমিটির মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়েছিল। ভুটান চুক্তির অধীনে একটি যৌথ কারিগরি কমিটির চার্জ ও ফি নির্ধারণ করার কথা ছিল। তবে কমিটি গঠনের আগেই এবং চার্জ চূড়ান্ত হওয়ার আগেই ভুটান ট্রায়াল রানের অনুরোধ জানায়। যেহেতু চালানটি ইতিমধ্যেই চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে, তাই ‘বন্ধুত্বপূর্ণ নিদর্শন’ হিসেবে বাংলাদেশ এই ট্রায়াল পরিচালনায় রাজি হয়েছে।
ভুটানের এই ট্রায়াল ট্রানজিটের জন্য বাংলাদেশ ফি ও চার্জের একটি তালিকা নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে—প্রতি চালানে ডকুমেন্ট প্রসেসিং ফি ৩০ টাকা, ট্রান্সশিপমেন্ট ফি প্রতি টন ২০ টাকা, নিরাপত্তা চার্জ প্রতি টন ১০০ টাকা, এসকর্ট ফি প্রতি কন্টেইনারে কিলোমিটার প্রতি ৮৫ টাকা, প্রশাসনিক চার্জ প্রতি টন ১০০ টাকা এবং স্ক্যানিং ফি প্রতি কন্টেইনারে ২৫৪ টাকা। এছাড়া সড়ক টোল এবং করিডোর ব্যবহারের ফি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় নির্ধারণ করবে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়






































































































































































































