বাংলাদেশের নারী গার্মেন্টস শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ
- Update Time : ১০:৪২:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
- / ২৯৬ Time View
বাংলাদেশের রেডিমেড পোশাক শিল্প কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকদের যৌক্তিক অধিকার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে কারখানার মধ্যস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ব্যবস্থাপকদের জন্য নৈতিক দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
গতকাল শুক্রবার (১৮ জুলাই) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সিলিকন সিটিতে অবস্থিত আলকা পার্ক রিসোর্টে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।

উক্ত প্রশিক্ষণে মোহাম্মদপুরস্থ বিভিন্ন পোশাক শিল্প কারখানার নির্দিষ্ট স্তরের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণে মূল প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন সিএসএম বাংলাদেশের মানবসম্পদ কর্মকর্তা চৌধুরী মালিহা মিজান। এছাড়াও প্রশিক্ষণটির বিভিন্ন অংশ পরিচালনায় ছিলেন ব্র্যাকের লিঙ্গ সমতা ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তি বিশেষজ্ঞ মেহনাজ নাসরীন শিলা, ইয়েল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষিকা মেহের নিগাহ ও জাপানের প্রফেশনাল কাউন্সেলর ইয়াকুব নবী।
সভাপতি হিসেবে ছিলেন সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুইনুল আহসান ফয়সাল। এছাড়া দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণটিতে সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর মমতা প্রকল্পের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, ছায়তল বাংলাদেশ ও দৈনিক নওরোজের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

মমতা প্রকল্পটি বাংলাদেশের রেডিমেড পোশাক শিল্প কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকদের যৌক্তিক অধিকার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে পরিকল্পিত। এটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড এর অর্থায়নে এবং আর্টিকেল ১৯ এর তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়নাধীন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের অন্যতম যুব-নেতৃত্বাধীন সংস্থা-সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন, ছায়াতল বাংলাদেশ ও দৈনিক নওরোজের যৌথ অংশগ্রহণের মাধ্যমে আঞ্চলিকভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে প্রায় ৪৫ লাখ শ্রমিক কর্মরত যার অধিকাংশই নারী। ঢাকাস্থ মোহাম্মদপুরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ৩য় স্তর বা স্তরের বিবেচনার যোগ্যতাবিহীন পোশাক কারখানা রয়েছে যারা মূলত আঞ্চলিকভাবে তাদের পণ্য সরবরাহ করে থাকে। প্রায় ৩২ হাজার শ্রমিকের এই অঞ্চলটিতেও অধিকাংশ শ্রমিকই নারী এবং স্তরবিহীন কারখানাগুলোতে তাদের জন্য ন্যায্য মজুরী ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা অনেকাংশেই প্রশ্নবিদ্ধ। এক্ষেত্রে বেশ কিছু অনৈতিক বা বেআইনি চর্চা লক্ষ্যনীয়, যেমন- অনিয়মিত বা বিলম্বিত বেতন, মাতৃত্বকালীন ছুটি বিষয়ক জটিলতা, খাবার ক্যান্টিনের অপ্রাপ্যতা, মা শ্রমিকদের শিশু-যত্নের ব্যবস্থা না থাকা, প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা পণ্যের অপ্রতুলতা ইত্যাদি। এসকল অগ্রহণযোগ্য নিয়মচর্চার প্রবণতা হ্রাসকল্পে এবং নারী শ্রমিকদের ন্যায্য ও যৌক্তিক শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা জরুরী।
প্রকল্পটির প্রধান উদ্দেশ্যগুলো হলো – পোশাক শিল্প কারখানায় নারী শ্রমিকবান্ধব নৈতিক চর্চার প্রচলন করা, কারখানায় ক্যান্টিন ও শিশু-যত্নের ব্যবস্থা চালু করার পক্ষসমর্থনে সচেতনতা, মাতৃত্বকালীন ছুটি, ছুটিশেষে চাকুরিতে পুনঃবহাল ও প্রয়োজনীয় ন্যায্যতার পক্ষসমর্থনে সচেতনতা ও তথ্য প্রচার করাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে কর্তৃপক্ষকে উৎসাহিত করা।
কারখানাসমূহে নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য-সুরক্ষাসহ অন্যান্য জরুরী সরঞ্জামাদির প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে “মমতা কর্নার” প্রতিষ্ঠা করা, কারখানার মালিক ও মধ্যস্তরের কর্মকর্তাদেরকে সাক্ষর কার্যক্রমের মাধ্যমে নারী শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিশ্চিত করা, সরকারী ও বেসরকারী নানা প্রতিষ্ঠানের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রকল্পের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নকে ত্বরান্বিত করা, এবং অনলাইন ও অফলাইনে দেশব্যাপী সচেতনতা ছড়ানো ও সঠিক চর্চাপদ্ধতি প্রচার করা।
এই প্রকল্পটির সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে মোহাম্মদপুরসহ সারা বাংলাদেশে পোশাকশিল্পে নারী শ্রমিকদের ন্যায্য শ্রম অধিকার নিশ্চিত হবে যার মাধ্যমে সমাজের কুসংস্কার ও ভ্রান্ত ধারণা উপেক্ষা করে মানব-সম্পদের আধিক্য ঘটতে পারে।
এছাড়া অধিক নারী কর্মসংস্থানের মাধ্যমে নারী ক্ষমতায়নের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে বলে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলো আশাবাদী।




































































































































































































