ঢাকা ০৮:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
টিকটক ভিডিও বানাতে গিয়ে নৌকা ডুবে কিশোরের মৃত্যু ফ্যাসিস্টদেরকে আমরা আর ফেরত চাই না : মির্জা ফখরুল আ.লীগের ঝটিকা মিছিলে অংশ নেওয়া প্রত্যেককে দেওয়া হচ্ছে ৫ হাজার টাকা মিরপুরে আগুনে ১৬ জনের লাশ উদ্ধার, তল্লাশি চলছে ১৯ অক্টোবরের মধ্যে এনসিপি প্রতীক না নিলে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি এক ক্লিকে আদালতের রায় সরাসরি জেলখানায় পৌঁছে যাবে: আইন উপদেষ্টা সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক থেকে একমাত্র শেয়ারধারী পরিচালকের পদত্যাগ ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গঠনে ছয় দফা প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার : ‘তিন-শূন্য বিশ্ব’ গড়ার আহ্বান বাংলাদেশ ও বিএনপি : আগামী নির্বাচনে সম্ভাবনার দিগন্ত প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সুইডেন ও নরওয়ের ৯ তরুণ রাজনীতিবিদের সাক্ষাৎ

বাংলাদেশি তরুণীদের কাজের কথা বলে চীনে নিয়ে যৌনপল্লীতে বিক্রি

ডেস্ক রিপোর্ট
  • Update Time : ০৫:৫৪:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১২৫ Time View

চীনে উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীদের পাচার করে যৌন পল্লীতে বিক্রির অভিযোগে মানব পাচারকারী চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪। তারা হলেন— চক্রের মূলহোতা আব্বাস মোল্লা, জাহিদুল ইসলাম ওরফে বাবু, মিনার সরদার ও মোহাম্মদ রিপন শেখ।

সম্প্রতি চীন থেকে পালিয়ে আসা এক তরুণীর মামলার ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের মূলহোতাসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহবুব আলম।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, মামলার বাদী ভুক্তভোগী তরুণী পিরোজপুরে একটি বিউটি পার্লারে কাজ করতেন। কয়েক মাস আগে ফেসবুকের মাধ্যমে ভুক্তভোগী তরুণী ও তার খালাতো বোনের সঙ্গে আসামি বাবুর সঙ্গে পরিচয় হয়। ভুক্তভোগী তরুণী বাবুর কাছে ঢাকায় একটি ভালো কাজের সন্ধান চান। বাবু তাদের জানান চীনে আর্কষণীয় বেতনে চাকরি আছে, বিশেষ করে যারা পার্লারের কাজ জানে এবং তাদের চীনে আকর্ষণীয় বেতনে কাজের প্রস্তাব দেন। এই প্রস্তাবে রাজি হলে, তাদের ঢাকায় নিয়ে আসে এবং এই চক্রের মূলহোতা আব্বাসের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।

প্রতারক আব্বাস তাদের আশ্বাস দেন, চীনে ভালো কাজ আছে এবং তাদের সেখানে পাঠানো যাবে। তরুণীদের চীনে এক লাখ টাকা বেতনে চাকরি দেওয়া হবে এবং সেখানে পৌঁছানোর পরপরই ১০ লাখ টাকা দেওয়া হবে। এই প্রলোভন দেখানোর পর তাদের পাসপোর্ট ও ভিসা করে সিলভি নামের এক মেয়ের মাধ্যমে চীনে পাঠিয়ে দেন।

পরবর্তীতে তরুণীরা চীন যাওয়ার পর তাদের বিউটি পার্লারে কাজ না দিয়ে তাদের দুই বোনকে আলাদা দুইটি বাসায় রেখে চক্রের সদস্যরা জোর করে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করেন। এক পর্যায়ে তারা নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন শর্তের ভিত্তিতে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেন। বাংলাদেশে ফিরে এসে আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তার যে বোন চীনে আটক আছেন তাকে ফিরিয়ে আনতে বলেন। তখন আসামি আব্বাস ভুক্তভোগীর বোনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার আশ্বাস দিয়ে ভুক্তভোগী তরুণীকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করেন।

লে. কর্নেল মাহবুব আলম আরও বলেন, ভুক্তভোগী তরুণী বুঝতে পারেন তিনি মিথ্যা আশ্বাসে ক্রমাগত নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তখন ভুক্তভোগী তরুণী থানায় মামলা রুজু করে এবং র‌্যাবের কাছেও সহযোগীতা চান। পরে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে র‌্যাব-৪ এর একটি দল মঙ্গলবার রাতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করে।

তিনি বলেন, গ্রেফতাররা প্রায় ১০ বছর ধরে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে তরুণীদের আকর্ষণীয় বেতনের চাকরি ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে চীনে পাচার করে আসছিলেন। চক্রটি পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন, এনআইডি ও ভিসা প্রসেসিংয়ে যোগসাজশের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে নথিপত্র তৈরি করত। চক্রটি এ পর্যন্ত অন্তত ২০ জন নারীকে চীনে পাচার করেছেন। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।

গ্রেফতার চারজন ছাড়াও দেশের আরও কয়েকজন এবং কিছু চীনা নাগরিক এই চক্রের সঙ্গে জড়িত। তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান চলমান বলেও জানান র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।

Please Share This Post in Your Social Media

বাংলাদেশি তরুণীদের কাজের কথা বলে চীনে নিয়ে যৌনপল্লীতে বিক্রি

ডেস্ক রিপোর্ট
Update Time : ০৫:৫৪:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

চীনে উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীদের পাচার করে যৌন পল্লীতে বিক্রির অভিযোগে মানব পাচারকারী চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪। তারা হলেন— চক্রের মূলহোতা আব্বাস মোল্লা, জাহিদুল ইসলাম ওরফে বাবু, মিনার সরদার ও মোহাম্মদ রিপন শেখ।

সম্প্রতি চীন থেকে পালিয়ে আসা এক তরুণীর মামলার ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের মূলহোতাসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহবুব আলম।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, মামলার বাদী ভুক্তভোগী তরুণী পিরোজপুরে একটি বিউটি পার্লারে কাজ করতেন। কয়েক মাস আগে ফেসবুকের মাধ্যমে ভুক্তভোগী তরুণী ও তার খালাতো বোনের সঙ্গে আসামি বাবুর সঙ্গে পরিচয় হয়। ভুক্তভোগী তরুণী বাবুর কাছে ঢাকায় একটি ভালো কাজের সন্ধান চান। বাবু তাদের জানান চীনে আর্কষণীয় বেতনে চাকরি আছে, বিশেষ করে যারা পার্লারের কাজ জানে এবং তাদের চীনে আকর্ষণীয় বেতনে কাজের প্রস্তাব দেন। এই প্রস্তাবে রাজি হলে, তাদের ঢাকায় নিয়ে আসে এবং এই চক্রের মূলহোতা আব্বাসের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।

প্রতারক আব্বাস তাদের আশ্বাস দেন, চীনে ভালো কাজ আছে এবং তাদের সেখানে পাঠানো যাবে। তরুণীদের চীনে এক লাখ টাকা বেতনে চাকরি দেওয়া হবে এবং সেখানে পৌঁছানোর পরপরই ১০ লাখ টাকা দেওয়া হবে। এই প্রলোভন দেখানোর পর তাদের পাসপোর্ট ও ভিসা করে সিলভি নামের এক মেয়ের মাধ্যমে চীনে পাঠিয়ে দেন।

পরবর্তীতে তরুণীরা চীন যাওয়ার পর তাদের বিউটি পার্লারে কাজ না দিয়ে তাদের দুই বোনকে আলাদা দুইটি বাসায় রেখে চক্রের সদস্যরা জোর করে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করেন। এক পর্যায়ে তারা নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন শর্তের ভিত্তিতে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেন। বাংলাদেশে ফিরে এসে আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তার যে বোন চীনে আটক আছেন তাকে ফিরিয়ে আনতে বলেন। তখন আসামি আব্বাস ভুক্তভোগীর বোনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার আশ্বাস দিয়ে ভুক্তভোগী তরুণীকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করেন।

লে. কর্নেল মাহবুব আলম আরও বলেন, ভুক্তভোগী তরুণী বুঝতে পারেন তিনি মিথ্যা আশ্বাসে ক্রমাগত নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তখন ভুক্তভোগী তরুণী থানায় মামলা রুজু করে এবং র‌্যাবের কাছেও সহযোগীতা চান। পরে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে র‌্যাব-৪ এর একটি দল মঙ্গলবার রাতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করে।

তিনি বলেন, গ্রেফতাররা প্রায় ১০ বছর ধরে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে তরুণীদের আকর্ষণীয় বেতনের চাকরি ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে চীনে পাচার করে আসছিলেন। চক্রটি পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন, এনআইডি ও ভিসা প্রসেসিংয়ে যোগসাজশের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে নথিপত্র তৈরি করত। চক্রটি এ পর্যন্ত অন্তত ২০ জন নারীকে চীনে পাচার করেছেন। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।

গ্রেফতার চারজন ছাড়াও দেশের আরও কয়েকজন এবং কিছু চীনা নাগরিক এই চক্রের সঙ্গে জড়িত। তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান চলমান বলেও জানান র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।