বহুবিবাহ নিষিদ্ধ হলো আসামে, আইন ভাঙলে জেল
- Update Time : ১০:২৫:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
- / ২৮ Time View
বহুবিবাহ প্রতিরোধে আসাম বিধানসভায় গতকাল বৃহস্পতিবার পাস হয়েছে ‘আসাম প্রোহিবিশন অফ পলিগ্যামি বিল, ২০২৫’, যার মাধ্যমে ভারতের এ রাজ্যে বহুবিবাহকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আইন ভাঙলে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
তবে তপশিলি জনজাতি (এসটি) এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তপশিলভুক্ত এলাকা যেমন বডোল্যান্ড টেরিটোরিয়াল রিজিয়ন, ডিমা হসাও, করবি আংলং ও পশ্চিম করবি আংলং এই আইনের আওতার বাইরে থাকবে।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা আইন পাশ হওয়ার পর বলেছেন, দিনটি ঐতিহাসিক। আসামের নারীদের সামাজিক ও পারিবারিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এই আইন চালু করা হল।
গতকাল বৃহস্পতিবার আসাম বিধানসভায় শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনেই বিলটি তোলা হয়। বিলটি পাশ হওয়ার আগে তুমুল বিতর্ক হয়। একাধিক মুসলিম বিধায়ক দাবি করেন, এর ফলে সংখ্যালঘুদের ব্যক্তিগত অধিকার ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে। তাদের বক্তব্য, এই আইনে অনেক জটিলতা তৈরি হবে। কারণ, মুসলিম পার্সোনাল ল’ রাজ্য আইনের ঊর্ধ্বে। রাজ্যের আইনে যা নিষিদ্ধ সেটাই কেন্দ্রীয় আইনে বৈধ। মামলা হলে আদালত রাজ্যের আইনকে গ্রাহ্য করবে না।
জবাবে আসামের মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপি সরকারের মন্ত্রী ও বিধায়কেরা বিধানসভায় ঘোষণা করেন, যদি মুসলিম পার্সোনাল ল’ অসমের আইন বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়ায়; তখন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বলবৎ করা হবে। তখন আর ব্যক্তিগত আইনের সুবিধা পাওয়া যাবে না।
মুখ্যমন্ত্রী হানিফ চ্যালেঞ্জের সুরে বলেন, বিরোধীরা আমাকে আটকাতে না পারলেও অভিন্ন দেওয়ানি বিধিও বলবৎ হবে আসামে।
প্রসঙ্গত, বিজেপিশাসিত উত্তরাখণ্ডে গত বছর অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের গোয়া, মধ্যপ্রদেশের রাজস্থান এবং আসামে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার ভাবনা আছে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলোর।
জানা গেছে, এই বিলের আওতায় যারা অপরাধী বলে চিহ্নিত হবেন, তাদের জন্য কড়া শাস্তির বিধান বেঁধে দিয়েছে হেমন্তের সরকার। পাশ হওয়া বিল অনুযায়ী, কেউ যদি একটি বিবাহ থাকা সত্ত্বেও আরও একটি বিয়ে করেন, তা হলে তাকে সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। আর কেউ যদি তার দ্বিতীয় বিয়ে লুকানোর চেষ্টা করেন, তা হলে তখন সেই অভিযুক্ত ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। পাশাপাশি, এই গোটা বিবাহ প্রক্রিয়ায় জড়িত কাজী, পুরোহিত, গ্রামপ্রধান, বাবা-মা কিংবা আইনি পরামর্শদাতা, যারা সেই বহুবিবাহে উৎসাহ জোগাবেন, তাদের সবাইকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
এদিন বিল পাশের পর বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘বাল্যবিবাহ এবং বহুবিবাহ মুসলিম সমাজের মেয়েরদের জন্য অভিশাপের সমান। দেশের নাগরিক হিসাবে তারাও মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার অধিকার পেয়েছেন। কিন্তু এই রীতি তাদের সেই মর্যাদা ও অধিকারকে ক্ষুণ্ন করে।’
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়






































































































































































































