ঢাকা ০৩:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বন্যাদুর্গতদের পুনর্বাসনে বিএনপির ৬ দাবি

নওরোজ ডেস্ক
  • Update Time : ০২:৩৭:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৭ Time View

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সম্প্রতি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, কৃষক ও খামারিদের তালিকা তৈরি করে দ্রুত পুনর্বাসনসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছে বিএনপি। রোববার (২০ অক্টোবর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।

রিজভীর অভিযোগ, দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা ও প্রবল বর্ষণে জলাবদ্ধতায় সৃষ্ট দুর্ভোগ নিরসনে সরকারের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। বন্যায় কৃষক ও খামারিদের অতি দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।

তিনি বলেন, বন্যাকবলিত মানুষ ও তাদের পরিবারের দুরবস্থার বিষয়টি সরকারকেই প্রধান ভূমিকা রাখতে হবে। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম ঠিক রাখতেও সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। সার, কীটনাশক ও বীজের সরবরাহ বাড়িয়ে কিংবা প্রণোদনা দিয়ে কৃষক ও খামারিদের পাশে দাঁড়াতে হবে।

রিজভী বলেন, ভয়াবহ বন্যায় শেরপুর ও নেত্রকোণায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন রোপা আমন ও সবজি চাষিরা। সরকারি সূত্র থেকে জানা যায়, শুধুমাত্র নেত্রকোণা জেলার পাঁচ উপজেলায় ২০ হাজার ৯০৯ হেক্টর জমির রোপা আমন ক্ষেত সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে ৭০ হাজারের বেশি কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। অন্যদিকে সবজি চাষের ক্ষতি হয়েছে ১৬০ হেক্টর জমির। এতে ৫৩২০ কৃষকের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ১৩ কোটি টাকা। প্রায় ১৭৩০টি পুকুর এবং মৎস্য খামার ডুবে গেছে। টাকার অংকে যার পরিমাণ ৮ কোটি টাকা। শেরপুরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮০ জন কৃষক। এ বছর ৯৫ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ হয়েছিল, তার মধ্যে ৩৭ হাজার ১৫৫ হেক্টর জমির ফসল বন্যায় নষ্ট হয়েছে।

বিএনপির ছয় দাবি হলো-

১) বন্যার পানিতে যাদের জমির ফসল বিনষ্ট হয়ে গেছে তাদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন করে আগামী ফসল না উঠা পর্যন্ত তাদের সর্বাত্মক ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা এবং আগামী ফসলের জন্য সুদমুক্ত কৃষি ঋণ প্রদান এবং বিনামূল্যে সার, রবি শষ্যের বীজ, কীটনাশক, সেচের তেলের ব্যবস্থা করা।

২) বন্যার পানিতে যে সব মৎস্য ঘের, হাঁস-মুরগী, গবাদি পশুর খামার বিনষ্ট বা ধ্বংস হয়ে গেছে তাদের সঠিক তালিকা ও ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করে পুনরায় খামার প্রতিষ্ঠার জন্য সুদমুক্ত ঋণসহ অন্যান্য সহায়তা প্রদান করা।

৩) বন্যার পানিতে যাদের বাড়ি-ঘর আংশিক ও পুর্ণাঙ্গ ধ্বংস হয়ে গেছে তাদের তালিকা তৈরি করে ঘর-বাড়ি পুনঃনির্মাণে সহায়তা প্রদান এবং গ্রাম/পাড়া/মহল্লা যারা বন্যায় বর্তমানে উদ্বাস্ত হয়ে গেছে, তাদের সরকারি খাস জমিতে বা আশ্রয়ন প্রকল্পে স্থানান্তরিত করতে হবে।

৪) যে সকল বাঁধ, রাস্তা, মসজিদ, মাদরাসা, মন্দিরসহ অন্যান্য ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আংশিক ও পুর্ণাঙ্গ ধ্বংস হয়ে গেছে, সেগুলো সংস্কার ও পুণঃনির্মাণ করতে হবে।

৫) বন্যার পানিতে যে সব ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা সামগ্রী নষ্ট হয়ে গেছে তাদের সরকারি উদ্যোগে শিক্ষা সামগ্রী ও সহায়তা প্রদান করতে হবে।

৬) বন্যার পানি নামার সাথে সাথে রোগ-বালাইগ্রস্ত মানুষের জন্য সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং প্রয়োজনে এলাকাভিত্তিক মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপন করে চিকিৎসা দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম, অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, হারুন অর রশীদ প্রমুখ।

নওরোজ/এসএইচ

Please Share This Post in Your Social Media

বন্যাদুর্গতদের পুনর্বাসনে বিএনপির ৬ দাবি

নওরোজ ডেস্ক
Update Time : ০২:৩৭:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সম্প্রতি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, কৃষক ও খামারিদের তালিকা তৈরি করে দ্রুত পুনর্বাসনসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছে বিএনপি। রোববার (২০ অক্টোবর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।

রিজভীর অভিযোগ, দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা ও প্রবল বর্ষণে জলাবদ্ধতায় সৃষ্ট দুর্ভোগ নিরসনে সরকারের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। বন্যায় কৃষক ও খামারিদের অতি দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।

তিনি বলেন, বন্যাকবলিত মানুষ ও তাদের পরিবারের দুরবস্থার বিষয়টি সরকারকেই প্রধান ভূমিকা রাখতে হবে। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম ঠিক রাখতেও সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। সার, কীটনাশক ও বীজের সরবরাহ বাড়িয়ে কিংবা প্রণোদনা দিয়ে কৃষক ও খামারিদের পাশে দাঁড়াতে হবে।

রিজভী বলেন, ভয়াবহ বন্যায় শেরপুর ও নেত্রকোণায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন রোপা আমন ও সবজি চাষিরা। সরকারি সূত্র থেকে জানা যায়, শুধুমাত্র নেত্রকোণা জেলার পাঁচ উপজেলায় ২০ হাজার ৯০৯ হেক্টর জমির রোপা আমন ক্ষেত সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে ৭০ হাজারের বেশি কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। অন্যদিকে সবজি চাষের ক্ষতি হয়েছে ১৬০ হেক্টর জমির। এতে ৫৩২০ কৃষকের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ১৩ কোটি টাকা। প্রায় ১৭৩০টি পুকুর এবং মৎস্য খামার ডুবে গেছে। টাকার অংকে যার পরিমাণ ৮ কোটি টাকা। শেরপুরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮০ জন কৃষক। এ বছর ৯৫ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ হয়েছিল, তার মধ্যে ৩৭ হাজার ১৫৫ হেক্টর জমির ফসল বন্যায় নষ্ট হয়েছে।

বিএনপির ছয় দাবি হলো-

১) বন্যার পানিতে যাদের জমির ফসল বিনষ্ট হয়ে গেছে তাদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন করে আগামী ফসল না উঠা পর্যন্ত তাদের সর্বাত্মক ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা এবং আগামী ফসলের জন্য সুদমুক্ত কৃষি ঋণ প্রদান এবং বিনামূল্যে সার, রবি শষ্যের বীজ, কীটনাশক, সেচের তেলের ব্যবস্থা করা।

২) বন্যার পানিতে যে সব মৎস্য ঘের, হাঁস-মুরগী, গবাদি পশুর খামার বিনষ্ট বা ধ্বংস হয়ে গেছে তাদের সঠিক তালিকা ও ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করে পুনরায় খামার প্রতিষ্ঠার জন্য সুদমুক্ত ঋণসহ অন্যান্য সহায়তা প্রদান করা।

৩) বন্যার পানিতে যাদের বাড়ি-ঘর আংশিক ও পুর্ণাঙ্গ ধ্বংস হয়ে গেছে তাদের তালিকা তৈরি করে ঘর-বাড়ি পুনঃনির্মাণে সহায়তা প্রদান এবং গ্রাম/পাড়া/মহল্লা যারা বন্যায় বর্তমানে উদ্বাস্ত হয়ে গেছে, তাদের সরকারি খাস জমিতে বা আশ্রয়ন প্রকল্পে স্থানান্তরিত করতে হবে।

৪) যে সকল বাঁধ, রাস্তা, মসজিদ, মাদরাসা, মন্দিরসহ অন্যান্য ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আংশিক ও পুর্ণাঙ্গ ধ্বংস হয়ে গেছে, সেগুলো সংস্কার ও পুণঃনির্মাণ করতে হবে।

৫) বন্যার পানিতে যে সব ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা সামগ্রী নষ্ট হয়ে গেছে তাদের সরকারি উদ্যোগে শিক্ষা সামগ্রী ও সহায়তা প্রদান করতে হবে।

৬) বন্যার পানি নামার সাথে সাথে রোগ-বালাইগ্রস্ত মানুষের জন্য সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং প্রয়োজনে এলাকাভিত্তিক মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপন করে চিকিৎসা দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম, অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, হারুন অর রশীদ প্রমুখ।

নওরোজ/এসএইচ