বদহজম এড়াতে যে বিষয়গুলো মেনে চলা জরুরি
- Update Time : ০৯:৩৩:৪১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ১৯ Time View
বদহজম বা হজমে গন্ডগোল এখনকার দিনে খুবই সাধারণ একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই স্বাস্থ্য সমস্যা সাময়িক, আবার কারো ক্ষেত্রে এটি দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। বদহজম হলে খেয়াল করতে হবে যে, বদহজমের আসল কারণ কী? সাধারণত আমাদের খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপন প্রণালি, বিভিন্ন রকম ঔষধ বা অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের পরবর্তী সময়, আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে হজমজনিত রোগের কারণেও দীর্ঘমেয়াদি বদহজমের সমস্যা হতে পারে।
বদহজম হলেই গলা জ্বলা, টক ঢেকুর, বুকে-পিঠে ব্যথা, মাথায় যন্ত্রণার মতো লক্ষণ দেখা দেয়। সমস্যা বাড়লে অনেকের আবার ডায়রিয়ার মতো গুরুতর লক্ষণ দেখা দেয়।
খাদ্যাভ্যাস বলতে বাইরের খাবার, অস্বাস্থ্যকর খাবার, ভাজাপোড়া, ফাস্টফুড, অতিরিক্ত তৈলাক্ত বা মশলাদার খাবার, পোড়া তেলে ভাজা খাবার, বাশি বা পঁচা খাবার, দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকা, দুইবেলা খাবারের মধ্যে দীর্ঘবিরতি বা পরপর প্রচুর খাবার খাওয়া, কোনো বেলার খাওয়া বাদ দেওয়া, একবারে প্রচুর পরিমাণে খাবার খাওয়া ইত্যাদির কারণে বদহজম হতে পারে।
এ ছাড়া রাতে ভালো ঘুম না হলে, সকালে ঘুম থেকে দেরি করে উঠলে আবার সকালের খাবার না খেলেও বদহজম হতে পারে। তাছাড়া দৈনিক পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না খেলেও হজম শক্তি কমে যায়। আবার কিছু রোগের কারণে দীর্ঘমেয়াদি হজমের সমস্যা হতে পারে। যেমন– আই বি এস ও সিরিয়ারটিক ডিজিজ।
বদহজম এড়াতে যে বিষয়গুলো মেনে চলা দরকার
১. যতই তাড়াহুড়ো থাকুক না কেন, খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খান। এতে নানা উৎসেচক যোগ হয় যা খাবারকে সহজপাচ্য করে। ফলে হজম ভালো হয়।
২. অতিরিক্ত দুধ, চা বা কফি বাদ দিয়ে বরং দিনে দুই এক কাপ রং চা, আদা চা বা গ্রিন টি পান করতে পারেন। বিশেষ করে গ্রিন টি’তে আছে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, যা হজমের সহায়ক উৎসেচকগুলোর কার্যকারিতা বাড়াতে পারে। ফলে হজম প্রক্রিয়া সহজ হয়।
৩. ঝালের কারণে দেখা দিতে পারে আমাশয়ের মতো সমস্যা। তাই সম্ভব হলে রান্নায় শুকনো মরিচের ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। ঝাল খেতে ইচ্ছে হলে কাঁচা মরিচ খেতে পারেন। কারণ কাঁচা মরিচে আছে ক্যাপসাইসিন নামক উপাদান। এটি হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তবে অনেকখানি ঝাল খাবার একসঙ্গে খাবেন না।
৪. হজম সহজ করার জন্য খেতে হবে সহজপাচ্য খাবার। প্রতিদিন খাবারের তালিকায় রাখতে হবে প্রচুর শাক-সবজি।
৫. আবার কিছু খাবার রয়েছে, যা কাছাকাছি সময়ে বা একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়। সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। মাংসের মতো উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়ার পরপরই দুধ খাবেন না। পেট ভরে ভাত খাওয়ার পরপরই কোনোরকম ফল খাওয়া যাবে না। এ ধরনের খাবার খাওয়ার মাঝখানে অন্তত আধা ঘণ্টা বিরতি নিন। এতে করে হজম প্রক্রিয়া সহজ হবে।
৬. অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে হবে, যা হজম শক্তি বাড়ায়। সেক্ষেত্রে খাদ্য তালিকায় প্রোবায়োটিক যেমন টকদই বা মাঠা এবং প্রিবায়োটি যেমন পাকা কলা, পুরো শস্য জাতীয় খাবার রাখুন।
৭. প্রক্রিয়াজাত খাবার আমাদের শরীরের জন্য কখনোই উপকারী নয়। তাই তাজা ও পুষ্টিকর খাবার খান। অনেক সময় প্রক্রিয়াজাত খাবার টিনজাত করার ক্ষেত্রে রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, যা পরিপাকতন্ত্রের কর্মক্ষমতা নষ্ট করে দিতে পারে।
৮. নিয়মিত সুষম খাবারের পাশাপাশি অবশ্যই নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করুন, যা আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
৯. বদহজম হলে যে সব খাবার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে তাহলো ভাজাভুজি, প্যাকেটজাত খাবার, ময়দা ও দুগ্ধজাত দ্রব্য। বদহজম হলেই খাবার খাওয়া বন্ধ করে দেবেন, তা ঠিক নয়। অসময়ে ভারী খাবার খাওয়ার মতো কু-অভ্যাস বর্জন করলেও হজমের সমস্যা এড়ানো যাবে।
















































































































































































