ফ্লোটিলায় কেমন আছেন শহিদুল আলম, জানালেন নিজেই

- Update Time : ১০:০৩:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫
- / ১১২ Time View
গাজামুখী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের খ্যাতনামা আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম। তিনি বৃহস্পতিবার ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, ভয়াবহ ঝড় ও প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও তারা গাজার উদ্দেশে যাত্রা অব্যাহত রেখেছেন।
শহিদুল লিখেছেন, তিনি বর্তমানে ফ্লোটিলার সবচেয়ে বড় জাহাজ ‘কনশেন্স ফ্লোটিলা’র ওপরের ডেকে অবস্থান করছেন। গত রাতের ঝড়ের মধ্যে নৌযানটি দ্রুতগতি বাড়িয়ে সামনে এগোয়, যাতে ঝড় এড়িয়ে যাওয়া যায়। তিনি জানান, ফ্লোটিলার সামনের নৌযানগুলো এরই মধ্যে ইসরায়েলি হামলার শিকার হয়েছে, তবে তারা ভীত নন। তিনি বলেন, ‘আমরা পথেই আছি, অবরোধ ভাঙবই। ফিলিস্তিন মুক্ত হবেই।’
অন্য এক পোস্টে শহিদুল জানান, জাহাজে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় তিনি প্রথম রাতে খোলা ডেকে ঘুমিয়েছিলেন। তবে ঝড়ের কারণে পরে তাকে এক্সিট গেটের ছোট্ট কোণে রাত কাটাতে হয়।
তিনি লেখেন,”রিমান্ড ও জেলখানার অভিজ্ঞতা আমাকে এ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত করেছে। আমি নিরবচ্ছিন্ন ঘুম দিয়েছি।”
তিনি আরও জানান, বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে শুভেচ্ছা ও প্রার্থনা বার্তা পাচ্ছেন তারা। এসব বার্তা তিনি সঙ্গী কর্মীদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। একই সঙ্গে গণমাধ্যমে আগ্রহী সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেছেন, কনটেন্ট ও আপডেটের জন্য দৃক অফিসে যোগাযোগ করতে।
ফ্লোটিলার অন্যান্য জাহাজ আটকে দেওয়ার ঘটনাকে শহিদুল আলম ইসরায়েলি বাহিনীর ‘আন্তর্জাতিক জলসীমায় জলদস্যুতা’ বলে উল্লেখ করেছেন। তবুও তিনি দৃঢ়ভাবে লিখেছেন, ‘আমরা অবরোধ ভাঙব। আপনাদের সংহতি আমাদের শক্তি, যা হয়তো আপনারা কল্পনাও করতে পারেন না। ফিলিস্তিন মুক্ত হবেই।’
এর আগে, গত ২৭ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে শহিদুল আলম মিডিয়া ফ্লোটিলার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
একই সঙ্গে ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের উদ্দেশ্য এবং গাজায় চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে তিনি নিজের অবস্থান তুলে ধরেন।
শহিদুল আলম বলেন, সারা পৃথিবীর মানুষের প্রতিবাদ-প্রতিরোধকে উপেক্ষা করে ২০০৭ সাল থেকে গাজাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। অবরুদ্ধ গাজায় মানুষ নির্বিচারে গণহত্যার শিকার হচ্ছে, সেখানে চলছে ইসরায়েল সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ। এসব খবর ইসরায়েলি গণমাধ্যগুলো প্রতিনিয়ত উপেক্ষা করে যাচ্ছে। এই উপেক্ষা ভাঙার লক্ষ্যে একটি মিডিয়া ফ্লোটিলার আয়োজন করা হচ্ছে।
‘বাংলাদেশের সব মানুষের ভালোবাসা নিয়ে অংশ নিচ্ছি’ উল্লেখ করে শহিদুল আলম বলেন, ‘এই সংগ্রামে যদি আমরা পরাজিত হই, তাহলে মানবজাতি পরাজিত হবে। যাওয়ার পর আমি প্রতিদিনই যতটা সম্ভব তথ্য ও ছবি পাঠাতে চেষ্টা করব। জানামতে এই প্রথম বাংলাদেশ থেকে কেউ এ ধরনের ফ্লোটিলাতে অংশ নেবে।’
শহিদুল আলম আরো বলেন, ‘সারা পৃথিবীর জনগণ ফিলিস্তিনিদের পুরোপুরি সমর্থন জানিয়ে পাশে দাঁড়ায়, সম্পৃক্ত থাকার চেষ্টা করে। কিন্তু জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী ফিলিস্তিনে এত বড় একটা গণহত্যায় কিছুই করতে পারছে না। বিভিন্ন দেশের জনগণ নিজেদের মতো করে এক ধরনের রেজিস্ট্যান্স (প্রতিরোধ) রাখছে, যেটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। যার অংশ হিসেবে এই ফ্লোটিলা হচ্ছে। এই যাত্রায় অনেক বিপদ থাকতে পারে। কোনো নিশ্চয়তা নেই। আমরা আদৌ পৌঁছাতে পারব কি না, জানি না। এসব মেনে নিয়েই সবাই অংশ নিচ্ছে।’
এদিকে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলাকে নিরাপত্তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় দেশ স্পেন ও ইতালি।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়