ঢাকা ০১:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
বর্তমান সময়ে সুষ্ঠ নির্বাচনের কথা কল্পনাও করা যায় না – জামায়াত আমির ৭ বছরে ও সুবর্ণা হত্যার বিচার হয়নি, হুমকির মুখে পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন অপচিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু; রংপুরে দুই ক্লিনিককে জরিমানা,ওটি সিলগালা পিআর পদ্ধতি দেশকে আরও বেশি স্বৈরতন্ত্রের দিকে ঠেলে দেবে – রিজভী তিন দফা দাবিতে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিল শেকৃবি শিক্ষার্থীরা কুবিতে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ অভিযুক্ত ব্যাচের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ; তদন্ত কমিটি গঠন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আকাশমনি ও ইউক্যালিপটাস গাছের চারা ধ্বংস নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আয়োজনে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ১-১১’র প্রেক্ষাপট তৈরি করে আ.লীগ কর্তৃত্বশীল শাসকরূপে চিহ্নিত হয় : মাওলানা আবদুল হালিম মাদক বিষাক্ত সাপের মতো ব্যক্তি ও সমাজকে নিঃশেষ করে দেয়

প্লাস্টিক দূষণ রোধে মানসিকতার পরিবর্তনের আহ্বান জানালেন পরিবেশ উপদেষ্টা

শরিফুল হক পাভেল
  • Update Time : ১১:৪৮:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৬১ Time View

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্লাস্টিক বর্জ্য কমাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় যখন প্লাস্টিকমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে, তখন অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও এই উদ্যোগ নিতে পারে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আরও দায়িত্বশীল হয়ে ওঠে।

আজ সোমবার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে “প্লাস্টিকমুক্ত জিরো-ওয়েস্ট ক্যাম্পাস: গ্রিন প্লেজ” শীর্ষক কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, প্লাস্টিক দূষণ এখন মানবদেহেও প্রবেশ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে, কিডনি, লিভার এমনকি মস্তিষ্কেও মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে। মস্তিষ্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক রক্ত প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করতে পারে, যা গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতিদিন দুই কোটি প্লাস্টিকের ব্যাগ উৎপাদিত হয়। নদীগুলোর তলদেশ প্লাস্টিক বর্জ্যে ঢাকা পড়ছে। বুড়িগঙ্গা নদীর তলদেশে পলিথিনের পুরু স্তর জমে গেছে, যা ড্রেজিংকেও ব্যয়বহুল করে তুলছে। প্লাস্টিক বর্জ্যের প্রভাব শুধু নদীতে নয়, কৃষিক্ষেত্রেও পড়ছে। জমি প্রস্তুতের সময় কৃষকরা মাটির নিচে প্লাস্টিকের ব্যাগ খুঁজে পাচ্ছেন, যা অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ফল।

তিনি নাগরিকদের প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর পরামর্শ দেন। “আমাদের পূর্বপুরুষরা প্লাস্টিক ব্যাগ ছাড়াই চলতে পারতেন, আমরা কেন পারব না? কেনাকাটায় নিজের ব্যাগ নিয়ে যান। বাজারে প্রচুর পাটের ব্যাগ পাওয়া যায়, এগুলোই ব্যবহার করুন,”—বলেন তিনি।

পুনর্ব্যবহারযোগ্যতার গুরুত্ব স্বীকার করে তিনি বলেন, “পুনর্ব্যবহারও চূড়ান্ত সমাধান নয়। উন্নত দেশগুলোর উন্নত রিসাইক্লিং ব্যবস্থা থাকলেও তারা বিকল্প ব্যবহারের ওপর জোর দিচ্ছে, কারণ রিসাইক্লিং জটিল এবং ব্যয়বহুল। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত নতুন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি বন্ধ করা।”

তিনি এক্সটেন্ডেড প্রডিউসার রেসপন্সিবিলিটি (EPR) বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন, যাতে উৎপাদকরা তাদের প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ ও পুনর্ব্যবহারের দায়িত্ব নেয়। “বাংলাদেশ শিগগিরই EPR নির্দেশিকা চূড়ান্ত করবে। বড় কোম্পানিগুলোকে তাদের পণ্যের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায় নিতে হবে,”।

বক্তব্যের শেষে তিনি বলেন, “অনেকে প্রশ্ন করেন, পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ হলেও তা বাজারে কেন? বরং নিজেদের প্রশ্ন করুন, আপনি কেন এখনো এটি ব্যবহার করছেন?”

অনুষ্ঠানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ-এর চেয়ারম্যান তামারা আবেদ, উপাচার্য ড. সৈয়দ ফারহাত আনোয়ারসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ব্র‍্যাক ও ব্র‍্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। পরে উপদেষ্টা প্লাস্টিকের বিকল্প উপকরণ প্রদর্শনীর স্টল পরিদর্শন করেন এবং বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

প্লাস্টিক দূষণ রোধে মানসিকতার পরিবর্তনের আহ্বান জানালেন পরিবেশ উপদেষ্টা

শরিফুল হক পাভেল
Update Time : ১১:৪৮:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্লাস্টিক বর্জ্য কমাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় যখন প্লাস্টিকমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে, তখন অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও এই উদ্যোগ নিতে পারে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আরও দায়িত্বশীল হয়ে ওঠে।

আজ সোমবার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে “প্লাস্টিকমুক্ত জিরো-ওয়েস্ট ক্যাম্পাস: গ্রিন প্লেজ” শীর্ষক কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, প্লাস্টিক দূষণ এখন মানবদেহেও প্রবেশ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে, কিডনি, লিভার এমনকি মস্তিষ্কেও মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে। মস্তিষ্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক রক্ত প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করতে পারে, যা গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতিদিন দুই কোটি প্লাস্টিকের ব্যাগ উৎপাদিত হয়। নদীগুলোর তলদেশ প্লাস্টিক বর্জ্যে ঢাকা পড়ছে। বুড়িগঙ্গা নদীর তলদেশে পলিথিনের পুরু স্তর জমে গেছে, যা ড্রেজিংকেও ব্যয়বহুল করে তুলছে। প্লাস্টিক বর্জ্যের প্রভাব শুধু নদীতে নয়, কৃষিক্ষেত্রেও পড়ছে। জমি প্রস্তুতের সময় কৃষকরা মাটির নিচে প্লাস্টিকের ব্যাগ খুঁজে পাচ্ছেন, যা অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ফল।

তিনি নাগরিকদের প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর পরামর্শ দেন। “আমাদের পূর্বপুরুষরা প্লাস্টিক ব্যাগ ছাড়াই চলতে পারতেন, আমরা কেন পারব না? কেনাকাটায় নিজের ব্যাগ নিয়ে যান। বাজারে প্রচুর পাটের ব্যাগ পাওয়া যায়, এগুলোই ব্যবহার করুন,”—বলেন তিনি।

পুনর্ব্যবহারযোগ্যতার গুরুত্ব স্বীকার করে তিনি বলেন, “পুনর্ব্যবহারও চূড়ান্ত সমাধান নয়। উন্নত দেশগুলোর উন্নত রিসাইক্লিং ব্যবস্থা থাকলেও তারা বিকল্প ব্যবহারের ওপর জোর দিচ্ছে, কারণ রিসাইক্লিং জটিল এবং ব্যয়বহুল। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত নতুন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি বন্ধ করা।”

তিনি এক্সটেন্ডেড প্রডিউসার রেসপন্সিবিলিটি (EPR) বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন, যাতে উৎপাদকরা তাদের প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ ও পুনর্ব্যবহারের দায়িত্ব নেয়। “বাংলাদেশ শিগগিরই EPR নির্দেশিকা চূড়ান্ত করবে। বড় কোম্পানিগুলোকে তাদের পণ্যের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায় নিতে হবে,”।

বক্তব্যের শেষে তিনি বলেন, “অনেকে প্রশ্ন করেন, পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ হলেও তা বাজারে কেন? বরং নিজেদের প্রশ্ন করুন, আপনি কেন এখনো এটি ব্যবহার করছেন?”

অনুষ্ঠানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ-এর চেয়ারম্যান তামারা আবেদ, উপাচার্য ড. সৈয়দ ফারহাত আনোয়ারসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ব্র‍্যাক ও ব্র‍্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। পরে উপদেষ্টা প্লাস্টিকের বিকল্প উপকরণ প্রদর্শনীর স্টল পরিদর্শন করেন এবং বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করেন।